শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে নতুন আঙ্গিকে থিয়েটার সিজারিয়ান অপারেশন মধুপুরে চালু হয়েছে নারী উদ্যোগত্বা পারুলের ঢাকা রেস্টুরেন্ট দুপচাঁচিয়ায় শ্রী শ্রী বাসন্তী পূজা অনুষ্ঠিত বাংলার জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ন দাস আর নেই : নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত নওগাঁ ভুয়া সিআইডি পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার দুপচাঁচিয়ায় প্রাণিসম্পদ সেবা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত মধুপুর সহকারী পুলিশ সুপারের আবারও বিশাল অর্জন সরিষাবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে নওগাঁর সাপাহারে আদিবাসী মঙ্গল টুডু নামে এক কৃষকের আম বাগানের গাছ কর্তনের অভিযোগ দুপচাঁচিয়ায় থানা পুলিশের অভিযানে ১০ জন গ্রেপ্তার নওগাঁয় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াই নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে তুলেনিয়ে ধর্ষণ বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মুজিবনগর দিবস উদযাপিত নাট্যকার অমৃতলাল বসুর জন্মদিন আজ : নওগাঁ জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় মোহাধুমধামে চৈত্র মাসে শুক্লপক্ষে বাসন্তী পূজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত নওগাঁ ঐতিহ্যবাহী ৫ শ বছরের পুরনো রঘুনাথ মন্দিরে রামনবমী জন্ম উৎসব উপলক্ষে ভক্তদের ঢল নেমেছে কালাইয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন কালাইয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২৪ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নওগাঁর মহাদেবপুরে বিএনপি ও জামাতনেতা সহ ২১ জনের মনোনয় পত্র দাখিল

শিক্ষার নতুন কারিকুলামে জটিলতা বাড়ার আশংকা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২১
  • ২০১ বার পঠিত
CINN ডেস্কঃ জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে নতুন কারিকুলাম তৈরির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিন বছর ধরে দেশের বাস্তবতা যাচাই ও চাহিদা বিবেচনা করে এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের তৈরি করা যোগ্যতা ভিত্তিক শিখনফল (লার্ণিং আউট কাম) বাদ দিয়ে ‘অভিজ্ঞতা ভিত্তিক’ জাতীয় শিক্ষাক্রমের রুপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষকদের পক্ষে পাঠদান কঠিন হবে। আর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে সহায়ক বই ও কোচিং নির্ভর হয়ে পড়বে। প্রাক-প্রাথমিক স্তরের একটি বইয়ে চারটি ধর্মের বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। আর ইসলাম শিক্ষা বইয়ের যোগ্যতায় ‘গল্প’ বলা হয়েছে। এর ফলে সারা দেশে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর রুপরেখায় কারিগরি শিক্ষা যুক্তই করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দাদ্বশ শ্রেণি পর্যন্ত নতুন কারিকুলাম তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের হালনাগাদকৃত সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর অনুমোদন করে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন কারিকুলাম প্রণয়নে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কারিকুলাম তৈরিতে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। কমিটি কারিকুলাম বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা প্রায় চূড়ান্ত করে। কিন্তু হঠাৎ করে আগের রুপরেখার যোগ্যতা ও শিখন ফল বাদ দিয়ে জটিল একটি যোগ্যতার ছক (মেট্রিক্স) জুড়ে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদিত প্রাথমিক স্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত উপেক্ষা করে ইউনিসেফ, প্লান বাংলাদেশ ও ব্র্যাকের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় সমন্বিত শিক্ষাক্রম রুপরেখাটি তৈরি করা হয়েছে। আর এনসিটিবির প্রাথমিকের উইং প্রধানকে বাদ দিয়ে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) প্রফেসর মশিউজ্জামানকে।
