দীর্ঘ ৫৫ বছর পর চালু হচ্ছে বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ী রেলপথ। আজ বৃহস্পতিবার ১৭ ডিসেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ রেলপথটি উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ নতুন রেল করিডোর। উদ্বোধন উপলক্ষে এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ী পর্যন্ত রেল লিংকটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুই দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী রেলওয়ে সেবা হতে বঞ্চিত হয়। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমান সরকার আন্ত-আঞ্চলিক যোগাযোগ জোরদারকরণের মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্য ও পর্যটন খাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলপথটি পুনরায় চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।
এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০১৬ দশমিক ৯৪ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ১ আগস্ট শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৭টি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট স্থাপন করা হবে। এরমধ্যে ৪টিতে রেলওয়ে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। বর্তমানে ৫ম ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট হিসেবে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল সংযোগটি সংযোজিত হচ্ছে। প্রকল্পের বিদ্যমান চুক্তির আওতায় মূল কাজগুলো হচ্ছে ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ (মেইন লাইন)। ২ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ (লুপলাইন)। এছাড়া ৭টি ব্রিজ নির্মাণ, ২টি লেভেল ক্রসিং গেট, কালার লাইট সিগন্যালিং ও ১টি টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম প্রবর্তন স্টেশন।
রেলওয়ে আরও জানিয়েছে, চিলাহাটি ও চিলাহাটি বর্ডার রেলপথটি চালু হলে বাংলাদেশের মোংলা পোর্ট এবং উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ, নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে আমদানি ও রফতানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগাযোগ অবকাঠামোর মানোন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম জোরদার হবে। রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন ট্রেন চলাচল সম্ভব হবে। ফলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে বলে আশা করছে রেলওয়ে। পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেলের অবদান বৃদ্ধি পাবে। কন্টেইনার ট্রেন পরিচালনা শুরু করা যাবে। এর ফলে রেলওয়ের আয় বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশি পর্যটকরা দার্জিলিংসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে দ্রুত ও সহজে ভ্রমণ করতে পারবেন।