বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গাইবান্ধার পলাশবা‌ড়ি‌তে মিথ্যা অপপ্রচা‌রের প্রতিবা‌দে এক সংবাদ স‌ম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে মধুপুর উপজেলা ইয়াকুব আলী নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত ৪৮ নওগাঁ ৩ আসনের এমপির মা,সবিতা চক্রবর্তীর দশম প্রণয় দিবস পালিত কালাইয়ে তীব্র তাপদাহ ও অনা বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য সালাতুল ইস্তিসকার অনুষ্ঠিত নওগাঁ যৌতুকের টাকা না পেয়ে কিশোরী ঐশীর হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার নওগাঁর রাণীনগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা নওগাঁর মান্দায় তিন দিন পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ শতাব্দী আক্তার গাইবান্ধার পলাশবা‌ড়ি‌তে মিথ্যা অপপ্রচা‌রের প্রতিবা‌দে এক সংবাদ স‌ম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে নওগাঁর রাণীনগরে তীব্র গরমে এমপি সুমনের নির্দেশে বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন বিতরণ করা হয় নওগাঁয় একুশে পরিষদের উদ্যোগে ১৯৭১ সালে অসহায় শরণার্থীদের দুর্ভোগ রোট টু বালুঘাট কালাই উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত কিংবদন্তি বাঙালি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস “””””””রসায়নবিদ জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন আজ স্বনামধন্যা সুরসম্রাজ্ঞী অন্নপূর্ণা দেবীর জন্মদিন আজ মধুপুরে তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট স্থগিত ঘোষণা নওগাঁর মহাদেবপুরে পূর্বের শত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশীর হামলায় স্বামী ও স্ত্রীসহ ৪ জন আহত নওগাঁয় স্ত্রীহত্যার মামলায় স্বামী সালাউদ্দিনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত নওগাঁ আসিফ মেহেনাজ নামে এক কলেজ ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা তীব্র দাবদাহে সারাদেশের মতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নওগাঁর জনজীবন। হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর ও সর্দিজনিত রোগী। আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ

কারাবন্দী লেখক মুশতাকের মৃত্যু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে শাহবাগ উত্তাল

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ১৬৬ বার পঠিত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগে মশাল মিছিল করে তারা। আর আগামী সোমবার করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও। আন্দোলনে নেতাকর্মীরা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে শাহবাগ অবরোধ সমাবেশে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা, সাংবাদিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটা গোষ্ঠীর হাতিয়ার হয়ে উঠেছে, যারা গণমাধ্যমবিরোধী ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী তারা এই আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার করছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো সাংবাদিকদের হয়রানি করা ও ভয়ভীতি দেখানো। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের গ্রেফতার ও লেখক মুশতাক হত্যার নিন্দা জানিয়ে তারা আরও বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করায় সম্পাদকসহ সাংবাদিক, লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা অবাধ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ বিনষ্ট হবে ও গণমাধ্যমের কর্মীদের ওপর পুলিশের ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপে উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছবে। বিগত কয়েক মাসে প্রায় ৪০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব গ্রেফতার ও কারাগারে বন্দী অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনা এমন এক ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে, যেখানে স্বাভাবিক সাংবাদিকতার কাজও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। অবরোধের ফলে শাহবাগের মূল সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করা হয়। সেখান থেকে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন তারা। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, তানজিম উদ্দিন খান, রুশাদ ফরিদী, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারাসহ সাধারণ নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদ গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুশতাক আহমেদ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।
গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত: লেখক মুশতাক আহমেদের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ছাত্র অধিকার পরিষদ এ গায়েবানা জানাযার আয়োজন করে। জানাযায় ইমামতি করেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। জানাযার আগে কর্মসূচি ঘোষণা করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। আগামী ৩রা মার্চ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি। এসময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
জানাযাপূর্ব সমাবেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মন্তব্য করে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কবরে পাঠানোর এখনই সময় এসেছে। তিনি বলেন, লেখক মুশতাককে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীদের খোঁজ কি পাওয়া যায়নি? পাওয়া গেছে। তার হত্যাকারী হলো সরকার ও তার আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হইলো সরকারি বাহিনীর একটি অধ্যাদেশ। এই সিকিউরিটি আইনের সাথে যারা জড়িত তারা প্রত্যেকে এই হত্যার সাথে জড়িত।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যা যেমন মর্মান্তিক, আমি মনে করি মুশতাকের হত্যাও তেমনি একই ধরনের মর্মান্তিক। শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করলেই হবে না, এই হত্যার জন্য যারা দায়ী এমনকি যদি আপনারও দায় থাকে, তাহলে আপনাকেও দায় নিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে জনগণের কাছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ বলেন, আজকে বিচারপতিদের দায়িত্ব পরিষ্কারভাবে বলা যে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নাগরিকের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি বেঁচে থাকতে চান, তাহলে এই আইনকে কবর দিয়ে দেন। আমি যদি আপনার বিরুদ্ধে মানহানিকর কিছু বলি তাহলে আপনাকেই মানহানির মামলা করতে হবে, কোনো পুলিশ কনস্টেবলকে দিয়ে নয়। ডিজিটাল অ্যাক্ট দিয়ে কোনো সরকার টিকে থাকতে পারে না। বিচারপতিদের উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই ট্রাস্টি আরও বলেন, আপনাদেরও দায়িত্ব আছে, আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে আপনারা উন্মোচন করবেন, মুশতাক হত্যার জন্য দায়ী কারা।
জানাযাপূর্ব সমাবেশে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিতর্কিত আইনে লেখক মুশতাক আহমেদকে কারাগারে রাখা হয়। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় তার স্ত্রী মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। আমি ছাত্রবন্ধুদের পোস্টার দেখলাম মুশতাকের খুনি রাষ্ট্র। আমি বলি রাষ্ট্র নয়, কারণ রাষ্ট্র আমাদের সবার। মুশতাকের খুনি বিনা ভোটের সরকার, অবৈধ সরকার। ছয়বার মুশতাক আহমেদের জামিন নাকচ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, আজকে যে আইনে কিশোর, মুশতাক গ্রেফতার হয়েছেন, সেই আইন দায়ী নাকি আইনটি যারা তৈরি করেছে তারা দায়ী, যারা প্রয়োগ করেছে তারা দায়ী? এই আইন যে সরকার করেছে তারাই দায়ী। এই আইনে মুশতাকের মতো মানুষকে ছয়বার জামিন দেয়নি। এটা কেমন রাষ্ট্র যেখানে প্রখ্যাত খুনিকে ক্ষমা দেয়া হয়, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা দেয়া হয়। অন্যদিকে মুশতাকের মতো সাধারণ প্রতিবাদী কণ্ঠকে কারাগারে থাকতে হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির বিভাগের অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী বলেন, দম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি আমাদের ভাঙতে হবে। এটা আর কেউ এসে ভেঙে দেবে না।
সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, নোয়াখালীতে সাংবাদিক মুজাক্কিরকে তিন পক্ষ মিলে গুলি করে হত্যা করেছে। আগে এক সময় স্বাভাবিক মৃত্যুর দাবি উঠতো। কিন্তু এখন জীবনের অধিকার, স্বাভাবিক মৃত্যুর নিরাপত্তা চাইতে চাইতেই আমাদের জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার কথা বলে এদেশের পতাকায় আর কত মানুষের লাশ ঢেকে রাখবেন?
তানজিম উদ্দিন খান বলেন, আজকে কথা বলা খুব সহজ নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে আজ শুধু মুখের ভাষা কেড়ে নেয়া হয়নি, প্রাণ পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে। এর আগে অনেক গুম, খুন হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম তারা সবাই বিএনপি-জামায়াতের কর্মী। কিন্তু আজ তা মুশতাক ভাই পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে। সবার আওয়াজ তুলতে হবে। উন্নয়নের কথা বলে তারা আমাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আজকে যারা উন্নয়নের বিষ্ঠা খাচ্ছে, তারা সবাই প্রবৃদ্ধি প্রবৃদ্ধি করছে। এদিকে আমাদের প্রাণ হুমকির মুখে পড়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150