কিংবদন্তি বলিউড অভিনেতা দিলীপ কুমার আর নেই
রিপোর্টারের নাম
-
আপডেট টাইম :
বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১
-
২০০
বার পঠিত
ভারতীয় বর্ষীয়ান অভিনেতা দিলীপ কুমার গতকাল বুধবার সকালে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। দিলীপ কুমারের চিকিৎসার তত্ত্বাবধানকারী মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালের পালমোনোলোজিস্ট ডা. জলিল পার্কার গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ১৯২২ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন দিলীপ কুমার। তার আসল নাম মোহাম্মদ ইউসুফ সারোয়ার খান। তার বাবার নাম ছিল মোহাম্মদ সারোয়ার খান, যিনি একজন ফল ব্যবসায়ী ছিলেন। খবর বিবিসির। এদিকে উপমহাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় দিলীপ কুমারের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।
দিলীপ কুমারের ভেরিফায়েড টুইটার পেজ থেকে সকাল ৮টার কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। ছয় দশকের ক্য্যারিয়ারে তিনি ৬৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার স্ত্রী মুম্বাই চলচ্চিত্রের আরেক অভিনেত্রী সায়রা বানু। শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শেষ সময়ে স্ত্রী সায়রা বানু পাশে ছিলেন তার। দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন দিলীপ কুমার। মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন তিনি।
গত ৩০ জুন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক দিন আগেই তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে টুইটারে জানিয়েছিলেন সায়রা বানু। দিলীপ কুমার কৈশোরে মুম্বাই থেকে পুনে গিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য পরিচালিত একটি ক্যান্টিনে কাজ নেন দিলীপ কুমার। এর কিছু দিন পর আবারও মুম্বাইয়ে (তৎকালীন বোম্বে) ফিরে বাবার সঙ্গে ব্যবসায় যোগ দেন তিনি।
ব্যবসার কাজেই একসময় ইউসুফ খানের পরিচয় হয় সেই সময়কার প্রখ্যাত সাইকোলজিস্ট ডা. মাসানির সঙ্গে, যিনি দিলীপ কুমারকে পরিচয় করিয়ে দেন ‘বোম্বে টকিজ’-এর মালিকের সঙ্গে। ১৯৪৩ সালে ‘বোম্বে টকিজ’ ইউসুফ খান যান চাকরি খুঁজতে, কিন্তু সেখানকার স্বত্বাধিকারী দেবিকা রানী তাকে অভিনেতা হওয়ার প্রস্তাব দেন। প্রথম ছবিতে অভিনয় করার সময় থেকেই নাম বদলে রেখেছিলেন দিলীপ কুমার। ইউসুফ থেকে তাকে দিলীপ কুমার নাম রাখতে সাহায্য করেছিলেন তার প্রথম ছবির প্রযোজক দেবিকা রানি। সে সময় বলিউডে নাম বদল ছিল বেশ সাধারণ ঘটনা। জনপ্রিয়তা পেতে ছোট নাম বা আকর্ষণীয় নামের পিছনে ছুটতেন অনেকেই। তবে দিলীপ কুমার নাম বদল করেছিলেন অন্য কারণে। বলা যায় বাবার কাছে মার খাওয়ার ভয়ে। নিজের আত্মজীবনীতে এই বিষয় নিয়ে লিখেছেন অভিনেতা। তিনি জানান, প্রথমে দেবিকা রানিই তাকে নাম বদলানোর পরামর্শ দেন। তবে তিনি রাজি হয়েছিলেন অন্য কারণে। দিলীপ কুমার লেখেন, তার বাবা অভিনয় পেশার একেবারে বিরোধী ছিলেন। এসব ‘নাটক’ মনে হত তার। উপরন্তু বন্ধুপুত্র রাজ কাপুর অভিনয়ে পা রাখাতে আরো অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য বাবা মেনে নিয়েছিলেন ছেলের এই কাজ। অভিনয়ের প্রশংসাও করেছিলেন।
১৯৪৪ সালে মুক্তি পায় দিলীপ কুমারের প্রথম ছবি জোয়ার ভাটা। প্রথম দিকে দিলীপ কুমারের কয়েকটি ছবি ব্যবসাসফল ছিল না। ১৯৬০ সালে ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসাসফল সিনেমা ‘মুঘল-এ-আজম’ দিলীপ কুমারের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। নায়া দর’, ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘দেবদাস’, ‘রাম অওর শ্যাম’, ‘আন্দাজ’, ‘মধুমতী’ এবং ‘গঙ্গা-যমুনা’র মতো একাধিক সুপারহিট ছবিতে কাজ করেছিলেন। বলা যায়, সে সময় বলিপাড়ায় সেনসেশন ছিলেন এই সুদর্শন তরুণ। ১৯৯৮ সালে শেষবার সিনেমায় অভিনয় করেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..