গৃহকর্ত্রী সামিয়া ইউসুফ সুমির জামিন বাতিল চান নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা গৃহকর্মী ফারজানা আক্তার (১৫) এর বাবা মামলার বাদী বিল্লাল হোসেন ভুইয়া। আজ সোমবার ঢাকা চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন দাখিল করেছেন তিনি। ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তী আবেদনের ওপর আসামির উপস্থিতিতে মামলার ধার্যতারিখ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ঠিক করেছেন।
এ বিষয়ে গৃহকর্মী ফারজানা আক্তারের বাবা বলেন, ‘আসামির লোকজন আমার কাছ থেকে কাগজে সই নিয়েছে। সেই কগজে লিখছে, অভিযোগ সত্য নয়, আমার জামিনে আপত্তি নাই। সেই কাগজ দেখাইয়া না কি, জামিন নিছে। আমি লেখাপড়া জানি না। কি লেখা ছিল জানি না। আমি জামিন বাতিল চাই।’
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ সিদ্দিকী গৃহকর্ত্রী সামিয়া ইউসুফ সুমির ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলার ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার ভিকটিম গৃহকর্মী ফারজানা আক্তার (১৫) গত ১৭ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়,‘বাদীর বড় মেয়ে ফারজানাকে (১৫) ২০১৫ সালে থাকা-খাওয়া মাসিক দুই হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তিতে সামিয়া ইউসুফ সুমি (৩২) এর বাসায় কাজে দেন। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সময় মেয়ে ফোনে জানায়, বিবাদী সুমি তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে, মারধর করে এবং খাবার দেয় না। বাদী মেয়েকে সান্ত্বনা দিয়ে কাজ করতে বলেন।
পরবর্তী সময়ে গত ১৭ জনুয়ারি বিবাদী সুমি ফোনে জানায়, বাদীর মেয়ে ফারজানা খুব অসুস্থ। এরপর ওইদিনই স্ত্রী জোছনা বেগম (৩৫) সহ বিবাদীর বাসায় গিয়ে ফারজানাকে (১৫) অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। লোকদের সহায়তায় মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিছুটা সুস্থ হলে মেয়ে জানায় যে, কাজে যোগদান করার পর থেকেই বিবাদী সুমি বাদীর মেয়েকে বিভিন্ন তুচ্ছ কারণে মারপিট করতো। পেটের দায়ে সকল অত্যাচার নিরবে সহ্য করে আসছিল।
এমতাবস্থায় গত ১৫ জানুয়ারি ঘর গোছানো ও বাসনপত্র ভেঙ্গে ফেলার মিথ্যা অভিযোগে এবং কাজে দেরি হওয়ার তুচ্ছ অজুহাতে বিবাদী সুমি ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি নিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে এবং একপর্যায়ে তাকে লোহার খুন্তি গরম করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেয়। এর ফলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান মারাত্মক পোড়া জখম হয়। বিবাদী সুমির প্রচণ্ড মারপিটের কারণে বাদীর মেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ঘরে ফেলে রেখে বাদীকে সংবাদ দেয়। পরে স্ত্রীসহ বাদী ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে আসার সময় বিবাদী ওই বিষয়ে কোন মামলা মোকদ্দমা করলে বাদীসহ তার মেয়েকে প্রাণে মেরে মেলার হুমকি প্রদান করে। বাদীর মেয়ে বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মুমূর্ষ অবস্থায় ০৪ নং ওয়ার্ডের ৬৪/এ নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি আছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি রাতে ফারজানাকে ওই বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। গত ২০ জানুয়ারি কলাবাগান থানায় মামলা হয়। এরপর আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠান আদালত।
গত ২১ জানুয়ারি র্যাব-২-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাতের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভুক্তভোগী ও তার বাবা বিল্লাল হোসেনের কথা অনুযায়ী, ফারজানা কাজে সামান্যতম ভুল করলেও তাকে মারপিট ও জখম করতেন সামিয়া ইউসুফ। প্রায়ই তাকে মারপিট