শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দৈনিক ক্রাইম তালাশ প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটি হলে আজ সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তান জহির মিয়ার শুভ জন্মদিন ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে ৫০(পঞ্চাশ) লিটার দেশীয় তৈরী চোলাই মদ সহ ০১(এক) মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নওগাঁর বদলগাছী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠান নওগাঁয় পূর্ব শত্রুতার জেরে রাতের আঁধারে বাগানের গাছ কাটা বাদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে(পাঁচশত) গ্রাম গাঁজাসহ একজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার বগুড়ার গাবতলীতে স্বামীকে আটক রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ ৫ ধর্ষক গ্রেফতার সরিষাবাড়ীতে উজ্জল হত্যা মামলার আসামিদের  ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন মধুপুরে অবৈধভাবে মাটিকাটার অপরাধে ১লক্ষ টাকা জরিমানা গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে নতুন আঙ্গিকে থিয়েটার সিজারিয়ান অপারেশন মধুপুরে চালু হয়েছে নারী উদ্যোগত্বা পারুলের ঢাকা রেস্টুরেন্ট দুপচাঁচিয়ায় শ্রী শ্রী বাসন্তী পূজা অনুষ্ঠিত বাংলার জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ন দাস আর নেই : নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত নওগাঁ ভুয়া সিআইডি পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার দুপচাঁচিয়ায় প্রাণিসম্পদ সেবা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত মধুপুর সহকারী পুলিশ সুপারের আবারও বিশাল অর্জন সরিষাবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে নওগাঁর সাপাহারে আদিবাসী মঙ্গল টুডু নামে এক কৃষকের আম বাগানের গাছ কর্তনের অভিযোগ দুপচাঁচিয়ায় থানা পুলিশের অভিযানে ১০ জন গ্রেপ্তার

ক্যামব্রিজে যাওয়া প্রথম বাংলাদেশী নারী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ১৯৮ বার পঠিত

 

সম্প্রতি ক্যামব্রিজ ইন্ডিপেন্ডেন্টে বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত বৃটিশ লেখিকা শাহিদা রহমানের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন আড্রিয়ান পিল। মানবজমিনের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটির পরিমার্জিত ভাবানুবাদ তুলে ধরা হলো:

১৯৫৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) থেকে আরো উন্নত জীবনের খোঁজে ক্যামব্রিজে বসতি গড়তে যাওয়া প্রথম ব্যক্তিদের একজন ছিলেন আব্দুল করিম। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। করিমের মেয়ে ও লেখিকা শাহিদা রহমানের জন্ম হয়েছিল ঠিক এর দুই দিন আগে, ১৪ই ডিসেম্বর, ক্যামব্রিজের মিল রোড ম্যাটার্নিটি হসপিটালে। তার একজন যমজ বোন আছে।
বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় পারদর্শী শাহিদা স্মৃতিচারণ করে জানান, শহরটিতে পৌঁছানোর পর ১৯৬০ ও ‘৭০ এর দশকে সেখানে দুটি রেস্তোরাঁ খোলেন তার বাবা। ক্যামব্রিজে আব্দুলের প্রথম বাড়ি ছিল উয়িলিস রোডে। সেখানে অবস্থানকালেই তার স্ত্রী ফুলতারা বানু করিম শাহিদার তিন বড় ভাইয়ের জন্ম দেন।

পরবর্তীতে সেখান থেকে সরে ডেভনশায়ার রোডে যান। সর্বশেষ, সেখান থেকে সরে ১৯৭৬ সালে চেস্টারটনে বসবাস শুরু করেন। শাহিদা জানান, তার বাবা পূর্ব পাকিস্তান থেকে এ শহরে বসতি গড়া প্রথম কয়েকজন মধ্যে একজন ছিলেন।

বলেন, কিন্তু আমার মনে হয়, তার আগে আরো তিন চার জন এসেছিলেন। এর মধ্যে একজন ব্যক্তি এসেছিলেন ১৯৪৯ সালে। তার নাতী-নাতনীরা সম্ভবত এখনো ক্যামব্রিজেই বাস করে। অবশ্যই, তখন পুরুষরা আগে নিজে শহরটিতে আসতো ও পরে তার স্ত্রীদের নিয়ে যেতো। আবার কেউ কেউ ইংলিশ নারীদের বিয়ে করে এখানে স্থায়ী হয়ে যেত।

শাহিদার বাবা বসবাসের জন্য কেন ক্যামব্রিজ বেছে নিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে শাহিদা বলেন, আমাদের বয়স কম থাকাকালেই বাবা মারা যান।

“কিন্তু আমরা যতদূর জানি, তিনি আগে লন্ডনে যান ও সেখান থেকে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেন যিনি তাকে বলেছিল যে, ক্যামব্রিজে কাজের সুযোগ আছে। এরপর তিনই এখানে আসেন। মিল রোডে থাকা শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে আমার মা এখানে আসেন। আমাদের ধারণা, মা হয়তো ক্যামব্রিজে আসা প্রথম বাঙালি নারী ছিল। তিনি এখনো বেঁচে আছেন। তার বয়স ৮২ বছর।”

শাহিদা বলেন, তিনি আমাদের অনেক গল্প বলেন। বিশেষ করে, স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়গুলো নিয়ে। তখন বেশ উৎকণ্ঠাপূর্ণ অবস্থা ছিল। আমি আমার সারাজীবন ক্যামব্রিজেই কাটিয়েছি। এমন জায়গায় সেসব গল্প মাঝে মাঝে হারিয়ে যেতে পারে। এখানে সেগুলো বলতে ভালোই লাগে।

