শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ার গোবিন্দপুর ইউপির ২০২৪ – ২০২৫ অর্থবছরের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা মধুপুরে সড়ক দখল করে চলছে ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর মহোৎসব কাজী মোখলেসুর রহমান এর স্মরণে আলোচনা সভা সখীপুরে এমপি কে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন মধুপুরে হজ্জ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আহাম্মেদুর রহমান বিপ্লব মধুপুর বঙ্গবন্ধু সড়কে গৃহবধূর গহণা ছিনতাই মাগুরায় নিজাম হত্যার প্রকৃত আসামীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন মাগুরায় কম পানি দিয়ে ধান চাষের উপর মাঠ দিবস নওগাঁর আত্রাইয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে আলমগীর নামে এক যুবকের মৃত্যু গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গ্যাস সিলিন্ডারে ৫ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ১ মাদককারবারি  নওগাঁ এ-ই চলতি মৌসুমে ২২ মে থেকে গুটি আম সংগ্রহ শুরু হচ্ছে নওগাঁ জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়ার নিশাদ হাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনোনীত মধুপুরে দিন ব্যাপি দুগ্ধ উৎপাদন প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত সেলাই মেশিন প্রতীক নিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কেয়ার আক্তার মুন্নির গণসংযোগ ও পথসভা গাইবান্ধার পলাশবা‌ড়িতে ভোটের দিন যতই নিকটে আসছে প্রার্থীদের বেড়েছে ব্যস্ততা জয়পুরহাটে কৃষক বৃলু হত্যা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন জয়পুরহাটে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কমিউনিটি ওয়াচ গ্রুপ গঠন নওগাঁ খাসপুকুরে মাছ ধরার অপরাধে উজ্জ্বল নামে এক জন যুবক কে মারধরের অভিযোগ ইউপির চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে

আহত শতাধিক ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জ-গুলী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১
  • ২০৩ বার পঠিত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকাল রোববার ছাত্রদলের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্বঘোষিত সমাবেশ শুরুর আগে ব্যাপক লাঠিচার্জ ও গুলী চালিয়ে কর্মসূচি পন্ড করে দিয়েছে পুলিশ। বিএনপির অভিযোগ, এই ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সহসভাপতি মামুন খানসহ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। ছাত্রদলের এই বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এসেও ছিলেন। ছাত্রদলের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনীতিক সংগঠন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সোয়া ১১টা দিকে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমবেত হতে থাকে। সকাল ১১টায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল জাতীয় প্রেস ক্লাবের চত্বরে এসে পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। পুলিশ সোহেলকে জানিয়ে দেয় অনুমতি ছাড়া কোনো সমাবেশ প্রেস ক্লাবের সামনে করা যাবে না। এ সময়ে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ সিনিয়র ছাত্রদলের নেতারাও ছিলেন। আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে মৌখিক অনুমতি আছে বলে জানানো হয়।
পুলিশের সাথে আলোচনার পরপরই সোহেল জাতীয় প্রেস ক্লাবের মূল গেইট দিয়ে বাইরে এসে ফুটপাতে নেতা-কর্মী নিয়ে সমবেত হলে পুলিশ অ্যাকশনে যায়। শুরু হয় পুলিশের লাঠিচার্জ। এরকম পরিস্থিতিতে পুলিশের লাঠিপেটায় ছাত্রদল কর্মীরা প্রেসক্লাব চত্বরে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। পরে পুলিশের একটি দল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভেতরে প্রবেশ করে লাঠিচার্জ করে এবং গুলী ছুঁড়ে।
এই ঘটনার পরপর দ্বিতীয় দফায় আবারো ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পুলিশী হামলার পরও ‘মুশতাক হত্যার বিচার চাই’, ‘খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমাদের সাথে’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় পুলিশ-ছাত্র দলের নেতা-কর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সাধারণ মানুষ এদিক-ওদিকে ছুটতে শুরু করে। পুলিশের সাথে নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধওয়ার মধ্যেই পুলিশ ৩০ রাউন্ডের ওপর টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ এবং বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে। ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা দফায় দফায় প্রতিবাদ জানায়। পুলিশও বেপরোয়া লাঠিপেটা করতে থাকে। পরে পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের রুখতে রাবার বুলেটও ছুঁড়তে দেখেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন পুলিশ কনস্টেবলও আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে বলে অভিযোগ বিএনপির। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাপারসন মামুনসহ কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হন। এছাড়া জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভেতরে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় প্রেস ক্লাবের ৫/৬ জন কর্মচারিরা আহত হন।
