অশ্লীল ছবি ধারণ করে গৃহবধূকে দৈহিক সম্পর্কে বাধ্য করায় রাজু আহম্মেদ (৩৫) নামের এক গ্রামীণ ব্যাংক কর্মকর্তার কারাদণ্ড হয়েছে। একই সাথে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরের দিকে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুটি ধারায় তার এক বছরের করে কারাদণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডিত রাজু আহম্মেদ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শিবজাইট এলাকার সনজেব আলী প্রামাণিকের ছেলে। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখায় কর্মরত ছিলেন। রায় ঘোষণাকালে আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন রাজু আহম্মেদ। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। অপরদিকে, ভুক্তভোগী গৃহবধূর (২১) বাবার বাড়ি বাগমারা উপজেলার শিবজাইট এলাকায়। তার স্বামীর বাড়িতেই জেলার পুঠিয়া উপজেলার রঘুরামপুরে।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫(২) ও ২৯ (১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আসামি রাজু আহম্মেদ। তাকে দুটি ধারায় এক বছরের করে কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। একই সাথে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। একটি সাদা কার্যকর হওয়ার পর আরেকটি সাজা কার্যকর হবে। আর মামলার হাজতবাস মূল কারাদণ্ড থেকে বাদ যাবে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর বাবা দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসার জন্য ভারতে থাকায় ছোট ভাই ও বোনের দেখাশোনার দায়িত্বে বাবার বাড়িতে ছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে ওই সময় মিথ্যা মামলায় তার স্বামী জেলহাজতে যান।
অন্যদিকে ছুটির দিনগুলোতে গ্রামের বাড়িতে আসতেন অভিযুক্ত রাজু আহম্মেদ। একদিন গ্রামের দোকানে তার সাথে গৃহবধূর দেখা হয়। আলাপের এক পর্যায়ে রাজুকে নিজের দূরবস্থার কথা জানান ওই গৃহবধূ। তার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনার আশ্বাস দিয়ে মোবাইল নম্বর নেন। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় ফোন করে অনৈতিক প্রস্তাব দিচ্ছিলেন রাজু।
এক পর্যায়ে তার বাবার বাড়িতে অসতর্ক মুহূর্তের কিছু ছবি নগ্ন ও অশ্লীল ছবি ধারণ করেন। সেগুলোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে দৈহিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করেন। ২০২১ সালের ১৩ মার্চ তার স্বামী জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপরও ওই নারীকে দৈহিক সম্পর্কে জড়াতে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিলেন রাজু। কিন্তু তাতে রাজি হননি গৃহবধূ।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গৃহবধূর স্বামীর মোবাইল ফোনে অশ্লীল ছবি ও এসএমএস পাঠান। এসব নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ৭ জুলাই রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মামলা নম্বর ৬। তদন্ত শেষে আসামি রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এ জাতীয় আরো খবর..