নিউদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টে মৃত্যুর ভিডিও মুছে দিন, নির্দেশ রেলের

- আপডেট সময় : ০১:০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে
দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: গলদ ধামাচাপা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা? শনিবার রাতে নিউদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনার প্রেক্ষিতে এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠল রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে। কারণ ওই ঘটনার সাতদিনের মাথায় সামনে এসেছে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাই-প্রোফাইল স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি। জানা যাচ্ছে, তার দু’দিনের মাথায় অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা ‘এক্স’কে একটি নির্দেশ পাঠিয়েছে রেলমন্ত্রক। সেখানে রেল সাফ জানিয়েছে, নিউদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ভিডিও মুছে দিন। যদিও শুক্রবার রাত পর্যন্ত বিষয়টি স্বীকার করেনি রেলমন্ত্রক। আবার অস্বীকারও করা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাকে পাঠানো রেলের এহেন নির্দেশই এই মুহূর্তে অন্যতম প্রধান চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি বিতর্ক তৈরি হয়েছে আরও একটি বিষয় নিয়ে। কারণ, পদপিষ্টের ঘটনার সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তার রিপোর্ট পেশ হয়নি। সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাকে রেলের এহেন নির্দেশ এবং ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট দাখিলে চরম গড়িমসি— এই দু’য়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞ মহলের অনুমান, কার গাফিলতিতে বিপর্যয়, সেই উত্তরই সম্ভবত এড়ানোর চেষ্টা করছে রেল।
সরকারি সূত্রের খবর, ‘এক্স’কে রেল নির্দেশ দিয়েছে, শনিবার রাতের ঘটনা সংক্রান্ত মোট ২৮৫টি ‘লিঙ্ক’ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে মুছে দিতে হবে। এক্ষেত্রে ‘নৈতিক দায়িত্ব’ উল্লেখ করে রেল জানিয়েছে, এসব অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ক্রমাগত এইসব ভিডিও দেখতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে রেল চলাচলের উপর। কিন্তু কেন এত তাড়াহুড়ো? বিশেষজ্ঞ মহল প্রশ্ন তুলছে, এধরনের একের পর এক ভিডিওতে কি আরও বড় কোনও সত্যি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে?
শনিবার রাতের ঘটনার পর যেভাবে দীর্ঘক্ষণ রেলের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে সরকারিভাবে অস্বীকার করা হয়েছিল এবং ‘গুজব’ বলে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছিল, সেই প্রেক্ষিত এই ভিডিও মুছে ফেলা সংক্রান্ত নির্দেশ নতুন মাত্রা যোগ করছে। একইসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আজব দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে রেলের অন্দরে। রেল বোর্ড বলছে, রিপোর্ট জমা পড়বে নর্দার্ন রেলের কাছে। তবে এর কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। আর নর্দার্ন রেলের যুক্তি, রিপোর্ট নিয়ে সংশ্লিষ্ট জোনের কোনও ধারণাই নেই। তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল বোর্ড। তাই সবিস্তার জানাবে তারাই। কাউকে আড়াল করতেই কি এমন বেনজির টালবাহানা? গোটা বিষয়টিতে রেলকে তুলোধোনা করে তৃণমূল এমপি ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, যাত্রী সুরক্ষা দিতে এরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দশজনের মধ্যে ন’জন নন-সাবার্বান রেল যাত্রীই সেকেন্ড ক্লাস অথবা স্লিপার শ্রেণিতে যাতায়াত করেন। তাঁদের নিয়ে রেলের কোনও মাথাব্যথা নেই। কুম্ভ হোক কিংবা নিউদিল্লি স্টেশন— বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়া হচ্ছে।