এ ব্যাপারে শিক্ষাক্রম রুপরেখা তৈরির প্রধান সমন্বয়ক ও এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) প্রফেসর মশিউজ্জামান আজকালের খবরকে বলেন, কারিকুলাম সব সময়ে প্রজেক্টের আওতায় তৈরি হয়। সেখানে পরামর্শকরা কাজ করেন। প্লান বাংলাদেশের যার কথা বলা হচ্ছে তিনি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। তিনি এক সময়ে লিয়নে প্লানে কাজ করেছেন। তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে নেওয়া হয়েছে। ব্র্যাকের কেউ নেই। তবে সাবজেক্ট কমিটিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন আছেন। ইউনিসেফের পক্ষ থেকে দুই জন কর্মকর্তা প্রাথমিকের ও মাধ্যমিকের কারিকুলামের কাজ দেখছেন। আগেও তারা ইনভলব ছিলেন। এনজিওরা কারিকুলাম তৈরি করছে- এটা  প্রোপাগান্ডা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষাক্রমের নতুন রুপরেখায় যোগ্যতা ভিত্তিক শিখন ফল বাদ দেওয়া হয়েছে। আর ‘অভিজ্ঞতা ভিত্তিক’ যোগ্যতা যুক্ত করা হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের সকল পাঠই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দিতে হবে। সব কিছু অভিজ্ঞতা দিয়ে হয় না। অনুসন্ধান ও বিশ্লেষন ছাড়াই অগোছালোভাবে অভিজ্ঞতা ভিত্তিক যোগ্যতাগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে। কারিকুলামের রুপরেখার টেমপ্লেটে যোগ্যতা ভিত্তিক শিখনফল বাদ দিয়ে সরাসরি বইয়ের কন্টেন্ট লেখার কথা বলা হয়েছে। এভাবে বইয়ের বিষয়বস্তু লিখলে বই ভারসাম্যহীন হয়ে বড় ধরনের গ্যাপ তৈরি হবে। ওই ঘাটতি পূরণে সহায়ক বই (নোট গাইড), কোচিং-প্রাইভেটনির্ভর হয়ে পড়বে শিক্ষার্থীরা। একাধিক সহায়ক বই কিনতে হবে। অথচ শিখনফল প্রাথমিক শিক্ষায় বহু বছর ধরে চর্চা হচ্ছে। শিক্ষকদের সেভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য করে তোলা হয়েছে। বাস্তব পরিস্থিতিতে নতুন রুপরেখা বাংলাদেশের গ্রাম থেকে শহরের বিদ্যালয়ের বাস্তবায়ন সম্ভব না।   এ বিষয়ে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) মশিউজ্জামান বলেন, বর্তমান কারিকুলামে নোট গাইড বা সহায়ক বই তৈরির সুযোগ আছে। নতুন কারিকুলামে তা সম্ভব হবে না। কারণ, শিক্ষার্থীদের আলাদা আলাদা মূল্যায়নসহ নানা ব্যবস্থা রয়েছে। যে কারণে নোট গাইড তৈরি করা সম্ভব হবে না।   ‘অভিজ্ঞতা ভিত্তিক’ যোগ্যতা যুক্ত করা প্রসঙ্গে মশিউজ্জামান বলেন, এমন শব্দ আছে যা পাঠ্যবইয়ে সংযোগ করতে ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা করতে হয়। সামনা সামনি না বসে অনলাইনে এগুলো নির্ধারণ করা যায় না। করোনার মধ্যে অনলাইনে বসে প্রাথমিক উইংয়ের তৈরি করা কমপ্রিহেনসিভগুলো বর্তমান ফ্রেম ওয়ার্কের সঙ্গে সামাঞ্জস্য না হওয়ায় নতুন মেট্রিক্স যুক্ত করা হয়েছে।
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন একজন কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নিজের পরিচয় গোপন রেখে বলেন, ইসলাম ধর্মে ১০ বছর বয়সে নামাজ ফরজ করা হয়েছে। নামাজ পড়তে হলে সূরা, দোয়া ও দরূদ মুখস্ত করে শিখতে হয়। একটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের সব শেখানো সম্ভব না। ধর্মে বিশ্বাসের বিষয় আছে। শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস না করলে তাকে জোর করে বিশ্বাস করানো সম্ভব না। ধর্মে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি বিশ্বাসের অনুভূতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেনতোনোভাবে শিশুদেরকে ধর্ম শেখানো যায় না।  সেজন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে  কারিকুলাম ও পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করতে হয়। রুপরেখায় সে বিষয়গুলো উপেক্ষিত। তিনি উদাহরণ দিয়ে বিলেন, রাসুল (স.) নবুয়্যত লাভ করেছেন-এটা অভিজ্ঞতা দিয়ে কিভাবে শিশুকে শেখানো হবে? এটা বিশ্বাসের বিষয়। শিক্ষার্থীরা মুখস্ত করে না শিখলে ধর্মে বিশ্বাসী হবে  না।
