রাজধানীর চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আলাউদ্দিন (৩৩) নামের একজনকে বগুড়ার শিবগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার মোকামতলা বন্দর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আলাউদ্দীন পঞ্চগড়ের আটোয়ারী থানার ছোটধাপ এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস। তিনি জানান, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং রায় ঘোষণার পর থেকেই আলাউদ্দীন বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে ছিলেন। বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোকামতলা বন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলাউদ্দিনের শ্বশুর কাজী নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শ্বশুরবাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে গত বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাতে স্ত্রীসহ বেড়াতে আসেন তিনি। শুক্রবার রাতে তিনি কর্মস্থল কক্সবাজার জেলার টেকনাফে চলে যেতেন। আলাউদ্দিন টেকনাফে এনজিও ব্রাকে চাকরি করেন। তার স্ত্রী নাহিদ ফেরদৌস টেকনাফে একটি বিদেশি সাহায্য সংস্থায় চাকরি করেন। সেখানেই আলাউদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় হলে ২০১৬ সালে তারা বিয়ে করেন।
এর আগে, আলাউদ্দিন গাজীপুরে একটি পোল্ট্রি ফার্মে চাকরি করতেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর সকালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা হরতালের সময় রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে আমন্ত্রণ ট্রেইলার্সের মালিক বিশ্বজিৎ দাসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করে। বিচারিক আদালতের রায়ে ২১ আসামির মধ্যে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
পরবর্তীতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামির মধ্যে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, চার জনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন এবং অন্য ২ জনকে খালাস দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়াও, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে আপিল করা ২ জন খালাস পান।।