নারীরা বিয়ের কাজী হতে পারবেন না—এ মর্মে হাইকোর্টের যে রায় প্রকাশিত হয়েছে, তাতে সংক্ষুব্ধ হয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। নারীপক্ষও এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
বিবৃতিতে বিশিষ্টজনরা বলেন, “সম্প্রতি বাংলাদেশের হাইকোর্ট ‘নারী বিয়ের কাজী হতে পারবে না’—এই মর্মে যে রায় দিয়েছেন তা আমাদের সংক্ষুব্ধ করেছে। আমরা এই রায়ে মর্মাহত এবং সংক্ষুব্ধ।”
বিবৃতিতে বলা হয়, নিকাহ বা বিয়ে মসজিদেই হতে হবে ইসলাম ধর্মে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। বেশির ভাগ বিয়ে বাসায়, বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলে ও কাজী অফিসে সম্পন্ন হয়। মসজিদে নির্দিষ্ট সময়ে নারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকায় এ রায় কার্যত নারী অধিকারকে সংকুচিত করেছে।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, অনুপম সেন, শামসুজ্জামান খান, ফেরদৌসী মজুমদার, সারওয়ার আলী, আবদুস সেলিম, সেলিনা হোসেন, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, মুনতাসীর মামুন, শফি আহমেদ, শাহরিয়ার কবীর, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সারা যাকের, লাকী ইনাম, গোলাম কুদ্দুছ, শিমূল ইউসুফ, মুহাম্মদ সামাদ, হাসান আরিফ ও আহকামউল্লাহ।
অন্যদিকে নারীপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নারীরা বিয়ের কাজী হতে পারবে না মর্মে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে নারীপক্ষ বিস্মিত, হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ১৫০ বছর আগে নারীর ভোটাধিকার নিয়ে যুক্তরাজ্যে এমন অর্বাচীন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
আধুনিকতা, উন্নয়ন ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের অনেকটা পথ পেরিয়ে এসে আজ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া এই ধরনের পশ্চাত্পদ রায়ে এটাই প্রতীয়মান হয় যে আমাদের দেশ প্রগতির দিকে নয় বরং রক্ষণশীলতার পথেই হাঁটছে।
এই রায় পেশা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীর সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন।’