মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে অস্বাস্থ্যকর অনুমোদনহীন বেকারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক নির্বাচনে জাল ভোট ও অনিয়মের অভিযোগ জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিযোজন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত আদিতমারী থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১৯২ বোতল ফেন্সিডিল ও ৪৮ বোতল স্কাফ সহ ০১ জন গ্রেফতার। নওগাঁর সাপাহারে মোকলেসুর রহমানের ২২ টি আম গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ বকশীগঞ্জে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত দুপচাঁচিয়ায় শাহাদত কোল্ড স্টোরেজে এমোনিয়া গ্যাস পাইপ লিকেজের ঘটনা ঘটেছে নওগাঁ সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক মাসেই ৮০টি নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন করা হয়েছে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় নলকুপের মিটার চুরির ঘটনায় আরো দুইজন গ্রেফতার মধুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত১ বকশীগঞ্জে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ১৮২৯ সালে ৪ ঠা ডিসেম্বর সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত দিবস কালাইয়ে ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বর উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা বগুড়ার – ৩ আসনের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই বাদ পড়লেন সাতজন প্রার্থী দুপচাঁচিয়ায় মাদক বিক্রেতাসহ গ্রেফতার চার দুপচাঁচিয়ায় একটি খড় বোঝাই ট্রাকে আগুন ভাস্কর নিতুন কুন্ডুর জন্মদিন পালিত পিকআপ ভ্যান উল্টে নিহত১গরু চোর ১২ নং তিতপল্লা ইউনিয়নের পঙ্গুদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরন ঝিনাইগাতীতে প্রতিবন্ধী হাবিবুল্লাহ বাহার হাসুর মানবেতর জীবনযাপন

ক্ষেতলালে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে চা বিক্রি করেই সংসার চালাচ্ছেন ধলু

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৫২ বার পঠিত

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: মোঃ সামিউল হক সায়িম

প্রায় ত্রিশ বছর পূর্বে ১৯৯২ সালে ক্ষেতলাল সরকারি ছাঈদ আলতাফুন্নেছা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ছোট্টো একটি ক্যান্টিন গড়ে তোলেন বিভাষ চন্দ্র দেবনাথ (ধলু)। সেই থেকে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সততার সহিত ক্যান্টিনটি ধরে রেখেছেন তিনি। শত অভাব অনটনের মাঝেই সংসার চলে চা বিক্রি করে।

ধলু জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল পৌর এলাকার ফকিরপাড়া মহল্লার মৃত সুধির চন্দ্র দেবনাথ এর ছেলে। জীবিকার তাগিদে কলেজ গেইট এর সামনে ছোট্ট পরিসরে গড়ে তোলেন ক্যান্টিনটি। কলেজটি সরকারিকরণের পূর্বে এস.এ.কলেজ নামে পরিচিত ছিলো। সেই থেকেই ত্রিশ বছরের পুরনো এ ক্যান্টিনে পর্যায়ক্রমে বছর-বছর যেসকল শিক্ষার্থী বসে চা, নাস্তা করেছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই আজ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে করেন চাকরী। সকলের ভাগ্য পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন ঘটেনি ধলুর ক্যান্টিনটির।

কলেজের পাশেই কয়েক বছর পূর্বে অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে ক্ষেতলাল পৌরসভা কার্যালয় এবং রয়েছে জীর্ণশীর্ণ ডাকবাংলো। ডাকবাংলোই নতুন আগন্তুক, কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী এবং পৌসভার স্টাফদের বরাবর চলাচল ঐতিহ্যবাহী এই ধলুর ক্যান্টিনে।

কলেজ-পৌরসভা সন্নিকটে রাস্তার পাশে মাটির তৈরি দেওয়াল, তার উপরে টিনের চালা দেওয়া ছোট্ট এ ক্যান্টিনে রয়েছে রকমারি সব খাবার দাবার। চা-বিস্কুট, পান-সিগারেট, মুড়ি, বুট, কলা ইত্যাদি। এছাড়াও ধলুর ক্যান্টিনের ঐতিহ্যবাহী দুটি খাবার রয়েছে একটি সন্দেশ; আরেকটি পেঁয়াজু। এই দুটি অবশ্য তিনি নিজের হাতেই তৈরি করেন। আরো রয়েছে মাটির কলসের ঠান্ডা সুমিষ্ট পানি।

ছোট্ট এই ক্যান্টিন থেকে যে আয় আসে তা দিয়েই চলে ধলুর অভাবের সংসার। একজনের উপার্জিত অর্থেই চলে সেই সংসার। পরিবারে রয়েছেন স্ত্রীসহ দুই সন্তান।

ক্যান্টিন মালিক ধলু জানান, আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর পূর্বে এই ক্যান্টিন গড়ে তুলেছি। তখন আমি বিয়ে করিনি। এমনও দিন গেছে সারাদিনে মাত্র এক’শো টাকা বিক্রি করেছি। তারপরেও আমি এখন পর্যন্ত ক্যান্টিনটি ধরে রেখেছি। আগে লাল চা ছিলো দুই টাকা, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের কাছথেকে নিতাম এক টাকা। এভাবেই চালিয়ে গেছি শখের এ ক্যান্টিন। এখন সময়ের বিবর্তনে চা পাঁচ টাকা দামে বিক্রি হয়। আমার ক্যান্টিনে বসে সময় কাটানো, চা-নাস্তা করা অনেক ছাত্র-ছাত্রী এখন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে চাকুরী করছে। ধাপে ধাপে যত শিক্ষার্থী কলেজে পড়েছে, তারা এখনও এক নামে আমার এ ক্যান্টিনকে চিনে। সংসারের অভাব-অনটনের কারণে উন্নতভাবে গড়ে তুলতে পারিনি আমার এ ক্যান্টিন। যে আয় হয় তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলে।

তিনি আরো বলেন, জাতীয় সংসদের হুইপ ও জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি’র প্রচেষ্টায় কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষকদের নিয়ে কলেজ মাঠে গত ৩-৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক ক্যাম্প-২০২৩। ওই ক্যাম্পে আসা অনেক শিক্ষক ছাত্রজীবনে তার ক্যান্টিনে সময় কাটিয়েছে। পোগ্রামের কারণে অনেক পুরাতন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তার দেখা ও কুশল বিনিময়ের সুযোগ হয়েছে।

কলেজে পড়া ১৯৯৮ ব্যাচ এর ছাত্র ও বর্তমান পৌর স্টাফ শামীম বলেন, আমাদের সময়ে আমরা ধলুর ক্যান্টিনে বসে অনেক সময় কাটিয়েছি। অবশ্যই আমাদের ব্যাচের পূর্বেও অসংখ্য ব্যাচ পার হয়ে গেছে যারা ধলুর ক্যান্টিনে বরাবরে মত সময় কাটিয়ে গেছেন।

এ দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলে, অনেকেরই অনেক রকম উন্নতি হয়েছে। একসময় ধলুর দোকানে যারা খাবার খেতে আসতো, তাদের মধ্যে অনেকেই বড় চাকরীজীবী , কেউবা ধন্যাঢ্য ব্যবসায়ী, কেউ উচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিবিদ, কেউ হয়েছেন ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার। এরপরেও ধলুর ভাগ্যের উন্নয়নের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি আগের মতোই একই স্থানে চা বিক্রি করতেছেন। এভাবেই তাঁর জীবন-জীবিকা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150