শিক্ষাক্রমের রুপরেখার অসঙ্গতি তুলে ধরে সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিজ্ঞতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের যোগ-বিয়োগ, গুন-ভাগ, সরল অংক শেখানোর কথা বলা হয়েছে। অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীদের দোকানে বা প্রকৃতির নিকট নিয়ে যাওয়া শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব না। প্রাথমিক স্তরের পুরাতন শিক্ষাক্রমে একটি অংশ ছিলো-‘পরিকল্পিত কাজ’। যেখানে অভিজ্ঞতা ও মুখস্থ কখন কোনটি প্রয়োজন তা নির্ধারণের সুযোগ ছিলো। কিন্তু বর্তমান রুপরেখায়-‘পরিকল্পিত কাজ’এর পরিবর্তে সরাসরি ‘অভিজ্ঞতা’ নির্ধারণ করা হয়েছে। এনসিটিবির কর্মকর্তারা অভিজ্ঞতার পরিবর্তে ‘পরিকল্পিত কাজ’ শেখানোর প্রস্তাব করলেও তা পাত্তা দেননি এনজিও কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) প্রফেসর ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, পাঠ্য বইয়ে অভিজ্ঞতা ভিত্তিক শিখনের একটা মাত্রা আছে। কারিকুলাম চূড়ান্ত হলেই অভিজ্ঞতার অংশ কতটুকু আছে, স্কুলে কতটুকু শেখানো হবে, ক্লাস রুমে কতটুকু শেখানে হবে, স্কুল এবং ক্লাস রুমের বাইরে কতটুকু শেখানো হবে জানা যাবে। আমি এখন কিছুই জানি না। কেন জানেন না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, প্রাথমিকের দায়িত্ব আমার হলেও সমন্বিত কারিকুলামে আমি লিড দিচ্ছি না। মশিউজ্জামান (এনসিটিবির সদস্য) দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ব্যাপারে প্রফেসর মো. মশিউজ্জামান বলেন, কারিকুলামের কাজ সব সময়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উইং আলাদাভাবে করতো। এবারো আলাদাভাবে কাজ শুরুর একটা পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলো- প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত একটি কারিকুলাম হবে। সুতারং দুই উইং এক সঙ্গে মিলে কাজ করছি। প্রাথমিকের শিক্ষক, পিটিআই, ইউআরসি, ডিপিইর যারা কারিকুলাম নিয়ে কাজ করেছিল তাদের নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকের সদস্যকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তিনি (রিয়াজুল হাসান) প্রতিটি প্রোগ্রামে প্রতিদিন ছিলেন। কোর কমিটিতে প্রাথমিক উইং’য়ের তিন জন ও মাধ্যমিক উইং’য়ের তিন জন কাজ করছেন।
এনসিটিবির ওয়েব সাইটে প্রকাশিত শিক্ষাক্রম রুপরেখা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির বইয়ের মেট্রিক্সসে বলা হয়েছে- ‘ধর্মীয় গল্প ও সহজ ছড়া জেনে ইসলাম ধর্মের সৌন্দর্য্যরে সঙ্গে পরিচিত হয়ে ধর্মীয় উৎসাহে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে পারা’। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে চার ধর্মের শিক্ষার্থীদের একটি শ্রেণিকক্ষে এক সঙ্গে পাঠদান করা হয়। একটি বইয়ে চারটি ধর্মের বিষয়বস্তু প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এক ধর্মের অনুসারীর শিক্ষার্থীরা অন্য ধর্ম শিখানোর অভিযোগ তুলতে পারে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া ইসলাম শিক্ষায় ‘গল্প’ বলা নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে মশিউজ্জামান বলেন, প্রাক-প্রাথমিকের বইয়ে ধর্মের বেসিক বিষয়গুলো আসবে। ইসলাম ধর্মের