শাহিদা জানান, ১৯৭৩ সালের মধ্যেই দুটি রেস্তোরাঁ খুলে ফেলেন আব্দুল করিম। একটি বাড়িও কিনে ফেলেন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তোলেন।

বলেন, আমি মনে করি, তিনি ভাগ্যবানদের একজন ছিলেন। তাকে যুদ্ধ-পরবর্তী ইংল্যান্ডে আসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। আমার ধারণা, তারা হয়তো অর্থনীতি চাঙ্গা করে তোলার জন্য চাইছিল মানুষজন আসুক।

বর্তমানে শাহিদা চার সন্তানের জননী। একইসঙ্গে ক্যামব্রিজ কেন্দ্রীয় মসজিদের একজন তত্ত্বাবধায়কও। তিনি জানান, ক্যামব্রিজসহ বৃটেনে দক্ষিণ এশীয়দের বড় ঢল নামে ষাট ও সত্তুরের দশকে। কিন্তু তিনি এমন কয়েকজনকেও পেয়েছেন যারা বিংশ শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকেই সেখানে অভিবাসন করেন।

তিনি বলেন, আমরা ‘অল সৌলস লেন’র এসেনশন বুরিয়াল গ্রাউন্ডে পাঁচটি কবর পেয়েছি। এর মধ্যে দুটি কবরে লেখা মৃত ব্যক্তি পূর্ব পাকিস্তানের ছিলেন। এমন কবর খুবই বিরল। তারা ষাটের দশকে মারা যান। অবশ্য আমরা খুঁজে বের করতে পেরেছি, তাদের কী হয়েছিল।

শাহিদা বলেন, আমরা ফেসবুকে একটা ঘটনার কথা জানতে পারি যে, তাদের একজন আসলে ক্যামব্রিজের কেন্দ্রস্থলে বাসচাপায় মারা যান। এটা ছিল ১৯৬৪ সালের এপ্রিলের ঘটনা। আমার মা জানতেন যে, সে সময়ের আমাদের কমিউনিটির একজন বাসচাপায় পড়ে মারা গেছেন। আর তখন আমাদের কমিউনিটির অনেক ছোট ছিল। এটা খুবই বেদনাদায়ক একটা ঘটনা, কারণ, ক্যামব্রিজে তার কোনো পরিবার ছিল না। তাই তাকে এখানেই কবর দেওয়া হয়।
“এরপর ১৯৬৬ সালে আরেকজন অসুস্থতায় মারা যান। তাকেও একই জায়গায় কবর দেওয়া হয়।”

শাহিদা ক্যামব্রিজের পূর্ব পাকিস্তানিদের নিয়ে গবেষণা করছেন। হারিয়ে যাওয়া কমিউনিটিগুলোকে খুঁজে বের করতে, যেসব মানুষদের কথা হারিয়ে গেছে, যারা এখনো শহরটিতে বাস করেন, তাদের নিয়ে কাজ করতে একটি ওয়েবসাইটও খুলেছেন—ক্যামব্রিজমুসলিমহেরিটেজডটকোডটইউকে।

শাহিদা বলেন, কিন্তু কেন ক্যামব্রিজ? আমি সেই গল্প খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি: কী কারণে তারা এখানে এসেছিল, কী তাদের টেনে এনেছিল?

শাহিদার ধারণা, ক্যামব্রিজের প্রথম ভারতীয় রেস্তোরাঁ ছিল মিল রোডে। নাম ছিল ‘কোহিনূর’। জানান, তার ধারণা সেটি খুলেছিল ১৯৪৩ সালে।

তিনি বলেন, এরপর আমার বাবা রেজেন্ট স্ট্রিটে পিজ্জা হাটের কাছাকাছি ‘দ্য নিউজ বেঙ্গল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ খোলেন। শাহিদা জানান, ১৯৭৫ সালে রেস্তোরাঁর জায়গাটি কিনতে চায় ওয়াটসন অ্যান্ড সনস নামের একটি এস্টেট এজেন্ট। একটি সরকারি তদন্তের পর রেস্তোরাঁটি হাতছাড়া হয়ে যায় আব্দুল করিমের।

শাহিদা বলেন, কিন্তু ততদিনে ফিটজরি স্ট্রিটে আরেকটি রেস্তোরাঁ ছিল বাবার। বর্তমানে ওই জায়গার বিপরীতে ইডেন চ্যাপেল অবস্থিত।

আব্দুল করিম ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে মারা যান। শাহিদা জানান, এরপর থেকে ক্যামব্রিজে বাঙালি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য অনেকে সেখানে গিয়ে বসতি গড়েছেন। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, ক্যামব্রিজে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় কমিউনিটি সম্ভবত বাংলাদেশিদের। আমার ধারণা, শহরটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.৩ শতাংশ হচ্ছে দক্ষিণ এশীয়রা। সে হিসেবে এ কমিউনিটি খুবই ছোট।

শাহিদা জানান, এ বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতালাভের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করবে ক্যামব্রিজের বাংলাদেশিরা। তিনি বলেন, এটাকে উদযাপন বলতে পারেন, তবে আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, এর জন্য অনেকে প্রাণও হারিয়েছেন—নয় মাসব্যাপি যুদ্ধ চলেছিল আর সেসময় অনেককিছু ঘটেছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150