জঙ্গীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট তথা আইএস এ যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারবেন না। তার নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য আইনি লড়াইও লড়তে পারবেন না। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়েছেন।
শামীমা ২০১৫ সালে তার স্কুলের দুই বান্ধবীর সঙ্গে পালিয়ে সিরিয়া গিয়ে আইএসএ যোগ দেন। তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর।
সিরিয়ায় আইএস এর পতনের পর শামীম সেখানকার একটি উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তিনি আটক হন। বর্তমানে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় ডেমোক্রেটিক ফোর্সের কাছে বন্দি অবস্থায় আছেন।
সেখান থেকেই তিনি যুক্তরাজ্যে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং তার নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য আইনি লড়াই করছেন। আইএস এ যোগ দেওয়ার অপরাধে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে যুক্তরাজ্য। সেটার বিরুদ্ধেই লড়ছেন তিনি।
যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, শামীমার দেশে ফেরাটা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। সে কারণে আইনের মাধ্যমে তার যুক্তরাজ্যে ফেরাটা বন্ধ করে দিচ্ছে দেশটি।
অবশ্য যুক্তরাজ্যের সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাজিদ জাভিদ দাবি করেছিলেন যে শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক এবং তাকে বাংলাদেশে পাঠানো উচিত। সে সময় শামীমা তার মায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আবেদনও করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নন এবং তাকে ‘কোনোভাবেই’ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
এরপর শামীমা যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করে জানিয়েছিলেন তিনি যুক্তরাজ্যে নাগরিক, ফিরলে তিনি যুক্তরাজ্যেই ফিরবেন, অন্য দেশে যাবেন না। তিনি তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন।
২০২০ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যে একটি শ্রেণি শামীমাকে দেশে ফিরে তার আত্মপক্ষ সমর্থন করা ও নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করার সুযোগ দেওয়ার পক্ষ নিয়েছিল। কিন্তু গেল বছরের নভেম্বরে শামীমার নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের মতে, শামীমার যুক্তরাজ্যে ফেরাটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি। তাই তাকে দেশে ফেরানো উচিত হবে না।
সবকিছু বিবেচনা করে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট শামীমার নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার আবেদন বাতিল করে যুক্তরাজ্যে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রায় দেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সাজিদ জাভিদ।