(।।সম্মিলিত উদ্যোগে কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য তৈরী করা রাস্তায় চলাচলে বাধা দেয়ার প্রতিবাদ করায় সাবেক সেনাসদস্য সহ ৯টি পরিবারকে নানাভাবে হয়রানী ,মিথ্যে মামলায় ও হত্যার হুমকী অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ায় ৯টি পরিবার।
এলাকার মৃত. মনছুর আলীর ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ দুলাল হোসেন বলেন, আমার আপন ভাই সহ আরও প্রায় ৯টি পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় অত্যন্ত কষ্ট করছেন ।এমনকি নামাজের জন্য মসজিদে এবং মৃত্যুর পর শেষ ঠিকানা কবরস্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তারা ভোগান্তির সম্মুখিন।এমতাবস্থায় গত ২০২০ সালে সকলেই উদ্যোগী হয়ে সকলের সম্মতিতে একটি রাস্তা তৈরীর চেষ্টা করি। সে অনুযায়ী স্থানীয় পরিবারগুলো, ওয়ার্ড মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে একটা সমাধানে আসি। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ পর পর ৩ দিন সকলে বসে রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় ৭ ফুট চওড়া ও ১৮১ ফুট লম্বা জায়গা ছাড়ার ক্ষেত্রে সম্মত হই।
এর প্রেক্ষিতে রাস্তার জায়গার পরিবর্তে অন্যত্র বদলি জমি প্রদানের মাধ্যমে সমাধানের লক্ষ্যে লিখিত চুক্তিনামা করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী রাস্তার জায়গা ছেড়ে দেয় প্রত্যেকেই। কিন্তু প্রতিবেশী মৃত. বদিউজ্জামান বজু’র ছেলে মোঃ সাখাওয়াত হোসেন তার অংশে কিছু জায়গা ছাড়লেও পূর্বের একটি ঘরের বর্ধিত অংশ সরিয়ে না নেয়ায় রাস্তাটি নির্মাণ হলেও চলাচলে আগের মতই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একারণে ওই ঘরটির চালা এবং নিচে পানি নিষ্কাশনের পাইপ সরানোর জন্য বার বার বলা সত্বেও তিনি বা তার পরিবার এক্ষেত্রে কোন প্রকার কর্ণপাত করছেন না। বিগত ১ বছর যাবত তার এমন একগুয়েমীর কারণে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সকলকে। এমতাবস্থায় আমিসহ ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন সম্মিলিতভাবে তাদেরকে বিষয়টি জানালে তারা কোনভাবেই ওই ঘরের চালা এবং পাইপ সরাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয় এবং পূর্বের করা রাস্তা বাবদ জমি গ্রহণ বা প্রদান করা সংক্রান্ত চুক্তিনামা অস্বীকার করে।
এতে ওই পরিবারের সাথে স্থানীয় অন্যান্য পরিবারগুলোর বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি তার এক ভাইও এই ভোগান্তিতে পড়েছেন। এই নিয়ে প্রায়ই কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে সাখাওয়াতের পরিবার ৯৯৯ কল দিয়ে পুলিশ ডেকে অহেতুক হয়রানী করে চলেছেন। এমনকি নিজেরাই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে সেই অভিযোগে প্রতিপক্ষদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালায়। এনিয়ে একটি মিথ্যে মামলাও সহ পরবর্তীরও দুটি মিথ্যে মামলা করেছেন যা এখনও বিচারাধিন।
তিনি আরও বলেন, সাখাওয়াতের ছেলে মিজানুর রহমান ও মিনহাজুল ইসলাম চিহ্নিত থাই জুয়ারী। একারনে অবৈধ টাকার দাপটে এবং পুলিশের সাথে সখ্যতার সুযোগে তারা এমন বেআইনী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ বার পুলিশ ডেকে এনে আমাদেরকে মামলায় ফাঁসিয়ে আর্থিক ও সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। প্রতিবারই পুলিশ এসে অজ্ঞাত কারণে শুধু তাদের পক্ষ নিয়ে আমাদেরকেই ভয়ভীতি দেখিয়েছে। আমাদের কথা শোনার চেষ্টাও করেনি।
অভিযুক্ত সাখাওয়াতের ভাই ইয়াকুব আলী বলেন, একটি পরিবারের জন্য আজ এলাকার ৯টি পরিবারের প্রায় অর্ধশত মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অথচ অযৌক্তিকভাবে তারা স্থানীয় শালিস মিমাংসাকে অগ্রাহ্য এবং নিজেদের স্বাক্ষরকৃত চুক্তিপত্রকে অস্বীকার করে গায়ের জোরে বিবাদ জিইয়ে রেখে প্রতিনিয়ত অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ রেখে চরম অনৈতিক কাজ করছেন। তাদের এই খুটির জোর কোথায় তা আমাদের জানা নেই।
উপস্থিত ৯ টি পরিবারের প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। আমাদের কোন দোষ থাকলে তা আইনগতভাবে বিচার করা হোক। অহেতুক মিথ্যে অভিযোগ এনে মামলা করে হয়রানীর কোন মানে হয়না। একারণে আমরা আজ আপনাদের সহায়তা চাচ্ছি। আমরা সবাই অত্যন্ত দরিদ্র। রিক্সা ভ্যান চালিয়ে, দিনমজুরী করে সংসার চালাই।
স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার সালিশ হলেও সাখাওয়াত ও তার ছেলেরা স্থানীয় সালিশ মানতে রাজি নয়।
মোঃ জাবেদ আকতার রংপুর প্রতিনিধি