স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপনে পাঁচ বিশ্ব নেতা ঢাকা আসবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি মাসের ২৬-২৭ তারিখ ঢাকায় আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইবরাহিম মোহামেদ সলিহ আসবেন ১৭-১৮ মার্চ। নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি ২২-২৩ মার্চ দু’দিন ঢাকা সফর করবেন। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজা পাকসে ১৯-২০ মার্চ ও ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচু ঢাকা সফর করবেন।
নিরাপত্তার স্বার্থে এখনো পাঁচ বিশ্ব নেতার পূর্ণাঙ্গ সফরসূচি ঘোষণা করেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র বাংলাদেশ জার্নালকে জানায়, ঢাকায় মোদির সফর হবে দুদিন এক রাত। তিনি কোথায় অবস্থান করবেন এ নিয়ে জনমনে অনেক প্রশ্ন আছে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নরেন্দ্র মোদি সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করবেন।
কী খাবেন মোদি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সব রকম আয়োজন সম্পন্ন হলেও সূত্র জানায়, সোনারগাঁওয়ের রাঁধুনি ছাড়াও মোদির সফরে থাকবেন তার নিজস্ব শেফ। খাবারের মেনুতে থাকবে ভারতীয় সব খাবার। তবে মোদি চাইলে বাংলাদেশি খাবারের স্বাদও পরখ করে দেখতে পারেন। তবে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানান, সে সুযোগ অনেকটাই কম।
কোথায় যাবেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে অংশ নেয়া ছাড়াও বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এর আগে উনি যাবেন প্রথমে সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী মন্দিরে। এরপর টুঙ্গিপাড়া আসবেন তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানাবেন। এরপর মোদি যাবেন কাশিয়ানীর ওড়নাকান্দীতে মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থানে। সেখান থেকেই ঢাকা পৌঁছে নিজ দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন তিনি।
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, রাজধানীর যেসব ৫ তারকা হোটেলে প্রেসিডেন্সিয়াল সুইট আছে যেখানেই অবস্থান করবেন বিশ্ব নেতারা। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া) মাশফি বিনতে শামস বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ব নেতাদের ভিন্নভাবে সফরসূচি সাজানো হচ্ছে। তবে যেসব বিশ্ব নেতা আসতে পারবেন না তাদের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে ঢাকা।
তবে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজা পাকসে, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচু, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইবরাহিম মোহামেদ সলিহ ও নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি- এ চার দেশের প্রধান রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে রাত্রিযাপন করে মুজিব শতবর্ষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ভারতের শীর্ষ নেতার সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্তত ৬টি চুক্তি চায় দেশের কূটনীতিকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, কমপক্ষে ৬টি সমঝোতা স্মারক চুক্তি (ভারত-বাংলাদেশ) হতে পারে। যার মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কুশিয়ারা নদীতে পানি উন্নয়ন, বাংলাদেশ-ভারত-নেপালের মধ্যে স্থল যান চলাচল, জ্বালানি, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সমুদ্র সম্পদ প্রাধান্য পাবে। তবে তিস্তা চুক্তি যে হচ্ছে না এ কথা আগেই জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।