(শেরপুর প্রতিনিধি) : শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ৬ মাসের সাজার ভয়ে ১৬ বছর আত্মগোপনের পর স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে ধরা দিলেন মো. নজরুল ইসলাম (৪৫) নামের এক সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামি নজরুল নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম শমশ্চুড়া গ্রামের বাসিন্দা।
তার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে চুরির মামলা হয়।
ওই মামলায় আদালত তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। সাজার ভয়ে নজরুল ইসলাম এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর রোববার (১৫ নভেম্বর) রাতে তিনি স্বেচ্ছায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী থানায় আত্মসমর্পণ করেন।
পুলিশ জানায়, চুরির মামলায় ২০০৪ সালে নজরুল ইসলামকে ৬ মাসের কারাদণ্ড বহাল রাখে আদালত।
সাজার ভয়ে এলাকা ছেড়ে ফেনীতে আত্মগোপন করেন। সেখানে তিনি দিনমজুরির কাজ করতেন। দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন সেখানে। সেই সংসারে ১৪ বছর বয়সের এক কন্যাসন্তান আছে তার।
নজরুল ইসলামের ভাষ্য, জেল খাটার ভয়ে এলাকা ছেড়ে ১৬ বছর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। সাজার বিষয়টা সব সময় তাকে কষ্ট দিত। মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানের জন্য সব সময় মন কাঁদলেও ভয়ে তিনি এত দিন এলাকায় আসার সাহস পাননি।
পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) হাসিবুল হাসান বলেন, ‘যেসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি পলাতক আছেন, আমরা তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তোতা মিয়ার সহযোগিতায় নজরুল ইসলাম পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ’
‘পুলিশের সহযোগিতার কথা শুনে সাজাপ্রাপ্তরা স্বেচ্ছায় আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে সাহস পাচ্ছেন। মাত্র ৬ মাসের সাজার জন্য জীবনের ১৬টি বছর নষ্ট করেছেন নজরুল। বিষয়টি নজরুলের বাবা ও আওয়ামী লীগ নেতা তাকে বুঝিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করিয়েছেন। ’
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বলেন, ছয় মাস সাজা বলতে তো সাড়ে চার মাসের মতো সাজা হয়। কিন্তু শুধু বোঝার ভুলের জন্য ১৬টি বছর পালিয়ে ছিলেন নজরুল ইসলাম। বর্তমানে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে তার পরিবার ও স্থানীয়রা তাকে বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় নজরুল ১৬ পর বছর স্বেচ্ছায় থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছেন। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।