ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের পর এবার লাইভে এসে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।‘নানান মানুষ নানান মত, দেশ বাঁচাতে ঐক্যমত। সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্দেশ্য বার্তা।’ ক্যাপশন দিয়ে তিনি এ লাইভে আসেন। এসময় তিনি ক্ষমা চেয়ে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে বক্তব্যে দেওয়াকে কেন্দ্র করে দেশের কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।দিনগত রাত ১২টা ১১ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি ক্ষমা চান।এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।রবিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম সজীব মামলাটি দায়ের করেন। তবে এ মামলায় নুরুল হক নুর ছাড়া অন্য কাউকে আসামি করা হয়নি।‘কোনো মুসলমান আওয়ামী লীগ করতে পারেন না’ শীর্ষক ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানে এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এ মামলা করা হয়। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।নুর বলেন, গত ১৬ তারিখ একটা লাইভে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে কথা বলেছি। ১ ঘন্টা ১৬ মিনিটের ওই লাইভে আমি বিভিন্ন কথা বলেছি। সে প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন অধিকার, ঘুম, অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়নের বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করার জন্য আমার রাগ, ক্ষোভ, আবেগ-অনুভূতির জায়গা থেকে আমি কিছু কথা বলেছিলাম। তিনি বলেন, আমার কথায় যদি কেউ দুঃখ পেয়ে থাকেন, কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।রোববার(১৮ এপ্রিল) শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের বিষয়ে তিনি বলেন, সেই ঘটনাকে পুঁজি করে মামলা করা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, হয়রানি করার উদ্দেশ্য মামলা করা একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্র দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে হচ্ছে। আওয়ামী লীগে ধর্মপ্রাণ মানুষ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলাম, আমি মনে করি অবশ্যই আওয়ামী লীগে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষ আছে, ধর্মপ্রাণ মুসলমান আছে, ধর্মপ্রাণ হিন্দু ভাই-বোন, বৌদ্ধ ভাই-বোন, খ্রিষ্টান ভাই-বোন আছে। ঠিক একইভাবে অন্যান্য দলেও সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ আছে। সেক্ষেত্রে ঢালাওভাবে আওয়ামী লীগের বা আওয়ামী সমর্থকদের আক্রমণ করে কোন কথা বলিনি।তিন বলেন, আমি যখন ডাকসু নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছি, ছাত্রলীগের অনেক ভাই-বোনেরা আমাকে ভোট দিয়েছে। নিজের জীবন বিপন্ন করে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছি, সে কারণে তাদের অনেকেই আমাকে ভোট দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের মধ্যেও আমার অনেক শুভাকাঙ্খী রয়েছে। সে কারণে আমি চাইবো না, আমার কথার কারণে সেই বড় সার্কেলের শুভাকাঙ্খী, সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হোক কিংবা তারা আমার প্রতি বিরাগভাজন হোক।তিনি বলেন, বিনয়ের সাথে আমি সেটার জন্য ক্ষমা চাইবো। আমার ভুল হলে তার জন্য আমি ক্ষমা চাই। সেটা আমি আগেও চেয়েছি। এখনও বলছি, সেদিনকার বক্তব্যের কারণে যেকোন ভাই-বন্ধু, শুভাকাঙ্খী যদি মনঃকষ্ট পেয়ে থাকেন আমি তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। রাজনৈতিক অঙ্গনের একজন নবীন নেতা হিসেবে, তরুণ ছাত্র নেতা হিসেবে প্রতিকুল সময়ে আমাদের কাজগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।