শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আসন্ন ২য় ধাপে,উপজেলা নির্বাচন-২০২৪ নওগাঁর পোরশায় প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ মধুপুরে বদলি হওয়া তিন শিক্ষককে সদর ক্লাস্টারে ফুলেল শুভেচ্ছা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ২৩-২৪ অর্থবছরের কৃষি প্রণোদনা বীজ ও সার বিতরন দুপচাঁচিয়া নিউ মার্কেট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বিনামূল্যে শরবত বিতরণ বাংলার যাত্রা সম্রাজ্ঞী জোৎস্না বিশ্বাসের শুভ জন্মদিন আজ : সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন আজ : যুব শক্তি সমাজ কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে ঠান্ডা পানির শরবত ও স্যালাইন বিতরণ নওগাঁর পোরশায় ছাওড় ইউপির উম্মুক্ত বাজেট ঘোষণা দুপচাঁচিয়ার চৌমুহানী বাসস্ট্যান্ডে গণশৌচাগার না থাকায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি নওগাঁর পোরশায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুনে কাঠের ‘স’ মিল ভূষ্মিভূত চেয়ারম্যান প্রার্থী জনাব আলহাজ্ব মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর গণসংযোগ নওগাঁ সরকারি খাদ্যগুদামের চাল ছয় নয় করার অপরাধে দুই কর্মকর্তাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা ১লা মে, আজ বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষেরঅধিকার আদায়ের দিন নওগাঁ প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে মাঠে ধান কাটতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে কৃষকের মৃত্যু নওগাঁ যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিমান চন্দ্র রায় পথচারীদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেন নওগাঁ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত নওগাঁর ধামইরহাটে চেয়ারম্যান প্রার্থী আজাহার আলীর গণজোয়ার বিজয়ের পথে জনপ্রিয় সোহেল রানা ও অনজুয়ারা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বিশ্ব আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত  দুপচাঁচিয়ায় গৃহ নির্মাণ শ্রমিক পরিষদের মহান মে দিবস উদযাপন নলডাঙ্গা দোকান কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ত্বিন ফল বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হচ্ছে গাজীপুরে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৭৬ বার পঠিত

পবিত্র কোরআনে আত্ ত্বিন সূরায় বর্ণিত মরুভূমির মিষ্টি ফল ‘ত্বিন’ এখন চাষ হচ্ছে গাজীপুরে। শ্রীপুর উপজেলার বারতোপা গ্রামে মডার্ন এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নিউট্রিশন নামের ফার্মে এ ফলের চাষ হচ্ছে। এটি আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় বাগান বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ত্বিন ফল ও চারা বিক্রি হচ্ছে। দিন দিন চাহিদা বাড়ার কারণে ফার্ম কর্তৃপক্ষ এর সম্প্রসারণ ও ফল গাছের চারা উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছে।

প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল মার্কেটিং প্রধান মুছা ইব্রাহীম রাইজিংবিডিকে জানান, বারতোপা এলাকায় সাত বিঘা জমিতে ত্বিন ফলের চাষ শুরু হয়। এখন এখানে ৬টি ফার্মে ২৪ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। মাদার প্ল্যান্ট (মূল গাছ) থেকে তৈরি করা কলমের তিন মাস বয়স থেকে ফল দেওয়া শুরু করে। তবে ছয় মাস বয়সে চারা পরিপক্ক হয়। সাধারণত এ ফল ধরার এক সপ্তাহের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়। প্রতিটি গাছে ন্যূনতম ৭০ থেকে ৮০টি ফল ধরে। সারাবছরই গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়।

প্রতিটি গাছ ২৩ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এটি ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতায় রাখা হয়। খোলা মাঠ ছাড়াও টবের মধ্যে ছাদবাগানে ত্বিন চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। ছাদবাগানের চাষিদের মধ্যেও ব্যাপক চাহিদা দেখা গেছে। ত্বিন ফল ও গাছের ব্যাপক চাহিদার কারণে ৭০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ফার্ম কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও আরও কিছু প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এখান থেকে কলম তৈরি করে নিজেদের প্ল্যান্ট ছাড়াও চাষিদের মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ফল বিক্রেতাসহ ভোজন রসিকরা এখান থেকে ত্বিন কিনে নিয়ে যান। প্রতিদিন ২৪ থেকে ২৫ কেজি ত্বিন বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজির মূল্য এক হাজার টাকা। ফলের পাশাপাশি সৌখিন চাষিরা চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ছয়মাস বয়সী চারার পাইকারি মূল্য ২৫০ টাকা ও খুচরা মূল্য ৭২০ টাকা। এখান থেকে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার চারা বিক্রি হচ্ছে। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় টবসহ ফল ধরা চারা বিক্রি হচ্ছে। ত্বিন গাছে রোগ-জীবাণু সংক্রমণের মাত্রা একদমই কম। তবে ছত্রাকের একটা সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে কিটনাশক স্প্রে করে দিলে তাতে কাজ হয়।