কলেমা বা অন্য কোন ধর্মের বিষয়গুলো সরাসরি আসবে না। ইসলাম ধর্মের মেট্রিক্সসে ‘গল্প’ জুড়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি জানেন না বলে দাবি করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রাথমিকের নতুন কারিকুলামের রুপরেখা যারা করছেন সে কমিটির অনুমোদন নেই প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। অনুমোদন ছাড়া কমিটি কিভাবে কাজ করছে তা জানতে চেয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সদস্য (অর্থ) মির্জা তারিক হিকমত। তিনি আজকালের খবরকে বলেন, এনসিটিবির আইনে বলা আছে এ ধরণের কাজ করতে হলে কমিটি থাকতে হবে। নতুন কারিকুলাম তৈরিতে কমিটির অনুমোদন আছে কিনা জানতে চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এই দুই স্তরের শিক্ষার্থী, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষকের যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা ও চর্চার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দেশের বর্তমান বাস্তবতায় প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রম রুপরেখা বাস্তবায়ন কঠিন চ্যালেঞ্জ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম ২৫ মার্চ নিজ দপ্তরে আজকালের খবরকে বলেন, ‘এনসিটিবি আমাদের নিয়ন্ত্রণে না। এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাধ্যমিকের কারিকুলামে গোজামিল: মাধ্যমিকস্তরের বর্তমান কারিকুলামে ইতিহাস, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, ইংরেজি ও বাংলা বইয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু নতুন কারিকুলামে তা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা নামে কোন বিভাগ থাকবে না। কলেজে ভর্তির সময় বিভাগ নির্ধারন করতে হবে। মাধ্যমিক স্তরের পদার্থ, রসায়নসহ অন্যান্য কঠিন বিষয়ে সীমিত জ্ঞান অর্জন করে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অজর্নের সমন্বয়ের কোন নির্দেশনা নেই। এছাড়া বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিলেও এটি রুপরেখায় উপেক্ষিত।
এনসিটিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, আইন অনুযায়ী কারিকুলাম তৈরির দায়িত্ব এনসিটিবির কর্মকর্তাদের। কিন্তু এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে এনজিও কর্মকর্তারা আমাদের দেশে বাস্তবায়ন অযোগ্য অভিজ্ঞতা ভিত্তিক কন্টেন্ট কারিকুলামে যুক্ত করছেন। ফলে বাড়িতে অভিভাবকদের পক্ষে পড়ানো সম্ভব হবে না। এমন কি শিক্ষকদের পক্ষেও শ্রেণি কক্ষে পাঠদান কঠিন হবে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে নবম শ্রেণিতে কৃষি শিক্ষা বিষয়টি তুলে দিয়েছে। বিজ্ঞান বইয়ে কৃষি শিক্ষার সামান্য অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত কারিকুলামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন আজকালের খবরকে বলেন, এনসিটিবি থেকে আমাকে জানানো হয়েছে- ইউনিসেফসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ক্যাডারের কয়েকজন কর্মকর্তা লিয়নে ছিলেন। তাদেরকে কারিকুলাম কমিটিতে এক্সপার্ট হিসেবে রাখা হয়েছে। এনজিও বা বিদেশি সংস্থা এক্সপার্ট হিসেবে থাকতে পারে। কিন্তু সব দায়িত্ব তারা পালন করছে এটা মনে হয় ঠিক না। সচিব তাৎক্ষণিক এনসিটিবির চেয়ারম্যানকে ফোন করে কারিকুলামের সঙ্গে যুক্ত সব কর্মকর্তাদের তালিকা চান।
প্রসঙ্গত, চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন কারিকুলামের বই তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা পিছিয়ে গেছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন কারিকুলামের বই তুলে দেওয়ার কাজ করছে এনসিটিবি। এনএমএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150