ঢাকা ০৯:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে তেল স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা ঢাকায় জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলা, বেশ কয়েকজন আহত নওগাঁ বগুড়া-ঢাকা আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ দুপচাঁচিয়ার কইলে ১৬ প্রহর ব্যাপী রাধা গোবিন্দের পদাবলী লীলা কীর্তন শুরু রংপুরের মিঠাপুকুরে বোরকা পরে পালানোর সময় ‘ধর্ষক’কে ধরে গণপিটুনি জাপানি নায়িকা পর্নোগ্রাফি ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব দুপচাঁচিয়া উপজেলা কমিটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

ভবঘুরে সচিব স্বামীর লঘুদণ্ড, বহাল তবিয়তে অধ্যাপক স্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৫৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আনুকূল্যে ধরাকে সরা বানিয়েছিলেনা তারা। মেতে উঠেছিলেন বেপরোয়া স্বেচ্ছাচারিতায়। মুক্তিযোদ্ধা ও অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ, নিয়ম বহির্ভূত সত্যায়ন, চাকরি ও পদায়ন এবং পদোন্নতি ইত্যাদি বাগাতে হয়ে উঠেছিলেন রাজযোটক। একে অপরের ‘চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা’। তাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড হিসেবে’ সদ্য সাময়িক বরখাস্ত সচিব ফেরদৌস জামান। অপরজন তার স্ত্রী আসমা বিনতে ইকবাল বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক পদে।

অনুসন্ধনে জানা গেছে, আসমা ছিলেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রভাষক। আওয়ামী লীগের প্রথম জমানায় (১৯৯৬-২০০১) ওই চাকরি বাগান তিনি। ওই সময়েই তার ভবঘুরে পতি ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দেখিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষার দেখভাল করার প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে চাকরি বাগান। আমিনুল হক সিদ্দিকী এন্ড কোং (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য নম্বর ১৪৮) নামে কথিত এক প্রতিষ্ঠানে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের পহেলা নভেম্বর থেকে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ এপ্রিল অব্দি সিইও পদে চাকরি করেছেন মর্মে অভিজ্ঞতার সনদ জমা দিয়েছেন ফেরদৌস। বাস্তবে ওই কোম্পানির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তারচেয়েও বড় অঘটন হলো- ওই ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদটা সত্যায়িত করেন তারই পত্নী আসমা বিনতে ইকবাল। দোসরা মে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে। তার সিলমোহরে পরিচয় লেখা আছে, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক। কর্মস্থল পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ। ওই সত্যায়ন তারিখের তিন সপ্তাহের মাথায় ২৪ মে ইউজিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এটিএম জহুরুল হকের আনুকূল্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে সহকারী সচিব (৬ষ্ঠ) পদে যোগদান করেন ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী ফেরদৌস। তারপর ঘুষ-দুর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কিন্তু ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটলে তারাও বিপাকে পড়েন। জোট আমলে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি ফেরদৌস-আসমা দম্পতি। পরে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় বসলে ফের শুরু হয় আসমা বিনতে ইকবাল আর ফেরদৌস জামান দম্পাতির দাপুটে উত্থান। দ্রুতই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক বনে যান স্ত্রী। আর ধাপে ধাপে জালিয়াতি করে পদোন্নতি বাগিয়ে ফেরদৌস হন ইউজিসির সচিব।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের লজ্জাজনক পতনের পর তদন্ত কমিটি খুঁজে পায় ফেরদৌস জামানের অবৈধ নিয়োগের তথ্য। কিন্তু তদন্তের বাইরে থেকে যায় তার স্ত্রীর জালিয়াতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি বাগানোর তথ্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভবঘুরে সচিব স্বামীর লঘুদণ্ড, বহাল তবিয়তে অধ্যাপক স্ত্রী

আপডেট সময় : ১০:৫৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আনুকূল্যে ধরাকে সরা বানিয়েছিলেনা তারা। মেতে উঠেছিলেন বেপরোয়া স্বেচ্ছাচারিতায়। মুক্তিযোদ্ধা ও অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ, নিয়ম বহির্ভূত সত্যায়ন, চাকরি ও পদায়ন এবং পদোন্নতি ইত্যাদি বাগাতে হয়ে উঠেছিলেন রাজযোটক। একে অপরের ‘চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা’। তাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড হিসেবে’ সদ্য সাময়িক বরখাস্ত সচিব ফেরদৌস জামান। অপরজন তার স্ত্রী আসমা বিনতে ইকবাল বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক পদে।

অনুসন্ধনে জানা গেছে, আসমা ছিলেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রভাষক। আওয়ামী লীগের প্রথম জমানায় (১৯৯৬-২০০১) ওই চাকরি বাগান তিনি। ওই সময়েই তার ভবঘুরে পতি ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দেখিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষার দেখভাল করার প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে চাকরি বাগান। আমিনুল হক সিদ্দিকী এন্ড কোং (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য নম্বর ১৪৮) নামে কথিত এক প্রতিষ্ঠানে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের পহেলা নভেম্বর থেকে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ এপ্রিল অব্দি সিইও পদে চাকরি করেছেন মর্মে অভিজ্ঞতার সনদ জমা দিয়েছেন ফেরদৌস। বাস্তবে ওই কোম্পানির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তারচেয়েও বড় অঘটন হলো- ওই ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদটা সত্যায়িত করেন তারই পত্নী আসমা বিনতে ইকবাল। দোসরা মে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে। তার সিলমোহরে পরিচয় লেখা আছে, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক। কর্মস্থল পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ। ওই সত্যায়ন তারিখের তিন সপ্তাহের মাথায় ২৪ মে ইউজিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এটিএম জহুরুল হকের আনুকূল্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে সহকারী সচিব (৬ষ্ঠ) পদে যোগদান করেন ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী ফেরদৌস। তারপর ঘুষ-দুর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কিন্তু ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটলে তারাও বিপাকে পড়েন। জোট আমলে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি ফেরদৌস-আসমা দম্পতি। পরে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় বসলে ফের শুরু হয় আসমা বিনতে ইকবাল আর ফেরদৌস জামান দম্পাতির দাপুটে উত্থান। দ্রুতই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক বনে যান স্ত্রী। আর ধাপে ধাপে জালিয়াতি করে পদোন্নতি বাগিয়ে ফেরদৌস হন ইউজিসির সচিব।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের লজ্জাজনক পতনের পর তদন্ত কমিটি খুঁজে পায় ফেরদৌস জামানের অবৈধ নিয়োগের তথ্য। কিন্তু তদন্তের বাইরে থেকে যায় তার স্ত্রীর জালিয়াতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি বাগানোর তথ্য।