সৌদি আরব ও বাংলাদেশে এই ফলকে ত্বিন নামে ডাকলেও অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে ভারত, তুরস্ক, মিসর, জর্ডান ও যুক্তরাষ্ট্রে এটি আঞ্জির নামে পরিচিত। ডুমুর জাতীয় এ ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম Ficus carica ও পরিবারের নাম ‘moraceae’। এ ফলটি পুরোপুরি পাকলে রসে ঠাসা ও মিষ্টি হয়ে ওঠে।

ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা মো. আজম তালুকদার বলেন, ‘২০১৪/২০১৫ সালে তিনি থাইল্যান্ড থেকে জীবন্ত গাছ এবং তুরস্ক থেকে ত্বিন গাছের কাটিং নিয়ে আসি। পরে নিজস্ব প্রপাগেশন সেন্টারে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আদ্রতা বজায় রেখে বারতোপা এলাকায় ২০১৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন ও আবাদ শুরু করি। প্রতিটি গাছে প্রথম বছরে এক কেজি, দ্বিতীয় বছরে ৭/১১ কেজি, তৃতীয় বছরে ২৫/৪০ কেজি পর্যন্ত ফল ধরে। এভাবে একটানা ৩৪ বছর পর্যন্ত ফল দিতে থাকে। গাছটির আয়ু হলো প্রায় ১০০ বছর। তিন মাসের মধ্যেই শতভাগ ফলন আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এই ফল সবার দৃষ্টি কেড়েছে। প্রতিটি পাতার গোড়ায় গোড়ায় ফল জন্মে থাকে। ত্বিন একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ সুস্বাদু ফল, যা মরু অঞ্চলে স্বাচ্ছন্দ্যে জন্মায়। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে বেশ এখন মানিয়ে নিয়েছে ত্বিন। কোনো রাসায়নিক সার ছাড়াই, মাটিতে জৈব ও কম্পোস্ট সার মিশিয়ে মাঠে, ছাদের টবে লাগিয়ে ফল উৎপাদনে সাফল্য পাওয়া গেছে। তাই ছাঁদ বাগানীদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। দেশ ছাড়াও বিদেশে এ ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত ও জাপান থেকে আমাদের কাছে ত্বিন ফলের চাহিদার কথা জানিয়েছে অনেকে। ত্বিন চরম জলবায়ু অর্থাৎ শুষ্ক ও শীত প্রধান দেশে চাষ হলেও আমরা প্রমাণ করেছি নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতেও ৩৬৫ দিনে ফল উৎপাদন সম্ভব।’

তিনি জানান, তাদের সংগ্রহে ত্বিন ফলের ১০৩টি জাত রয়েছে। তবে ছয়টি জাত তারা এখানে চাষাবাদ করছেন। জাতগুলোর ফল নীল, মেরুন, লাল, হলুদসহ বিভিন্ন বর্ণের হয়ে থাকে। এখানকার গাছে প্রতিটি ত্বিন ফল ওজনে ৭০ থেকে ১১০গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

গাজীপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা ছাদবাগান চাষি বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম ইব্রাহীম বাবুল (৬৭) বলেন, ‘ফলটির অনেক গুণের কথা শুনে শখ করে আমি ছাদবাগানে অন্য গাছের সঙ্গে সৌদি আরবের ত্বিন ফল গাছের চারা টবে লাগিয়েছি। দুইমাস পরেই ফল আসা শুরু হয়। পাকা ফল খেতে বেশ সুস্বাদু ও মিস্টি। এ গাছে তেমন রোগবালাই নেই। ফলনও ভালো।’

গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাহবুব আলম  বলেন, ‘আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচাইতে বড় শ্রীপুরের ত্বিন ফলের প্রজেক্টটি। বাণিজ্যিকভাবে এত বড় পরিসরে ত্বিন চাষ দেশের কোথাও করা হয়নি। আমরা এই প্রকল্পটি পরিদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। রোগবালাই নাই বললেই চলে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ত্বিন ফলের চাষ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও বিদেশ থেকে ত্বিনের আমদানি নির্ভরতা কমে আসার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।’

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধে এ ফলটি খুবই উপকারী। এছাড়া নানা রোগ নিরাময়ে বিশেষ করে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ত্বিন। এটি চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য ও হাঁপানি রোগ নিরাময়েও সহায়তা করে। মানসিক ক্লান্তি দূর করে। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামসহ নানা ভেষজ গুণ।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150