মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শেরপুর-৩ আসনে এডিএম শহিদুল ইসলামকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় আনন্দ মিছিল রংপুর বিভাগের ০৮ জেলার সাংবাদিকদের নির্বাচন বিষয়ক রিপোর্টিং প্রশিক্ষনের সমাপন অনুষ্ঠিত নড়াইল ২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন নুর ইসলাম ৪৮ নওগাঁ ৩ আসনের এমপি সেলিম উদ্দিন তরফদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন ১ডিসেম্বর জামালপুর থেকে চট্টগ্রাম যাবে ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ বকশীগঞ্জ নৌকার মাঝি হলেন নূর মোহাম্মদ আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ ৪৮ নওগাঁ ৩ আসন মহাদেবপুর ও বদলগাছী নৌকা মনোনয়ন পেলেন সচিব শ্রীসৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী সৌরেন নওগাঁর মহাদেবপুরে মাসুম ফিলিং স্টেশনে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা দুপচাঁচিয়ায় শুভ রাস পূর্ণিমা উৎসব পালিত কাজিপুরে আ’লীগের মনোনয়ন পেলেন তানভীর শাকিল জয় “মনোহরদী বেলাবরের ৩য় বার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন “গফরগাঁওয়ের ৩য় বার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন এমপি ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল “ মধুপুর-ধনবাড়ী আসনে পঞ্চমবারের মতো নৌকার মাঝি হলেন কৃষি মন্ত্রী দুপচাঁচিয়ায় থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ৮ উৎসব মুখর পরিবেশ হাজী আব্দুল গনি স্কলারশিপ এক্সামিনেশন চালু হয়। দেওয়ানগঞ্জের মেম্বারকে টাকা না দিলে কাজ পান্না উপকারভোগীরা ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বগুড়ার ৩ আসনের নৌকার মাঝি হলেন সিরাজুল ইসলাম খান রাজু ঠাকুরগাঁওয়ে উদ্যোক্তা উন্নয়ন মেলা ! পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে উল্টো হামলা শিকার হয়ে হাসপাতালে যুবলীগ নেতা

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, ‘জীববৈচিত্র্য হুমকিতে’

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩০২ বার পঠিত

সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে পানি বিষাক্ত হয়ে ‘জীববৈচিত্র্য হুমকিতে’ পড়েছে।

পশ্চিম সুন্দরবনের ঢাংমারী এলাকার আমজাদ গাজী বলেন, তিনি দুই যুগের অধিক সময় সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।

“সম্প্রতি সুন্দরবনের নদী ও খালগুলোতে অনেকে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জ সংলগ্ন গ্রামগুলোতে প্রায় দেড়শ সংঘবদ্ধ চোরা মাছ শিকারি রয়েছে। তাদের অবস্থান বরগুনার পাথরঘাটার চরদুয়ানী, বাগেরহাটের শরণখোলা, রামপাল, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, খুলনার পাইকগাছা, দাকোপ, কয়রা, সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলায়।”

আমজাদ বলেন, “বিষ দেওয়ায় সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় খালে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মারা পড়ছে।”

সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার কয়রা উপজেলার ৬ নম্বর কয়রা এলাকার জামাল মোড়ল ১৪ বছর ধরে সুন্দরবনে মাছ শিকার করেন।

জানা যায়, কয়রা এলাকার ৮০ শতাংশ মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। সাম্পতিক সময়ে সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বেড়েছে।
“বিষ দিয়ে মাছ ধরার পরে ওই খালে অনেক দিন কোনো মাছ ঢোকে না। কারণ খালে মাছের কোনো খাবার থাকে না। যে কারণে আমরা এখন মাছ কম পাচ্ছি।

একই কথা জানান খুলনার দাকোপ উপজেলার নলিয়ান এলাকার জেলে মহিউদ্দিন শেখ।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের খুলনা শাখার সমন্বয়কারী আইনজীবী মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, “প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রচ্ছায়ায় একশ্রেণির জেলে নৌকা ও ট্রলার নিয়ে বনের ভেতরে ঢুকে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করছে।

“এতে শুধু মাছ নয়, পানি বিষাক্ত হয়ে অন্যান্য জলজ প্রাণীও মারা যাচ্ছে। বিষ দিয়ে মাছ শিকার করায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, “এসব কীটনাশক যেখানে প্রয়োগ করা হয়, সেখানে ছোট-বড় সব প্রজাতির মাছ মারা যায়। জেলেরা সেখান থেকে শুধু বড় মাছগুলো সংগ্রহ করে। ছোট মাছগুলো তারা নেয় না। কিন্তু এই ছোট মাছগুলো ছিল বড় মাছের খাবার। ফলে ওই এলাকার খাদ্যচক্রেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে।

“আবার এই কীটনাশক মিশ্রিত পানি ভাটার টানে যখন গভীর সমুদ্রের দিকে যায়, তখন সেই এলাকার মাছও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হল, যেসব খালে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়, তার বিষক্রিয়া সংশ্লিষ্ট এলাকায় চার মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত থাকে।”

বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য সুন্দরবনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরায় শুধু সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, এই বিষাক্ত পানি পান করে বাঘ, হরিণ, বানরসহ অন্য বন্য প্রাণীরাও মারাত্মক হুমকির মধ্যে রয়েছে।
এতে উপকূলীয় এলাকায় মানুষের পানীয় জলের উৎসগুলোও বিষাক্ত হয়ে পড়ছে বলে জানান ফরিদুল।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ হাসান লিমন বলেন, সুন্দরবনেরর অভ্যন্তরে খালগুলোয় একশ্রেণির মাছ শিকারি বিষ দিয়ে মাছ শিকার করায় বিষাক্ত পানির কারণে বাঘ-হরিণসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর বড় ক্ষতি হতে পারে। যে কারণে সুন্দরবনকে সুরক্ষিত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপের ওপর সংশ্লিষ্টদের এখনই জোর দিতে হবে।

বিষ দিয়ে মাছ শিকার করার ঘটনা অবগত রয়েছেন পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।

তিনি বলেন, “এসব মাছ শিকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের প্রতিটি ক্যাম্প ও স্টেশনের বনরক্ষীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি সুন্দরবনের নদীগুলোয় মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

খুলনার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ বলেন, গত ১৭ জুলাই চার বোতল কীটনাশকসহ আটজন, ২৮ অগাস্ট এক বোতল কীটনাশকসহ দুইজন, ২৯ অক্টোবর দুই বোতল কীটনাশকসহ তিনজন, ২৬ নভেম্বর দুই বোতল কীটনাশকসহ তিনজন এবং চলতি মাসের ১ ডিসেম্বর চার বোতল কীটনাশকসহ নয়জনকে আটক করা হয়।

এ সময় বিপুল পরিমাণে বিষ বা কীটনাশক মিশ্রিত মাছও জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।

বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, “অপ্রতুল লোকবল দিয়ে সুন্দরবনের সব নদী-খাল পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। তার পরও আমরা যতটুকু সম্ভব আইন প্রয়োগ করার চেষ্টা করছি।

“বনবিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। ব্যক্তিগতভাবেও সভা-সমাবেশে কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে স্থানীয় মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।”

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150