শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কাজী মোখলেসুর রহমান এর স্মরণে আলোচনা সভা সখীপুরে এমপি কে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন মধুপুরে হজ্জ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আহাম্মেদুর রহমান বিপ্লব মধুপুর বঙ্গবন্ধু সড়কে গৃহবধূর গহণা ছিনতাই মাগুরায় নিজাম হত্যার প্রকৃত আসামীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন মাগুরায় কম পানি দিয়ে ধান চাষের উপর মাঠ দিবস নওগাঁর আত্রাইয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে আলমগীর নামে এক যুবকের মৃত্যু গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গ্যাস সিলিন্ডারে ৫ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ১ মাদককারবারি  নওগাঁ এ-ই চলতি মৌসুমে ২২ মে থেকে গুটি আম সংগ্রহ শুরু হচ্ছে নওগাঁ জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়ার নিশাদ হাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনোনীত মধুপুরে দিন ব্যাপি দুগ্ধ উৎপাদন প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত সেলাই মেশিন প্রতীক নিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কেয়ার আক্তার মুন্নির গণসংযোগ ও পথসভা গাইবান্ধার পলাশবা‌ড়িতে ভোটের দিন যতই নিকটে আসছে প্রার্থীদের বেড়েছে ব্যস্ততা জয়পুরহাটে কৃষক বৃলু হত্যা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন জয়পুরহাটে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কমিউনিটি ওয়াচ গ্রুপ গঠন নওগাঁ খাসপুকুরে মাছ ধরার অপরাধে উজ্জ্বল নামে এক জন যুবক কে মারধরের অভিযোগ ইউপির চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে দুপচাঁচিয়ায় পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার-৩ জনগণের সেবক হিসাবে কাজ করতে আনারস মার্কায় ভোট চাইছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব ফজলুল হক

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১
  • ১৮৬ বার পঠিত

নদীভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে যমুনার তীরে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, ইকো-ট্যুরিজম, টাউনশিপ ও শিক্ষা হাব গড়ে তোলারও পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হলে নদী ভাঙ্গন, বন্যা ও ফসলের ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। এতে তীরবর্তী প্রতিটি পরিবারের বছরে সাশ্রয় হবে ১২৫০ থেকে ২০০০ ডলার। সারা দেশে দারিদ্রের হার ২৫ শতাংশে নেমে আসলেও যমুনার তীরের জেলাগুলোতে এটি এখনও ৩৭ শতাংশ। দারিদ্র নিরসনে এ বৈষম্য দূর করতে প্রকল্পটি ভূমিকা রাখবে। যমুনা নদীকে অর্থনৈতিক করিডোর হিসাবে ব্যবহার করতে ব্যয় হবে ১৩.৪ বিলিয়ন ডলার।
জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে খরস্রোতা নদী যমুনার রংপুর থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত ২০৫ কিলোমিটারে নাব্য বাড়িয়ে নৌ যোগাযোগের কেন্দ্রে পরিণত করতে এবং নদী শাসন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এলাকাটিকে অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে গড়ে তুলতে একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। শতবর্ষী ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় ১৩.৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ২০৪৪ সাল নাগাদ দেশের অর্থনীতিতে ৩৬২ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যা দেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০.৭১ লাখ কোটি টাকা। এটি বাংলাদেশের জিডিপির আকারের তুলনায়ও বেশি। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) ‘সাপোর্ট টু ইমপ্লিমেন্টেশন অফ দ্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান’ এর বাস্তবায়ন কমিটির সভায় সম্প্রতি এসব বিষয় উঠে এসেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করে থাকে জিইডি।
যমুনায় অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের চিহ্নিত প্রস্তাবিত বিনিয়োগের মধ্যে ২.৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে নদী খনন ও ড্রেজিংয়ে। নদী শাসনে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৩.৭ বিলিয়ন ডলার। ৫.৯ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে। এর বাইরে আরও ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বিভিন্ন অবকাঠামো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে। সব মিলে ১৩.৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের চাহিদা চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক জানায়, যমুনায় নাব্যতা সংকটের কারণে ৫০০ টনের বেশি ওজনবাহী কোন নৌযান চলতে পারে না। এ নদীর গভীরতা বাড়লে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বার্ষিক পণ্য পরিবহণ ৩৫ লাখ টন থেকে তিন গুণ বেড়ে ১.১৫ কোটি টনে দাঁড়াবে। নেপাল ও ভূটান পর্যন্ত পণ্য পরিবহণ করলে এর পরিমাণ আরও বাড়বে । তা ছাড়া সড়ক ও রেল পথের চাইতে নৌ-পথে পণ্য পরিবহণে ব্যয় কম হয় এবং পরিবেশের ক্ষতি রোধ করা যাবে বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়।
