মাগুরা প্রতিনিধি।
মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা কলেজিয়েট গার্লস স্কুলের দুই শিক্ষকের ছাত্রীদের সাথে অশ্লীল নাচানাচি ও কুরুচিপূর্ণ আপত্তিকর একটি ভিডিও ফেসবুকের মাধ্যমে ভাইরালের পর এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।গত ১৭ অক্টোবর স্কুল শাখার মেয়েদের নৌ ভ্রমণের নিয়ে রাত করে ফিরে আসা ও বেশ কয়েকজন ছাত্রী সন্দেহ জনক অসুস্থ্য এবং তাদের অসংলগ্ন আচারণের(মাতলামি) জন্য তোপের মুখে পড়েন অধ্যক্ষসহ স্কুল শাখার শিক্ষকেরা।এ ঘটনার পরে ইতিপূর্বে হয়ে যাওয়া কলেজ শাখার শিক্ষা সফরের কয়েকটি কুরুচিপূর্ণ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা রীতিমতো ভাইরাল হয়, এর সাথে সাথে এলাকা জুড়ে বয়ে চলে নানান সমালোচনা। সমালোচনা এড়াতে ওই এলাকার সুধীজন সচেতন মহলের মানুষ এই অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ নাচা-নাচির সাথে জড়িত দুই শিক্ষকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চেয়ে তাদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করলেও কোন ব্যবস্থা নেননি কলেজ কতৃপক্ষ। এতে করে ক্ষেভে ফুঁসে উঠেছে এলাকার সচেতন মহলসহ ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকগণ।ঐ এলাকার কৃতিসন্তান অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম তার নিজের ফেসবুকে ঐ ভিডিওর বর্ণনা দিয়ে এবং দুই শিক্ষকদের বিচার দাবি করে লিখেন,সম্মানিত ম্যানেজিং কমিটি,অধ্যক্ষ ও শিক্ষকমণ্ডলী ও প্রিয় এলাকাবাসী।
কলেজ শাখার পিকনিকের বাসে সংঘটিত অশ্লীল ও যৌন নিপিড়নের একটা ভিডিও ফেসবুকের মাধ্যমে সারাদেশে ভাইরাল হয়েছে। যা আমাদের এলাকার জন্য অত্যান্ত অসম্মান ও লজ্জাজনক।
উক্ত ভিডিও ছাড়াও আমার কাছে পাঠানো আরো কিছু ভিডিও তে দেখা যায় কলেজ শাখার শিক্ষক চঞ্চল বিশ্বাস ও রায় বাহাদুর(কৃষি শিক্ষা) নামক দুজন শিক্ষক তাদের বহিরাগত বন্ধুসহ মদ্যপ অবস্থায় মেয়েদের বাসে উঠে। তারা অম্লীল গান বাজিয়ে এবং অশ্লীল ও ইঙ্গিতপূর্ণ অঙ্গভঙ্গিমায় নিজেরা গান গেয়ে মেয়েদেরকে তাদের সাথে নাচার আহ্বান জানাতে থাকে। কোন কোন মেয়েকে সিট থেকে জোর করে হাত ধরে টেনে তুলে নাচতে বাধ্য করে, কারো বুকের ওড়না খুলে নেয়, নিজে স্বামী ও ছাত্রীকে বৌ সাজিয়ে হাত ধরে নাচে,ঘোমটা পরিয়ে দেয়। দাঁড়িয়ে থাকা এক মেয়েকে বাম হাতে জড়িয়ে ধরে ডান হাতে তার গাল স্পর্শ করে চুমু দিতে উদ্যত হয়। মেয়েদের শরীর স্পর্শ করে অশ্লীল ও নোংরা ইঙ্গিত পূর্ণ অঙ্গ-ভঙ্গিতে নাচানাচি করে।
ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষককে দেখে নৈতিকতার শিক্ষা নেয়।
কিন্তু এদের কাছ থেকে কী শিখলো আমাদের কোমলমতি মেয়েরা ?অসভ্যতা, অভব্যতা, নোংরামী ও অবাধ-অবৈধ যৌনাচার।।
তারা দুজনে মিলে যা করেছে সেটা নোংরামী, অসভ্যতা, লাম্পট্য, ও অনৈতিকতার চরম দৃষ্টান্ত এবং চাকুরিবিধির সর্ম্পূর্ণ অবমাননা। এই চরম অনাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে কলঙ্কমুক্ত হওয়া, সমাজকে বাচাঁনো আমাদের এলাকার প্রতিটা মানুষের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য।এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন না করলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। দ্বিতীয়ত এলাকার একমাত্র নারী শিক্ষাকেন্দ্রটি ধ্বংস হয়ে যাবে।
ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দায় প্রথমত কলেজ ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষক মন্ডলীর। ভেতর থেকে ব্যবস্থা গ্রহন করলে স্কুলটি অভিবাবকদের আস্থা ফিরে পাবে। আর যদি তা করা না হয় , তখন মানুষ সবাইকেই এক পাল্লায় ফেলে চিন্তা করবে। কোন মা বাবাই তার সন্তানকে ঐ প্রতিষ্ঠানে পাঠাবে না যেখানে তার মেয়ের ইজ্জত নিরাপদ নয় এবং যেখান থেকে সে অনৈতিক শিক্ষা অর্জন করবে।
সবচে বড় কথা গোট দুই মানুষের পাপের দায় কেন পুরো প্রতিষ্ঠান বহন করবে।মনে রাখবেন.
১। অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।
২। যে প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ইজ্জত নিরাপদ নয়, তার ধ্বংস অনিবার্য। ৩। সব সহ্য করতে পারেন কিন্তু আপনার মা-মেয়ে-স্ত্রীর ইজ্জতের উপর হাত দেয়া পাষণ্ডকে আপনি মাপ করতে পারেন না।
ম্যানেজিং কমিটি ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকমন্ডলীর নিকট বিনীত আবেদন ঘটনা নতুন পুরাতন যাই হোক যেহেতু এখন প্রকাশ পেয়েছে, ভিডিওর মতো অকাট্য প্রমাণ হাতে আছে এবং ঐ দুজন নরাধম এখনও কলেজে চাকরি করছে তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন অবশ্য করনীয়।
আশা করি দ্রুতই এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্মানীত এলাকাবাসী, মেয়ে আপনাদের, ইজ্জত সম্মানও আপনাদের। আসুন সকলে মিলে এই অসভ্যতা, নোংরামী ও আমাদের মেয়েদের ইজ্জতের উপর হাত বাড়ানো এই দুই পশুতূল্য নরাধমের বিচারের দাবীতে সবাই যার যার জায়গা থেকে সোচ্চার হই ও সংগটিত হই। তাতে করে বাকী অপরাধীরা আর অপরাধ করার সাহস পাবে না।সবাই ভাল থাকবেন।
এছাড়াও নহাটা অপকর্ম প্রতিরোধ ফেসবুক আইডিসহ এলাকার সচেতন মহল তাদের ফেসবুক ঐ ঘটনার নিন্দা ও বিচার চেয়ে তাদের নিজ নিজ আইডিতে পোস্ট করেন সেখানে এলাকার মনুষের বিস্ফরক মন্তব্যের পরও ঐ দুই শিক্ষকের কোন ব্যবস্থা নেননি অধ্যক্ষসহ কতৃপক্ষ,তবে এটি নিয়ে যে কোন মূহুর্তে ঐ দুই শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর জনরোষের শিকার হতে পারে ।এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষক চঞ্চল চৌধুরী ও রায়বাহাদুরের বক্তব্য জানতে কলেজে গেলে গা ঢাকা দিয়ে কেঁটে পড়েন তারা দুজন,অধ্যক্ষ তাদের খবর পাঠিয়ে ও ফোন করে আসতে বললেও তারা তাতে কোন সাড়া দেননি।সাংবাদিকরা ফোন করে চঞ্চল চৌধুরী কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি বেশি নাচানাচি করিনি রায়বাহাদুর বেশি করেছে আপনারা তার সাথে কথা বলেন।রায়বাহাদুরের সাথে মুঠোফোন বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা সাংস্কৃতি মনা মানুষ নাচানাচি আমরা করেই থাকি,তাতে কি হয়েছে?পুজাতে মেয়েদের নিয়ে নেচেছি,এলাকাবাসীর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে,এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এলাকাবাসী যা পারে করুক,আর আমাদের কি ক্ষমতা আছে সেটাও তাদের দেখাবানি।এ বিষয়ে ঐ কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ কুমার দে সাংবাদিকদের বলেন,ছাত্রীরা নাচানাচি এবং জ্বিন এ ধরার কারণে নৌকা ভ্রমণের দিন অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে।কে বলেছে তাদের জ্বিনে ধরেছে?এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন হুজুর বলেছে,কোন হুজুর বলেছে জানতে চাইলে তিনি তার কোন উত্তর না দিয়ে বলেন,আমার স্কুলে বাচ্চাদের প্রায়ই স্কুল থেকে জ্বিনে ধরে এবং বাচ্চারা অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।চঞ্চল ও রায়বাহাদুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি আমি তখনের বিষয় জানিনা,অপরাধ তারা করেছে সমস্যা হলে তাদের হবে,আমি এভাবে বেঁচেই যাবো,তারা আপনি খবর দেওয়ার পরও এলো না,তার মানে তারা কি আপনাকে মানে না,তাই তো মনে হচ্ছে,তারা দুজন ছাত্রীদের সাথে যে কাজ করেছে,ইতিপূর্বে এমন কাজের জন্য একজন শিক্ষক শাস্তি ভোগ করছে, তারপরও যদি তারা ভালো না হয়,তাহলে আমি কি করবো বলেন?
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি, মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক’ ভাবে সমস্ত জায়গায় ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা অবশ্যই ওই দুই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দিয়ে জবাবদিহীতার মধ্যে আনব।
একজন শিক্ষক কি ছাত্রীদের সঙ্গে এমন অশ্লীল নাচানাচি শরীরে হাত দিতে পারেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে মাগুরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর শিক্ষা অফিসার মাজেদুর রহমানের সাক্ষাৎ কারে তিনি বলেন, আমাদের কাছে এখনো কমিটি বা এলাকার পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,কোন প্রকার অন্যায় অশ্লীলতা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বরদাস্ত করা হবে না।