শনিবার রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে ডিএমপির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তিনি এই নির্দেশনা দেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা মহানগরীতে যতগুলো ভাস্কর্য আছে সেগুলো যাতে বিনষ্ট করতে না পারে, সেজন্য আমাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রয়োজনে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
মুজিববর্ষে ঢাকার ধোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলে তার বিরোধিতা শুরু করেন কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠনের জোট হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক ভাস্কর্য তৈরি করা হলে তা ‘বুড়িগঙ্গায় ফেলার’ হুমকি দেন। এরপর চট্টগ্রামে এক ধর্মীয় সভায় হেফাজত আমির জুনাইদ বাবুনগরী যে কারও ভাস্কর্য তৈরি করা হলে ‘টেনে হিঁচড়ে’ ভেঙে ফেলার হুমকি দেন।
এ নিয়ে প্রতিবাদের মধ্যেই গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়ায় জাতির পিতার একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যে ভাংচুর চালানো হয়। ওই ঘটনায় স্থানীয় একটি মাদ্রাসার দুই ছাত্র এবং দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এরপর গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়ন পরিষদের কয়া গ্রামে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের (বাঘা যতীন) ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ঢাকার ভাস্কর্যগুলোর নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দিতে বললেন পুলিশ কমিশনার।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপ-কমিশনার ওয়ালিদ হোসেন জানান- গত মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির ৮টি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে যৌথভাবে প্রথম হয়েছে মিরপুর ও গুলশান বিভাগ। ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনারদের (এসি) মধ্যে প্রথম হয়েছেন মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার এম এম মঈনুল ইসলাম। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) মধ্যে প্রথম হয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম। পুলিশ পরিদর্শক তদন্তদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মিরপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন। পুলিশ পরিদর্শক অপারেশনদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন কদমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) জাকির হোসাইন। শ্রেষ্ঠ উপ-পরিদর্শক (এসআই) যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই হাসানুর রহমান ও বাড্ডা থানার এসআই মোহাম্মদ হানিফ। শ্রেষ্ঠ সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মতিঝিল থানার এএসআই হেলাল উদ্দিন ও পল্লবী থানার এএসআই মো. জামাল হোসেন।
ডিএমপির নয়টি গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হয়েছেন গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. গোলাম সাকলায়েন, চোরাই গাড়ি উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হয়েছেন গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. কায়সার রিজভী কোরায়েশী, অস্ত্র উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হয়েছেন গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু, মাদকদ্রব্য উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হয়েছেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. গোলাম সাকলায়েন, অজ্ঞান/মলমপাটি গ্রেফতারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হয়েছেন গোয়েন্দা রমনা বিভাগে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তরিকুর রহমান। ডিএমপির আটটি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হয়েছেন কোতোয়ালি ট্রাফিক জোন বিমান কুমার দাস, শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হয়েছেন বাড্ডা ট্রাফিক জোনের ইন্সপেক্টর মো. সাজ্জাদ হোসেন, শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট যৌথভাবে ট্রাফিক সার্জেন্ট হয়েছেন শাহবাগ ট্রাফিক জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট জাফর ইমান ও ডেমরা ট্রাফিক জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট ইবনে ফিরোজ।
এছাড়াও ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার ৭৫ জন কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির সব অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।