জিইডি জানায়, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে যমুনা নদীর নাব্যতা বাড়ানো গেলে বিপুল পরিমাণ জমি পুনরোদ্ধার হবে। সেচের স্থায়ী ব্যবস্থার মাধ্যমে দুই তীরে খাদ্য উৎপাদনও বাড়বে। পাশাপাশি সড়ক ও রেল পথের বিকল্প হিসেবে নৌ-পথে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। বিশেষ করে ভারতসহ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পণ্য পরিবহন সহজ হবে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যমুনা রিভার ইকোনমিক করিডোর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রণয়ন করছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ বাবদ ১.৩ বিলিয়ন ডলারের পাশাপাশি জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা) থেকেও সহায়তা আশা করছে সরকার।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব ও সার্বিক সহযোগিতা, সুবিধা দেয়া এবং ডেল্টা প্ল্যান এর কার্যক্রম হালনাগাদ করা ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিতের জন্যে জিইডি একটি ডেল্টা উইং স্থাপনের ড্রাফট তৈরি করেছে। অভ্যন্তরীণভাবেই ড্রাফট প্রস্তাবটি দুইবার রিভিউ করা হয়েছে। সম্প্রতি জিইডির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আবার ড্রাফটটি রিভিউ করেছেন এবং কিছু নতুন সুপারিশও করেছেন। জিইডি ডেল্টা প্ল্যান সম্পর্কিত প্রজেক্টসমূহে অর্থায়নের ব্যাপারে ডেল্টা ফান্ডের ড্রাফট চূড়ান্ত করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অর্থায়নের বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিয়ে তৈরি করা একটি অবস্থানপত্রে বিশ্বব্যাংক বলেছে, পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে এলাকাটিকে নদীভিত্তিক অর্থনীতির কেন্দ্রে পরিণত করতে পারলে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানি আয় বাড়বে ৩০ বিলিয়ন ডলার।
এ বিষয়ে জিইডির সদস্য ড. শামসুল আলম জানান, শতবর্ষী পরিকল্পনার আলোকে সারাদেশের নদী ও উপকূল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, নৌ-পথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করা হবে। তিনি জানান, প্রথম অবস্থায় এ প্রকল্পের জন্য যমুনার ২০৫ কিলোমিটার এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। যমুনার এ অংশে নাব্যতা বাড়ানোর পাশাপাশি দুই তীরে পরিকল্পিত উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি জলপথের মাধ্যমে ভারত ছাড়াও নেপাল ও ভূটান পর্যন্ত পণ্য পরিবহণ করা হবে। তিনি জানান, ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়নে নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তা পাওয়া গেছে। এর আওতায় প্রস্তাবিত প্রকল্পে নেদারল্যান্ডস ছাড়াও বিশ্বব্যাংক, জাইকা, এডিবি, এআইআইবি, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ও দ্যা ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন এর মতো বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দাতা দেশ থেকে সহায়তার বিষয়ে আশ্বস্থ করা হয়েছে।
এই পরিকল্পনার অধীনে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৩৮ বিলিয়ন ডলারের ৮০ টি বিনিয়োগ ক্ষেত্র ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে অবকাঠামোগত প্রজেক্ট রয়েছে ৬৫ টি এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও জ্ঞান উন্নয়ন সম্পর্কিত প্রজেক্ট রয়েছে ১৫ টি। আমাদের বর্তমান সম্পদের সহজলভ্যতার তুলনায় এটি তিন থেকে চার গুণ বেশি।
তথ্য দিয়ে ড শামসুল আলম জানান, সরকার গত এক দশকে পানি সম্পদ খাতে মোট জিডিপির ০ দশমিক ৬ থেকে ০ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যয় করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই ব্যয় বেড়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশে এসে দাঁড়াবে। এই ২ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপির মধ্যে ২ শতাংশ ব্যয় হবে নতুন বিনিয়োগে এবং বাকি অংশ কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় ০ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় হবে।
উল্লেখ্য, ডেল্টা পরিকল্পনার আওতায় সরকার ২০৩১ সালের মধ্যে তিন হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার প্রত্যাশা করছে, উপকূলে খাদ্য ও পানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং মোকাবেলা করবে প্রাকৃতিক দুর্যোগও। সরকার এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায়। বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান ২১০০’ শীর্ষক পরিকল্পনা অনুমোদন করে। পরিকল্পনা কমিশনের মতে, তিন স্তরে আগামী ১০০ বছরে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে। আর মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে ২০৫০ ও ২১০০ সালের মধ্যে। এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশকে এর পানিসম্পদ সম্পর্কিত বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে ছয়টি হট স্পটে বিভক্ত করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায়, এসব হট স্পটে ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এই হট স্পটগুলো হচ্ছে : উপকূলীয় অঞ্চল, বরেন্দ্র অঞ্চল ও খরাপীড়িত অঞ্চল, হাওর ও আকস্মিক বন্যাপ্রবণ এলাকা, প্রধান প্রধান নদী ও সংলগ্ন এলাকা, শহুরে এলাকা এবং চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150