ঢাকা ০৯:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে তেল স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা ঢাকায় জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলা, বেশ কয়েকজন আহত নওগাঁ বগুড়া-ঢাকা আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ দুপচাঁচিয়ার কইলে ১৬ প্রহর ব্যাপী রাধা গোবিন্দের পদাবলী লীলা কীর্তন শুরু রংপুরের মিঠাপুকুরে বোরকা পরে পালানোর সময় ‘ধর্ষক’কে ধরে গণপিটুনি জাপানি নায়িকা পর্নোগ্রাফি ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব দুপচাঁচিয়া উপজেলা কমিটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

একজন আদর্শ মায়ের গল্প :-

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৫৭:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৫ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

-দেবাঞ্জন সোম

” তুমি রবে নীরবে,,,,,হৃদয়ে মম ” – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের বাণীগুলি সত্যিকার অর্থে আজ আমি অনুভব করছি। আমার জীবনের অমূল্য মানুষ, যিনি আমার মাতৃতুল্য পিসিমা বেগম মুহিবুন নাহার গত শুক্রবার ভোরে আমেরিকার ফ্লোরিডার ওরলান্ডোতে বার্ধক্যজনিত কারণে চলে যান না ফেরার দেশে।
পিসিমা বেগম মুহিবুন নাহার মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাসিমপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহন করেন। তিনি দুই পুত্র ও চার কন্যা সন্তানের জননী। ১৯৬৭ সাল হতে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত আমরা দুই পরিবার সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে পাশাপাশি বসবাস করতাম। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বড় কোনো ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন অনেক জ্ঞানী-গুনী এবং বিচক্ষণ একজন মহিলা। নিজ সন্তানের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকের লেখাপড়া ও ভরণ-পোষনের দায়িত্ব নিয়ে মানুষের মত মানুষ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন । তারা আজ দেশে-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে স্বীয় দায়িত্ব পালন করছেন। পিসিমার ছেলে-মেয়েরা সবাই আমেরিকাতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাঁর ছোট ছেলে Jewel Sadat একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক এবং মানব কল্যাণমূলক কাজের সহিত জড়িত।
পিসিমা ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিনী। একজন আদর্শ মা’র সব গুনাবলী তাঁর মধ্যে বিরাজমান ছিল। সূচীকর্মে ছিলেন খুবই পারদর্শী। আমরা উনার কাছ থেকে পেয়েছিলাম অনেক সহযোগিতা। এ ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। পূজা-ইদের আনন্দ আমরা ভাগাভাগি করে নিতাম একসাথে। ছিলনা কোনো হিংসা, ছিলনা কোনো সাম্প্রদায়িকতা।
মৃত্যু একটি বাস্তবতা, যা কখনো এড়ানো সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতেই মাতৃতুল্য পিসিমা চলে গেলেন ইহলোকের মায়া ছেড়ে পরলোকে। তাঁর হাসিমাখা মুখ আমাকে বারবার কাঁদাচ্ছে। তাঁর স্নেহ সুলভ ব্যবহারের কথা মনে পড়ছে। যে আলোটি নিভে গেল, তা আমার হৃদয়ে চিরকাল জ্বলবে।
পরিশেষে বলবো, যদিও তাঁর শারীরিক অস্তিত্ব আমাদের মাঝে নেই, তাঁর আদর্শ ও অনুপ্রেরণা আমার পথচলায় সর্বদা আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।
আমি তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি।

দেবাঞ্জন সোম :সিলেট জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

একজন আদর্শ মায়ের গল্প :-

আপডেট সময় : ০১:৫৭:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

-দেবাঞ্জন সোম

” তুমি রবে নীরবে,,,,,হৃদয়ে মম ” – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের বাণীগুলি সত্যিকার অর্থে আজ আমি অনুভব করছি। আমার জীবনের অমূল্য মানুষ, যিনি আমার মাতৃতুল্য পিসিমা বেগম মুহিবুন নাহার গত শুক্রবার ভোরে আমেরিকার ফ্লোরিডার ওরলান্ডোতে বার্ধক্যজনিত কারণে চলে যান না ফেরার দেশে।
পিসিমা বেগম মুহিবুন নাহার মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাসিমপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহন করেন। তিনি দুই পুত্র ও চার কন্যা সন্তানের জননী। ১৯৬৭ সাল হতে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত আমরা দুই পরিবার সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে পাশাপাশি বসবাস করতাম। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বড় কোনো ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন অনেক জ্ঞানী-গুনী এবং বিচক্ষণ একজন মহিলা। নিজ সন্তানের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকের লেখাপড়া ও ভরণ-পোষনের দায়িত্ব নিয়ে মানুষের মত মানুষ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন । তারা আজ দেশে-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে স্বীয় দায়িত্ব পালন করছেন। পিসিমার ছেলে-মেয়েরা সবাই আমেরিকাতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাঁর ছোট ছেলে Jewel Sadat একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক এবং মানব কল্যাণমূলক কাজের সহিত জড়িত।
পিসিমা ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিনী। একজন আদর্শ মা’র সব গুনাবলী তাঁর মধ্যে বিরাজমান ছিল। সূচীকর্মে ছিলেন খুবই পারদর্শী। আমরা উনার কাছ থেকে পেয়েছিলাম অনেক সহযোগিতা। এ ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। পূজা-ইদের আনন্দ আমরা ভাগাভাগি করে নিতাম একসাথে। ছিলনা কোনো হিংসা, ছিলনা কোনো সাম্প্রদায়িকতা।
মৃত্যু একটি বাস্তবতা, যা কখনো এড়ানো সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতেই মাতৃতুল্য পিসিমা চলে গেলেন ইহলোকের মায়া ছেড়ে পরলোকে। তাঁর হাসিমাখা মুখ আমাকে বারবার কাঁদাচ্ছে। তাঁর স্নেহ সুলভ ব্যবহারের কথা মনে পড়ছে। যে আলোটি নিভে গেল, তা আমার হৃদয়ে চিরকাল জ্বলবে।
পরিশেষে বলবো, যদিও তাঁর শারীরিক অস্তিত্ব আমাদের মাঝে নেই, তাঁর আদর্শ ও অনুপ্রেরণা আমার পথচলায় সর্বদা আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।
আমি তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি।

দেবাঞ্জন সোম :সিলেট জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা।