ঢাকা ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
খুলনা সিটি মেয়র ও বাগেরহাট ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিদেশযাত্রার নিষেধাজ্ঞা ক্ষেতলালে এ্যাকশান ইন বাংলাদেশ এর উদ্দ্যোগে বিনামূল্যে বকনা বিতরণ ফকিরহাটে গলায় ফাঁস দিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রকে হত্যা, দুই শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার গফরগাঁওয়ে শিশুর মুখে বেলুন আটকে শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু রাজধানীর মাটিকাটা এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান: অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ১০ সন্ত্রাসী গ্রেফতার ফকিরহাটে ব্যাবসায়ীকে কুপিয়ে জখম, টাকা লুটের অভিযোগ খুলনার হোটেলে যৌথবাহিনীর অভিযানে নৌবাহিনীর ভর্তি বাণিজ্যের বড় চক্র গ্রেফতার ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত শহরকে যানজট মুক্ত করার লক্ষ্যে সচেতনতা মূলক মতবিনিময় সভা দুপচাঁচিয়ার তালোড়ায় আওয়ামীলীগ নেতা আটক বাগেরহাটের মংলায় ভিটিআরটি ও বাঘ বন্ধু দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ

নওগাঁর মহাদেবপুরের সফাপুর ইউনিয়ানের গোবিন্দপুর গ্রামে শিশু ধর্ষণের সালিসে দফারফা,দুই লাখ টাকায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:২৭:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃ

নওগাঁর মহাদেবপুরে আবারো ছয় বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী চাচার বিরুদ্ধে।

ঘটনার তিন দিনেও অসুস্থ্য শিশুটির চিকিৎসা করাতে দেননি একজন মাতব্বর।
এমনকি থানা পুলিশের আশ্রয় নিতেও নিষেধ করেন তিনি। শেষে ওই মাতব্বর দুই লাখ টাকার চুক্তিতে বিষয়টি আপস করে দেন।
দেশের আলোচিত শিশু ধর্ষণের রেশ মহাদেবপুরের আনাচে কানাচেও ছড়িয়ে পড়ছে, এসবের উপযুক্ত বিচার না হলে ঘটনা আরো বেড়ে যাবে এই ভয়ে স্থানীয়রা আপসের বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না।
তারা অবিলম্বে শিশু ধর্ষণকারি ও শালিস অযোগ্য বিষয় আপস করায় কথিত মাতব্বরের শাস্তি দাবি করেন।

সরেজমিনে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। নির্যাতিত শিশুর পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন দিন আগে চুরি-মালা দেয়ার প্রলোভন দিয়ে

প্রতিবন্ধী দম্পতির শিশুটিকে প্রতিবেসী চাচা ওই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে হারুন অর রশিদ (৫০) তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য শিশুটিকে ভয় দেখানো হয়। পরে শিশুটির গোপনাঙ্গে প্রচন্ড যন্ত্রণা হতে থাকলে সে বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা ওই ওয়ার্ডের মেম্বার আমজাদ হোসেনের কাছে বিচার চাইলে আমজাদ হোসেন উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে

থানা পুলিশকে জানাতে নিষেধ করেন। এমনকি উপজেলা সদরে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসা করাতে চাইলেও মেম্বার নিষেধ করেন। শনিবার (২২ মার্চ) রাতে এব্যাপারে একটি গোপন বৈঠকে আমজাদ মেম্বার ধর্ষক হারুন অর রশিদের দুই লাখ টাকা জরমানা করেন। জরিমানার অর্ধেক টাকা শিশুটির পরিবারকে দেয়া হয়।
টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তাদের পুরো পরিবারকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয় ওই মেম্বার।

রোববার বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে অভিযুক্ত হারুন অর রশিদকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী জানান, পারিবারিক ঝামেলা হয়েছিল। মিমাংসা হয়েছে। হারুনের ভাতিজা আরিফুল ইসলাম জানান, তার চাচা তাকে জানিয়েছেন যে, ঘটনা এতখানি না। ছোট বাচ্চা তো, তাকে ধর্ষণ করলে বাঁচতো না। খেলার ছলে তাকে তিনি এটা সেটা দিয়েছেন। কিন্তু বাচ্চাটি অন্যভাবে বলে দিয়েছে।

