কোর্ট রিপোর্টার: রাজধানীর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি)সহ ৫ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন এক ব্যবসায়ী। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে মামলাটি করেন মো. রহিম নামে ওই ব্যবসায়ী। বাদীর জবানবন্দী গ্রহণের পর এ বিষয়ে পরে আদেশ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আদালত। মামলার অন্য আসামীরা হলেন- কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খায়রুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম এবং পুলিশের সোর্স দেলোয়ার হোসেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় চরকালিগঞ্জ জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। পথিমধ্যে রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া ব্রিজের ওপর অজ্ঞাতনামা ৩ ব্যক্তি তার গতিরোধ করেন। ওই ৩ জন নিজেদেরকে ঢাকা জেলার ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। রহিমের নামে ডিবিতে মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে জানান তারা। পরে তারা রহিমকে একটি দোকানে নিয়ে তল্লাশি করে। তবে তার কাছ থেকে বে-আইনি কিছু উদ্ধার করতে পারেনি তারা। তখন দোকানে উপস্থিত লোকজন রহিমকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করে। অনুরোধের পরও তারা তাকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে যান।
ওই ৩ ব্যক্তি রহিমকে সিএনজি করে বাবু বাজার ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম ও সোর্স দেলোয়ার উপস্থিত ছিলেন এই ৩ জন নিজেদের কাছ থেকে ৬৫০টি ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে বলেন এগুলো রহিমের কাছ থেকে পাওয়া গেছে। তখন এসআই আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘যদি ফাঁসতে না চাস তাহলে দুই লাখ টাকা জোগাড় কর। না হলে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেব।’ বাঁচার জন্য রহিম তার কাছে থাকা এক ভরি স্বর্ণের চেইন, নগদ ১৩ হাজার টাকা তাদের কাছে দেন। দাবিকৃত দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় তারা রহিমকে রাত সোয়া ৯টার দিকে থানায় নিয়ে যায়।
পরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহিম তাদের ৫০ হাজার টাকা দেন। রাত ১১ টা ৪০ মিনিটের দিকে ওসি মিজানুর রহমান তাকে ডেকে বলেন, ‘তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। ছোট মামলা দিলাম, দুই একদিনের মধ্যে বের হয়ে আসতে পারবি।’ এরপর রহিমকে ১০টি ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ১৭ দিন কারাবাসের পর ৩০ অক্টোবর মুক্তি পান মো. রহিম।