মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
ঝালকাঠিতে বিয়ের প্রলোভনে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও প্রমাণ লোপাটে মারধরসহ কুপিয়ে জখমের মামলায় এজাহার ভূক্ত আসামি সাইফুল ইসলাম সেন্টু (৫০) কে জেলহাজতে প্রেরন করেছে আদালত।
গতকাল রবিবার বিকেলে ঝালকাঠি সদর উপজেলার হিমানন্দকাঠী গ্রাম থেকে গ্রেফতারের পর আজ সোমবার (১৮ জুলাই) পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে। তবে মামলার প্রধান আসামি ইসতিয়াক আহম্মেদ অভি (২৫) ও তার মা মোসাঃ রিজিয়া বেগম (৪৫) পালাতক রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বানাড়ীপাড়া উপজেলার মাদারকাঠি গ্রামের কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ ও কুপিয়ে জখমের ঘটনায় তার মা লিপি বেগম বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও মামলা রেকর্ড না করায় ১২ জুলাই ২০২২ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নালিশী মামলাটি দায়ের করেন। আদালত ঝালকাঠি থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসাবে রেকর্ড পূর্ব পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে অত্র আদালতে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দিলে পুলিশ গত ১৭ জুলাই রবিবার বিকেলে এজাহার নামীয় ২নং আসামী সেন্টু কে গ্রেফতার করে বলে জানা গেছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, পার্শবর্তী নবগ্রামের শিক্ষক ইমাম হোসেনের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাওয়া-আসার পথে ১নং আসামী ইসতিয়াক আহম্মেদ অভি পথে ঘাটে তাকে উত্যক্ত করতো।এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কলেজ ছাত্রীর সাথে সে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। এক বছর সম্পর্কের পর গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ইং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসামি অভি একটি সাদা মাইক্রোবাসে কলেজ ছাত্রীকে কুয়াকাটা বেড়াতে নিয়ে রুপসী বাংলা (আবাসিক) হোটেলে তুলে জোরপূর্বক স্ত্রীর ন্যায় যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এরপর বিভিন্ন সময় কলেজ ছাত্রীর সাথে জোরপূর্বক দৈহিক সম্পর্ক চালিয়ে আসলে বিয়ের কথা বললে আসামি অভি নানা রকম ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়।
গত ২৮ জুন আসামি অভি বিয়ের বিষয়ে বাবা-মায়ের সাথে কথা বলিয়ে দেয়ার কথা বলে কলেজ ছাত্রীকে তার গ্রামের বাড়ীর নিজ কক্ষে এনে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর সে তাদের দুজনের সম্পর্কের প্রমান নষ্ট করতে ভিকটিমের ব্যবহৃত এনড্রয়েড ফোনটি ছিনিয়ে নিতে জোর-জবরদস্তি শুরু করে। তখন কলেজ ছাত্রী সেখান থেকে পালিয়ে আসার চেষ্টাকালে আসামি অভি ধারালো একটি চাকু দিয়ে তার হাতে আঘাত করে ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। এসময় সে ডাক চিৎকার করলে ধর্ষক অভির পিতা সাইফুল ইসলাম সেন্টু ও মা রিজিয়া বেগম এসে তার মুখ চেপে ধরে ও বেধরক মারধর করে আহত করে। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পরলে আসামিরা কলেজ ছাত্রীকে ঘরের বাইরে ছুড়ে ফেলে দেয়।খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রীর স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
তবে আটক সেন্টুর ভাই বিএনপি নেতা বাবুল হোসেন জানান, মামলাটি মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক। একাধিক পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত এক তরুনী ও তার পরিবার আমাদের পরিবারকে হয়রানি ও সম্মানহানী করার জন্য এ চক্রান্তমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে। যা নিরপেক্ষ তদন্ত হলে প্রমান হবে|