শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় প্রাণিসম্পদ সেবা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত মধুপুর সহকারী পুলিশ সুপারের আবারও বিশাল অর্জন সরিষাবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে নওগাঁর সাপাহারে আদিবাসী মঙ্গল টুডু নামে এক কৃষকের আম বাগানের গাছ কর্তনের অভিযোগ দুপচাঁচিয়ায় থানা পুলিশের অভিযানে ১০ জন গ্রেপ্তার নওগাঁয় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াই নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে তুলেনিয়ে ধর্ষণ বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মুজিবনগর দিবস উদযাপিত নাট্যকার অমৃতলাল বসুর জন্মদিন আজ : নওগাঁ জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় মোহাধুমধামে চৈত্র মাসে শুক্লপক্ষে বাসন্তী পূজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত নওগাঁ ঐতিহ্যবাহী ৫ শ বছরের পুরনো রঘুনাথ মন্দিরে রামনবমী জন্ম উৎসব উপলক্ষে ভক্তদের ঢল নেমেছে কালাইয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন কালাইয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২৪ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নওগাঁর মহাদেবপুরে বিএনপি ও জামাতনেতা সহ ২১ জনের মনোনয় পত্র দাখিল বগুড়ায় ২২ কেজি গাঁজাসহ ২ জন গ্রেফতার তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ কালাইয়ের জনগণ দুপচাঁচিয়ায় মাদক সেবনের সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ৫ শোক সংবাদ! শোক সংবাদ!! নওগাঁর আত্রাই উপজেলা বিএনপির নয় নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ নওগাঁর ইয়াদ আলীর মোড়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু

