যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিল চিড়িয়াখানায় আরেকটি তুষার চিতাবাঘের দেহে এসএআরএস-কোভ-২ করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে। মানুষের পর এটি ষষ্ঠ প্রাণী যার দেহে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। আর লুইসভিল চিড়িয়াখানায় তিনটি তুষার চিতাবাঘের দেহেই ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
চিড়িয়াখানাটির কর্তৃপক্ষ ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) প্রাণী ও উদ্ভিদ পরীক্ষা সেবা শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে তারা। এই তিনটি তুষার চিতাবাঘের মধ্যে দুটি পুরুষ ও একটি নারী। এরা মানুষের সংস্পর্শে আসার পর এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয় বলে নিশ্চিত হয়েছে। মানুষের সংস্পর্শে এসে করেনাভাইরাসে আক্রান্ত ষষ্ঠ প্রাণী প্রজাতি এরা। এক ভিডিও বিবৃতিতে লুইসভিল চিড়িয়াখানার পরিচালক জন ওয়ালজ্যাক জানিয়েছেন, প্রথমে নারী তুষার চিতাবাঘটির সংক্রমণ শনাক্ত হয় ও পরে পুরুষ দুটির।
‘মৃদু’ লক্ষণ দেখা দেওয়া এই প্রাণী তিনটির শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় শব্দ হচ্ছে ও তাদের শুকনো কাশি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এরা শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবে, এমনটি প্রত্যাশা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মকর্তারা গত এপ্রিলে নিশ্চিত করেছিলেন যে নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানায় চারটি বাঘ এবং তিনটি সিংহের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল। টেনেসির নক্সভিল শহরে চিড়িয়াখানার একটি বাঘও এসএআরএস-কোভ-২ করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছিল। চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা অক্টোবরের শেষের দিকে ঘোষণা করেছিলেন।
ইউএসডিএ প্রাণী ও উদ্ভিদ পরীক্ষা সেবা জানিয়েছে, ‘চিড়িয়াখানা পূবসতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও’ চিতাবাঘগুলি সম্ভবত উগস্বর্গহীন একজন করোনাভাইরাস বাহক কর্মীর মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছে। কোভিড-১৯ মানুষ থেকে মানুষে যেভাবে ছড়ায় সেভাবে চিতাবাঘ বা অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ছড়ানোর তেমন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মানুষের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসার পর এ নিয়ে ষষ্ঠ প্রাণী প্রজাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হল। প্রাণীদের মধ্যে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার একটি মালয় প্রজাতির বাঘের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। শ্বসন সংক্রান্ত অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর এপ্রিলে প্রাণীটিকে পরীক্ষা করার পর করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। ওই মাসেরই শেষ দিকে পরীক্ষায় চিড়িখানাটির আরও চারটি বাঘ ও তিনটি আফ্রিকান সিংহের করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে অল্প কিছু কুকুর ও বিড়াল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অধিকাংশ প্রাণীর ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস প্রাণঘাতী না হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশে পশমের খামারে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কয়েক হাজার বেঁজি মারা গেছে।