ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পাঁচ শতাধিক অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণে সেনাবাহিনীর গুইমারা রিজিয়ন ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে তেল স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা ঢাকায় জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলা, বেশ কয়েকজন আহত নওগাঁ বগুড়া-ঢাকা আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ দুপচাঁচিয়ার কইলে ১৬ প্রহর ব্যাপী রাধা গোবিন্দের পদাবলী লীলা কীর্তন শুরু রংপুরের মিঠাপুকুরে বোরকা পরে পালানোর সময় ‘ধর্ষক’কে ধরে গণপিটুনি জাপানি নায়িকা পর্নোগ্রাফি ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব দুপচাঁচিয়া উপজেলা কমিটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

শেখ হাসিনা ছিলেন অত্যাচারি শাসক: বাংলা একাডেমির সভাপতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৪৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অনলাইন ডেস্ক
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, শেখ হাসিনা ছিলেন অত্যাচারি শাসক। টর্চার সেলে বহু মানুষকে বন্দি রেখে ঠান্ডা মাথায় নির্যাতন করা ছিল বিগত সরকারের একটি বড় অপরাধ।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার এফডিসিতে জুলাই অভ্যুত্থান ও একুশের চেতনা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই দেশের ছাত্র— জনতা জুলাই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। আওয়ামী সরকার প্রধান শেখ হাসিনা নিজেকে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী মনে করতেন। নির্বিচারে গুম, খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে জাতির কাছে তিনি অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিলেন। বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনসহ সব প্রতিষ্ঠানই প্রধানমন্ত্রীর একক নির্দেশে পরিচালিত হতো। এর ফলে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট তার মর্যাদা হারিয়েছিল। দীর্ঘদিনের অপশাসন, অন্যায়—অত্যাচার ও দুনীর্তির কারণে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা হারিয়ে অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। টর্চার সেলে বহু মানুষকে বন্দি রেখে ঠান্ডা মাথায় নির্যাতন করা ছিল বিগত সরকারের একটি বড় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধে দণ্ডিতদের বিচারে ফাঁসিও হতে পারে। দেশবাসী আশা করে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে যত মানুষ শহীদ হয়েছে তার চেয়ে বহু মানুষ শহীদ হয়েছে জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী সরকারের পুলিশ ও গুণ্ডাবাহিনীর গুলিতে। বাংলাদেশের ইতিহাসে দৃশ্যমানভাবে গুলি করে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আর কখনো ঘটেনি। তাই জুলাই বিপ্লবসহ আওয়ামী শাসনামলে গত ১৫ বছরের সব গুম—খুন, হত্যার বিচার যতদ্রুত করা যাবে ততই সাধারণ মানুষের আইনের শাসনের প্রতি আস্থা বাড়বে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশ এখন গণতন্ত্রের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে। দেশের এই সংকটকালে ছাত্র—জনতাসহ বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে দেশি-বিদেশি অপশক্তিগুলো অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে জুলাই বিপ্লবে অর্জিত সুফলকে ব্যর্থ করার অপচেষ্টা করতে পারে। জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তদান বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। রাজনীতির মধ্যে আদর্শগত মতপার্থক্য থাকতে পারে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু আদর্শগত মতপার্থক্য হানাহানির পর্যায়ে গেলে পতিত রাজনৈতিকগোষ্ঠী সুবিধা পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, পতিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় মনে করতেন আমিই রাষ্ট্র, এই স্টেটটি আমার। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জুলাই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার লেসপেনসাররা অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও লাখো লাখো নেতাকমীর্দের কথা একটুও ভেবে দেখেননি তারা। ফলে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। অথচ পরাজিত আওয়ামী লীগের কিছু কিছু লোক দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিদেশে বসে উস্কানিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা না গেলে একুশের চেতনা ও জুলাই বিপ্লবের তা ব্যাহত হবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে একুশের চেতনা বৃথা যায়নি’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, অধ্যাপক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম ও সাংবাদিক মাঈনুল আলম।

প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শেখ হাসিনা ছিলেন অত্যাচারি শাসক: বাংলা একাডেমির সভাপতি

আপডেট সময় : ১২:৪৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, শেখ হাসিনা ছিলেন অত্যাচারি শাসক। টর্চার সেলে বহু মানুষকে বন্দি রেখে ঠান্ডা মাথায় নির্যাতন করা ছিল বিগত সরকারের একটি বড় অপরাধ।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার এফডিসিতে জুলাই অভ্যুত্থান ও একুশের চেতনা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই দেশের ছাত্র— জনতা জুলাই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। আওয়ামী সরকার প্রধান শেখ হাসিনা নিজেকে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী মনে করতেন। নির্বিচারে গুম, খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে জাতির কাছে তিনি অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিলেন। বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনসহ সব প্রতিষ্ঠানই প্রধানমন্ত্রীর একক নির্দেশে পরিচালিত হতো। এর ফলে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট তার মর্যাদা হারিয়েছিল। দীর্ঘদিনের অপশাসন, অন্যায়—অত্যাচার ও দুনীর্তির কারণে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা হারিয়ে অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। টর্চার সেলে বহু মানুষকে বন্দি রেখে ঠান্ডা মাথায় নির্যাতন করা ছিল বিগত সরকারের একটি বড় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধে দণ্ডিতদের বিচারে ফাঁসিও হতে পারে। দেশবাসী আশা করে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে যত মানুষ শহীদ হয়েছে তার চেয়ে বহু মানুষ শহীদ হয়েছে জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী সরকারের পুলিশ ও গুণ্ডাবাহিনীর গুলিতে। বাংলাদেশের ইতিহাসে দৃশ্যমানভাবে গুলি করে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আর কখনো ঘটেনি। তাই জুলাই বিপ্লবসহ আওয়ামী শাসনামলে গত ১৫ বছরের সব গুম—খুন, হত্যার বিচার যতদ্রুত করা যাবে ততই সাধারণ মানুষের আইনের শাসনের প্রতি আস্থা বাড়বে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশ এখন গণতন্ত্রের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে। দেশের এই সংকটকালে ছাত্র—জনতাসহ বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে দেশি-বিদেশি অপশক্তিগুলো অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে জুলাই বিপ্লবে অর্জিত সুফলকে ব্যর্থ করার অপচেষ্টা করতে পারে। জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তদান বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। রাজনীতির মধ্যে আদর্শগত মতপার্থক্য থাকতে পারে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু আদর্শগত মতপার্থক্য হানাহানির পর্যায়ে গেলে পতিত রাজনৈতিকগোষ্ঠী সুবিধা পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, পতিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় মনে করতেন আমিই রাষ্ট্র, এই স্টেটটি আমার। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জুলাই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার লেসপেনসাররা অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও লাখো লাখো নেতাকমীর্দের কথা একটুও ভেবে দেখেননি তারা। ফলে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। অথচ পরাজিত আওয়ামী লীগের কিছু কিছু লোক দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিদেশে বসে উস্কানিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা না গেলে একুশের চেতনা ও জুলাই বিপ্লবের তা ব্যাহত হবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে একুশের চেতনা বৃথা যায়নি’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, অধ্যাপক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম ও সাংবাদিক মাঈনুল আলম।

প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।