উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ থেকেঃ
নওগাঁর মহাদেবপুরে উপজেলা সদরের বৃহৎ হাটে আগের বছরের ইজারা ডাকের টাকার অংকের মাত্র এক তৃতীয়াংশ টাকা খাস কালেকশন হয়েছে। বাংলা ১৪২৭ সনে নানা কারণে হাটটি ইজারা না দিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় খাস কলেকশন করা হয়। তথ্য অধিকার আইনে করা তথ্য প্রাপ্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এ তথ্য জানানো হয়।
উপজেলা হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন এই প্রতিবেদকের ইমেইলে পাঠানো তথ্যে জানান, ১৪২৬ সনে এই হাট ইজারা দেয়া হয় ৭৮ লক্ষ ১০ হাজার টাকায়। আর ১৪২৭ সনে সরকারি খাস কালেকশনে আদায় হয় মাত্র ২৮ লক্ষ ৭৭ হাজার ৩১০ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় এক তৃতীয়াংশের কিছু বেশি।
কিন্তু এর পরের বছরই এই হাটের ইজারার ডাক লাফিয়ে বেড়ে যায় ৫ গুণ। ১৪২৮ সনে এই হাট ইজারা হয় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকায়।
তথ্য প্রাপ্তির পর তদানিন্তন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মন্ত্রণালয়ে ওএসডি হয়ে মহাদেবপুরের কর্মস্থল ত্যাগ করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে একজন কর্মকর্তা মন্তব্য করেন করোনাভাইরাসের কারণে কম আদায় হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু অন্যরা জানান, তার আগের বছর আরো বেশি করোনা ছিল।
তথ্য অধিকার আইনে দেয়া তথ্যে জানানো হয়, ‘সরকারি হাট-বাজার সমূহের ব্যবস্থাপনা, ইজারা পদ্ধতি এবং উহা হইতে প্রাপ্ত আয় বন্টন সম্পর্কিত নীতিমালা, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ এর ৪.১ ধারা মতে খাস আদায় কমিটি গঠন পূর্বক কমিটির মাধ্যমে খাস আদায় করা হয়।’ সংশ্লিষ্টরা জানান, সেসময় সরকারি খাস কালেকশনে অন্যান্য বছরের মতই মোটা অংকের টাকা খাজনা আদায় হয়। কিন্তু আদায়কারিরা বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে সে টাকার সিংহভাগ লুটপাট করে বলেই মাত্র এক তৃতীয়াংশ টাকা আদায় দেখানো হয়।
সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতাদের অভিযোগ সরকারিভাবে খাজনা আদায় করা হলেও প্রতিবছরের মত সেবারও সরকার নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি খাজনা আদায় করা হয়। এনিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে আদায়কারিদের প্রায়ই বিরোধ বাধতো। সেসময়ও পশুহাটে খাজনা আদায়ের রেট টাঙ্গানো হয়নি। অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার দায়ে এসময়ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে আদায়কারিদের জরিমানাও করা হয়।
স্থানীয়রা হাট নিয়ে এই তেলেসমাতিতে য্ক্তুদের চিহ্নিত করে সরকারি অর্থ তছরুপকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।