এর মধ্যে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব এবং বিএনপিকর্মী আরিফুর রহমান ও রিপনকে সর্বোচ্চ দশ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
এছাড়া কলারোয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বাচ্চুকে নয় বছরের কারাদণ্ড এবং বাকি ৪৬ জনকে দুই থেকে সাত বছরের সাজা দিয়েছে আদালত।
সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম হুমায়ুন কবীর বৃহস্পতিবার সকালে জনাকীর্ণ এজলাসে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত আসামিদের কেউ এই রায়ে খালাস পাননি।
আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা ৩৪ জন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ১৬ জনকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। দণ্ডিতরা সবাই বিএনপি নেতাকর্মী।
আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী এবং আসামি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের স্ত্রী শাহনাজ পারভিন বকুল রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এটা সাজানো। আমরা হাই কোর্টে যাব। আমরা সেখানে নিশ্চয় ন্যায্য বিচার পাব।”
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর বলেন, “আমরা সন্তুষ্টও না, অসন্তুষ্টও না। রায় পর্যবেক্ষণ করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
২০০২ সালে এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ‘ধর্ষণের শিকার’ হলে ওই বছর ৩০ অগাস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে তাকে দেখে মাগুরায় যাওয়ার পথে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে।
সে সময় হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা করা হয়। কিন্তু এক আসামি হাই কোর্টে গিয়ে মামলা বাতিলের আবেদন করলে আদালতে স্থগিতাদেশ দেয়। তাতে মামলার কার্যক্রম ঝুলে থাকে দীর্ঘদিন।
হাই কোর্ট গতবছর অক্টোবরে তিন মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিলে নভেম্বরে ফের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ২৭ জানুয়ারি রায়ের জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন বিচারক। সেদিনই জামিনে থাকা ৩৪ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ রায় ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আদালত এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংবাদকর্মীরাও রায়ের সংবাদ সংগ্রহের জন্য আদলতে উপস্থিত হন।
রায়ের পর আদালতের বাইরে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা সেখানে আনন্দ মিছিল করেন। তবে গোলযোগের কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।