ঢাকা ১০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পাঁচ শতাধিক অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণে সেনাবাহিনীর গুইমারা রিজিয়ন ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে তেল স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা ঢাকায় জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলা, বেশ কয়েকজন আহত নওগাঁ বগুড়া-ঢাকা আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ দুপচাঁচিয়ার কইলে ১৬ প্রহর ব্যাপী রাধা গোবিন্দের পদাবলী লীলা কীর্তন শুরু রংপুরের মিঠাপুকুরে বোরকা পরে পালানোর সময় ‘ধর্ষক’কে ধরে গণপিটুনি জাপানি নায়িকা পর্নোগ্রাফি ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব দুপচাঁচিয়া উপজেলা কমিটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করেছে সরকার।

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৩১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডেস্ক রিপোর্ট: ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করেছে সরকার। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এ বছর থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। তবে এ দিনে থাকবে না সরকারি ছুটি। শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক দিনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের মাধ্যমে সেনাসদস্যদের আত্মত্যাগকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণলায় থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রায়হানা ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ সেনা দিবস পালনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রতিরক্ষা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা পরিবারের সদস্যরা। ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার পাশাপাশি বেশ কিছু দাবিতে আন্দোলন করছিলেন তারা।

তারা বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আমরা শহীদ পরিবাররা দুটি জিনিস চেয়ে এসেছি—এক হচ্ছে স্বাধীন তদন্ত কমিশন করে পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখ উন্মোচন করে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এবং আরেক হচ্ছে প্রাণ হারানো সেনা কর্মকর্তাদের সম্মানে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা। সরকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় তারা অনেক খুশি।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক অন্ধকার ও কলঙ্কময় দিন। পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) কিছু বিপথগামী এবং বিদ্রোহী সদস্যের নির্মম হত্যাযজ্ঞে ৫৭ জন বীর সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন শাহাদাতবরণ করেন। এক কাপুরুষোচিত ষড়যন্ত্রে নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও বাংলাদেশ এতজন সেনা কর্মকর্তাকে একসঙ্গে হারায়নি। এই ভয়াবহ ঘটনায় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শপথ গ্রহণকারী দেশের সুরক্ষা কবচ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হারায় তার মেধাবী ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের, যা সমগ্র সশস্ত্র বাহিনীর মনোবলে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ দিনটি শুধু বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নয় বরং পুরো জাতির জন্য শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক আপামর জনসাধারণও এ কালো দিনটিতে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শোক পালন করে আসছে।

এর আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রায়হানা ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, এই হৃদয়বিদারক এবং শোকাবহ দিনটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালন করা সময়ের চাহিদা। প্রতি বছর দিনটি যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলে সেনাসদস্যদের আত্মত্যাগকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যা শহীদ পরিবারগুলোর অন্তরে সান্ত্বনাবোধ তৈরি করবে এই দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও আত্মত্যাগের মানসিকতা জাগ্রত করবে। এ ছাড়া জাতীয় পর্যায়ে সেনাবাহিনীর অবদান এবং আত্মত্যাগ সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে, এই দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের মাধ্যমে সর্বস্তরের সেনাসদস্যদের মধ্যে দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা ও পেশাগত দায়িত্বের প্রতি আরও অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের আত্মত্যাগ থেকে শক্তি নিয়ে সেনাসদস্যরা জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে তিনটি প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালন করা, ওই ঘটনায় শাহাদাত বরণকারী সেনা সদস্যদের ‘শহীদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা এবং শাহাদাতবরণকারী সেনা সদস্যদের নামের পূর্বে ‘শহীদ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করেছে সরকার।

আপডেট সময় : ১১:৩১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট: ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করেছে সরকার। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এ বছর থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। তবে এ দিনে থাকবে না সরকারি ছুটি। শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক দিনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের মাধ্যমে সেনাসদস্যদের আত্মত্যাগকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণলায় থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রায়হানা ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ সেনা দিবস পালনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রতিরক্ষা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা পরিবারের সদস্যরা। ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার পাশাপাশি বেশ কিছু দাবিতে আন্দোলন করছিলেন তারা।

তারা বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আমরা শহীদ পরিবাররা দুটি জিনিস চেয়ে এসেছি—এক হচ্ছে স্বাধীন তদন্ত কমিশন করে পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখ উন্মোচন করে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এবং আরেক হচ্ছে প্রাণ হারানো সেনা কর্মকর্তাদের সম্মানে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা। সরকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় তারা অনেক খুশি।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক অন্ধকার ও কলঙ্কময় দিন। পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) কিছু বিপথগামী এবং বিদ্রোহী সদস্যের নির্মম হত্যাযজ্ঞে ৫৭ জন বীর সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন শাহাদাতবরণ করেন। এক কাপুরুষোচিত ষড়যন্ত্রে নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও বাংলাদেশ এতজন সেনা কর্মকর্তাকে একসঙ্গে হারায়নি। এই ভয়াবহ ঘটনায় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শপথ গ্রহণকারী দেশের সুরক্ষা কবচ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হারায় তার মেধাবী ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের, যা সমগ্র সশস্ত্র বাহিনীর মনোবলে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ দিনটি শুধু বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নয় বরং পুরো জাতির জন্য শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক আপামর জনসাধারণও এ কালো দিনটিতে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শোক পালন করে আসছে।

এর আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রায়হানা ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, এই হৃদয়বিদারক এবং শোকাবহ দিনটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালন করা সময়ের চাহিদা। প্রতি বছর দিনটি যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলে সেনাসদস্যদের আত্মত্যাগকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যা শহীদ পরিবারগুলোর অন্তরে সান্ত্বনাবোধ তৈরি করবে এই দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও আত্মত্যাগের মানসিকতা জাগ্রত করবে। এ ছাড়া জাতীয় পর্যায়ে সেনাবাহিনীর অবদান এবং আত্মত্যাগ সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে, এই দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের মাধ্যমে সর্বস্তরের সেনাসদস্যদের মধ্যে দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা ও পেশাগত দায়িত্বের প্রতি আরও অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের আত্মত্যাগ থেকে শক্তি নিয়ে সেনাসদস্যরা জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে তিনটি প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালন করা, ওই ঘটনায় শাহাদাত বরণকারী সেনা সদস্যদের ‘শহীদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা এবং শাহাদাতবরণকারী সেনা সদস্যদের নামের পূর্বে ‘শহীদ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।