কথিত মাতব্বর সফাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন বিষয়টি মিমাংসা করার কথা অস্বীকার করেন। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন রেজা জানান, এবিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ উপজেলার এনায়েতপুরে এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে থানা পুলিশ ১০ মার্চ আমিনুল হোসেন (৫০) নামে একজনকে আটক করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নওগাঁর মহাদেবপুরের সফাপুর ইউনিয়ানের গোবিন্দপুর গ্রামে শিশু ধর্ষণের সালিসে দফারফা,দুই লাখ টাকায়

আপডেট সময় : ০৩:২৭:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃ

নওগাঁর মহাদেবপুরে আবারো ছয় বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী চাচার বিরুদ্ধে।

ঘটনার তিন দিনেও অসুস্থ্য শিশুটির চিকিৎসা করাতে দেননি একজন মাতব্বর।
এমনকি থানা পুলিশের আশ্রয় নিতেও নিষেধ করেন তিনি। শেষে ওই মাতব্বর দুই লাখ টাকার চুক্তিতে বিষয়টি আপস করে দেন।
দেশের আলোচিত শিশু ধর্ষণের রেশ মহাদেবপুরের আনাচে কানাচেও ছড়িয়ে পড়ছে, এসবের উপযুক্ত বিচার না হলে ঘটনা আরো বেড়ে যাবে এই ভয়ে স্থানীয়রা আপসের বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না।
তারা অবিলম্বে শিশু ধর্ষণকারি ও শালিস অযোগ্য বিষয় আপস করায় কথিত মাতব্বরের শাস্তি দাবি করেন।

সরেজমিনে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। নির্যাতিত শিশুর পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন দিন আগে চুরি-মালা দেয়ার প্রলোভন দিয়ে

প্রতিবন্ধী দম্পতির শিশুটিকে প্রতিবেসী চাচা ওই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে হারুন অর রশিদ (৫০) তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য শিশুটিকে ভয় দেখানো হয়। পরে শিশুটির গোপনাঙ্গে প্রচন্ড যন্ত্রণা হতে থাকলে সে বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা ওই ওয়ার্ডের মেম্বার আমজাদ হোসেনের কাছে বিচার চাইলে আমজাদ হোসেন উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে

থানা পুলিশকে জানাতে নিষেধ করেন। এমনকি উপজেলা সদরে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসা করাতে চাইলেও মেম্বার নিষেধ করেন। শনিবার (২২ মার্চ) রাতে এব্যাপারে একটি গোপন বৈঠকে আমজাদ মেম্বার ধর্ষক হারুন অর রশিদের দুই লাখ টাকা জরমানা করেন। জরিমানার অর্ধেক টাকা শিশুটির পরিবারকে দেয়া হয়।
টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তাদের পুরো পরিবারকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয় ওই মেম্বার।

রোববার বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে অভিযুক্ত হারুন অর রশিদকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী জানান, পারিবারিক ঝামেলা হয়েছিল। মিমাংসা হয়েছে। হারুনের ভাতিজা আরিফুল ইসলাম জানান, তার চাচা তাকে জানিয়েছেন যে, ঘটনা এতখানি না। ছোট বাচ্চা তো, তাকে ধর্ষণ করলে বাঁচতো না। খেলার ছলে তাকে তিনি এটা সেটা দিয়েছেন। কিন্তু বাচ্চাটি অন্যভাবে বলে দিয়েছে।

কথিত মাতব্বর সফাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন বিষয়টি মিমাংসা করার কথা অস্বীকার করেন। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন রেজা জানান, এবিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ উপজেলার এনায়েতপুরে এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে থানা পুলিশ ১০ মার্চ আমিনুল হোসেন (৫০) নামে একজনকে আটক করে।