সীমান্তে ফেলানী হত্যার ১০ বছর আজ ভারতের আদালতে থেমে আছে বিচার প্রক্রিয়া

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৩৬৬ বার পঠিত

সীমান্তে ১৪ বছরের বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যার ১০ বছর আজ। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার রামখানা অনন্তপুর সীমান্তে ফেলানীকে গুলী করে নির্মমভাবে হত্যা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বিএসএফ এর গুলীতে নিহত হওয়ার পরও প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল ফেলানীর নিথর লাশ।
জানা গেছে, ফেলানী হত্যার ঘটনায় ভারতের আদালতে মামলা করা হলেও বিচার পক্রিয়া থমকে আছে। কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তখন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কিন্তু এরপরও কমেনি সীমান্তে হত্যাকান্ড। এতটি বছরেও বিচার হয়নি ফেলানি হত্যার। আজ বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) পারিবারিকভাবে পালন করা হবে তার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। আয়োজন করা হয়েছে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, গতবছর (২০২০ সাল) সীমান্তে ৩৯ বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে বিএসএফ সদস্যদের গুলীতে। পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বিএসএফ সদস্যদের শারীরিক নির্যাতনের পর। ২০১৯ সালে এই সময় (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) সীমান্তে বিএসএফের গুলী বা নির্যাতনে মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন বাংলাদেশী।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বহুল আলোচিত ফেলানী হত্যা মামলার পুনঃবিচার এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আনীত রিটের শুনানি শুরু হয়েছে। গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ড. ডি ওয়াই চন্দ্রচাদ এবং বিচারপতি কে এম জোসেফ-এর যৌথ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে রিটের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন অ্যাডভোকেট বিজন ঘোষ ও অ্যাডভোকেট অপর্ণা ভাট। আর প্রতিপক্ষ ভারত ইউনিয়ন ও অন্যান্যদের পক্ষে অংশ নেন অ্যাভোকেট ডি মোহনা। কিছু সময় শুনানি চলার পর অধিকতর শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ১৮ মার্চ ধার্য করে আদেশ দেন যৌথ বেঞ্চ। অ্যাডভোকেট বিজন ঘোষের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন। তবে এ মামলার শুনানী হলেও বিচার প্রকিয়ায় ধীর গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরা। ফেলানীর বাবা-মায়ের অভিযোগ- ১০ বছরেও মেয়ের হত্যাকারীর কাক্সিক্ষত বিচার পায়নি পরিবার। ফলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বাবা নুরল ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি সকালে ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তের সাব পিলারের পাশ দিয়ে মই বেয়ে কাটাতার ডিঙ্গিয়ে বাবার সঙ্গে দেশে ফিরছিল ফেলানী। এ সময় টহলরত চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ তাকে গুলী করে হত্যা করে। ফেলানীর বাড়ি উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনিটারী গ্রামে। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘন্টা ফেলানীর নিথর দেহ কাঁটাতারের উপর ঝুলে থাকার পর তার লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ। এর প্রায় ৩০ ঘন্টা পর ৮ (জানুয়ারি) শনিবার লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।
২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট কোচবিহার জেলার বিএসএফ’র ১৮১ সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচারকার্য শুরু হয়। ৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে। রায় প্রত্যাখ্যান করে ১১ সেপ্টেম্বর ফেলানীর বাবা ভারতীয় হাই কমিশনের মাধ্যমে সে দেশের সরকারকে ন্যায় বিচারের আশায় পত্র দেন। আবারো ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার কার্যক্রম শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে তা একাধিকবার স্থগিত হয়।
এছাড়াও ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ফেলানী হত্যা ঘটনায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ১ম ও বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট সালমা আলী ২য় বাদী হয়ে আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় (ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া) এর সচিব এবং বিএসএফ এর মহাপরিচালককে বিবাদী করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নয়াদিল্লীতে ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী একটি ফৌজদারি মামলা করেন। তারা ২০১৫ সালের ২১ জুলাই ফেলানীর বাবার জন্য অন্তর্র্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ চেয়ে আরো একটি আবেদন করেন।
পরে ২০১৫ সালে আইন ও শালিস কেন্দ্র এবং ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ আরো একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করে। ৩১ আগস্ট ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সেদেশের সরকারকে ফেলানীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লক্ষ রুপী প্রদানের অনুরোধ করেন। এর জবাবে সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামকে দায়ী করে বক্তব্য দেয়। এরপরে ২০১৬ এবং ১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানি দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি এখনো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোকেট সালমা আলী জানান, এখন পর্যন্ত পরিবারের ক্ষতিপূরণসহ স্বচ্ছ বিচার না পাওয়ায় ওই মামলার একজন বাদী হিসেবে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করছি আমরা কাক্সিক্ষত বিচার পাব। ফেলানী হত্যা মামলার বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য মানবাধিকার কর্মী, কুড়িগ্রাম জেলা জর্জ কোর্ট পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, করোনায় ভার্চুয়ালি চলছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম। ফলে ফেলানী হত্যা মামলার শুনানি হচ্ছে না। আমরা চাই ভার্চুয়ালি শুনানি হলেও দুই দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি হলে তা উভয় রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গলজনক। ৬ জানুয়ারি বাবা নূরুল ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে গিয়েছি কিন্তু ১০ বছরেও কাক্সিক্ষত বিচার পেলাম না।
কর্মসূচী: গত কয়েক বছরের মতো এবারেও ঢাকায় ১ দিনের কর্মসূচী পালন করছে নাগরিক পরিষদ। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বারিধারা পার্ক রোডের নাম ফেলানী সরণী করার জন্য তারা বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাব সম্মুখে গণ জমায়েত আয়োজন করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন। তিনি জানান, এ জমায়েতের মাধ্যমে তারা ৭ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী ফেলানী দিবস পালন, ফেলানী হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি, ফেলানীর পরিবারসহ সীমান্ত আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত সকল ব্যাক্তি ও তাদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান, কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের নাম ফেলানী সীমান্ত নামকরণ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন পার্ক রোড অথবা কূটনৈতিক এলাকায় ১টি রাস্তার নাম ফেলানী সরণি, সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন বন্ধের দাবি জানাবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150