ছাত্রদলের এই বিক্ষোভ সমাবেশ উপলক্ষে সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, জলকামানের গাড়ি, আর্মাড কার, প্রিজন ভ্যান মোতায়েন করা হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় আকরাম খাঁ হলে জিয়া পরিষদের আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, শাহবাগে আপনারা দেখেছেন কিভাবে সাধারণ ছাত্রদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আজকে তার প্রতিবাদে প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ পুলিশ রাষ্ট্রের প্রশাসনের নির্দেশে অন্যায়ভাবে মারপিট করবে। এর প্রতিবাদ করা যাবে না এটা যদি হয়, তাহলে তারা কেনো বলে এদেশ গণতান্ত্রিক দেশ? সাংবাদিকরা দেখেছেন, কিভাবে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিপেটা করেছে এবং রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। আমরা এখনো জানি না, বহু আহত হয়েছে। আমরা  এই সভা থেকে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, নিন্দা জানাচ্ছি। এইভাবে ফ্যাসিবাদ সরকার প্রতিবাদকে দাবিয়ে দিতে চাচ্ছেন এটা কখনোই তারা সফল হতে পারবেন না। সাময়িকভাবে দাবিয়ে রাখা যায় কিন্তু জনগণের প্রতিবাদকে, জনগনের ক্রোধকে সারাজীবন দাবিয়ে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ লাঠিপেটা ও গুলী করেছে। অনেকে নেতাকর্মী রক্তাক্ত হয়েছেন। খন্দকার মোশাররফ বলেন, একটি স্বাধীন দেশে স্বাধীনতার ৫০ বছর যখন আমরা পালন করতে যাব, তখন একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ যদি করতে দেয়া না হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বিএনপির অভিযোগ, পুলিশের লাঠিপেটায় দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল মারাত্মক আহত হয়েছেন। লাঠির আঘাতে তার কোমর জখম হয়েছে।  বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, পুলিশের হামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল মারাত্মক জখম হয়েছেন। তার কোমরে বেশ কয়েটি সেলাই লেগেছে।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের ঘোষিত কর্মসূচি বিক্ষোভ সমাবেশ করতে না দেয়া এবং পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন,  আজকে (গতকাল) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্র দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ লাটিচার্জ, টিয়ার সেল এবং শর্টগান ব্যবহার করে প্রায় শতাধিক ছাত্রদলের নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। এখন অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে এবং এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই হামলা থেকে আবারো প্রমাণিত হলো সরকার মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা দিতে নারাজ। তারা গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে হরণ করে নিয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশিষ্ট লেখক ও উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদের জেলহাজতে মৃতু্যুর প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের নিষ্ঠুর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবারাহিম বীর প্রতীক বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক দেশের পুলিশের আচরণ এমন হতে পারে না। বিরোধী দল ও মতকে দমন করতে সরকার নির্লজ্জভাবে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শান্তিপুর্ণ সমাবেশে এই হামলায়ই প্রমাণ করে সরকার দেশের গণতান্ত্রিক সব অধিকার কেড়ে নিতে চায়। এই সরকারকে ফ্যাসিবাদি সরকার বলেও আখ্যা দেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান। একই সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বিশিষ্ট লেখক মুশতাক আহমেদের হত্যার রহস্য উন্মোচন ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
পুলিশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিতরে ঢুকে  টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান। আগামীতে এধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150