বগুড়া পুলিশ লাইনে বন্দিশালা, গোপনে টর্চার করা হতো বিরোধী মতাবলম্বীদের

- আপডেট সময় : ০৫:০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫ ৪৪ বার পড়া হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টারঃ
পতিত শেখ হাসিনা সরকারের সময় র্যাব-১২ বগুড়া ও জেলা পুলিশ সদস্যরা সরকারের মন জয় করতে বিরোধী দল ও সরকারের বিপক্ষে কথা বলা সুধীজনদেরকে গ্রেপ্তারের নামে গুম করতেন। সেসকল গ্রেপ্তারকৃতদেরকে নিয়ে টর্চার করা হতো বগুড়া পুলিশ লাইন্স এর ভিতরের একটি দোতলা ভবনে। যার বর্তমান নাম ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার। এর নিচতলায় গোপন বন্দিশালায় বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ লাইনে গোপন বন্দিশালা পাওয়ার তথ্য পেয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। এ বন্দিশালায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হতো। এতথ্য গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান ঢাকার গুলশানে কমিশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান। সংবাদ সম্মেলনে নূর খান জানিয়েছেন, বগুড়া পুলিশ লাইনের ভেতরে কারাগারের মতো গোপন বন্দিশালা তৈরি করে রাখা হয়েছিল। যেটি একেবারেই এবসার্ট একটা ব্যাপার। সেটি আমরা বগুড়ায় পেয়েছি।
জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে বন্দিশালায় গোপনে রাখা হতো। গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর আয়নাঘর থেকে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে। তাদের বয়ানে উঠে এসেছে আয়নাঘর ও বন্দিশালার ভয়াবহতার খবর। বগুড়া পুলিশ লাইন্সের ঠিক বিপরীতে ভিটিটিআই এর একটি ভবনে র্যাব-১২ বগুড়া এর কার্যালয়। সেখানে ক্লাশরুম ও আবাসিক ভবন থাকায় গ্রেপ্তারকৃত বন্দিদেরকে উক্ত বন্দিশালায় নিয়ে আসা হতো।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৫টায় বাসস এর এই প্রতিবেদক বগুড়া পুলিশ লাইন্সে গিয়ে বন্দিশালার সত্যতা পান। এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পুলিশ সদস্য জানান, এরকম খবর আমরা শুনেছি। পুলিশ লাইন্সের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে দোতলা ভবন অবস্থিত। যেখানে বিভিন্ন জনকে ধরে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন চালানো হতো। বর্তমান ভবনটি কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার এর কার্যালয় ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে বিগত সরকারের আমলে ১২ থেকে ১৫ বছর ধরে এই বন্দিশালায় নির্যাতন চালানো হয়েছে বিরোধী ও সরকারের বিপক্ষে থাকা নেতাকর্মী ও সুধীজনদেরকে।