সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
Ssc (পরীক্ষার ফলাফল)2024 কালাইয়ের ওমর কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড ওমর গার্টেন একাডেমির এসএসসি-২০২৪ এ হয়েছে ভালো ফলাফল পার রামরাম পুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর মতবিনিময় নওগাঁর মান্দায় দীর্ঘ ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কার করা হয়নি ভাঙা বেড়িবাঁধটি দেখার কেউ নেই সাংবাদিক খলিলুর রহমানের মৃত্যুতে কালাই উপজেলা প্রেসক্লাবের শোক সভা  গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পিকিং জাতের হাঁস পালনে তাক লাগিয়েছে সোহাগ মিয়া কালাইয়ে বিশ্ব ‘মা’ দিবস ২০২৪ পালিত মধুপুরে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত মধুপুরে বিশ্ব মা দিবস পালিত মাগুরায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা,আহত অন্তত-৩০ এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফল ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নওগাঁর মান্দায় দীর্ঘ ৫ বছর পর জোতবাজার খেয়াঘাট সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ উদ্বোধন করেন গামা এমপি উদযাপিত বিজয় মাহমুদের ফ্রী কোরআন শিক্ষার আসরের ১০ বছর মাগুরায় আফজাল হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন নওগাঁহ সারাদেশে রোববার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের ঘোষণা নওগাঁ নিখোঁজের ১দিন পরে আমবাগান থেকে দিনমজুরের আলেফ উদ্দিনে মৃতদেহ উদ্ধার নওগাঁ হেরোইনসহ ৪ মাদক কারবারী আটক ধামইরহাটে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী পরিবারের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ মধুপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন গাইবান্ধা পলাশবাড়ী থানা পুলিশের অভিযানে ১ কেজি গাঁজাসহ মনিরুল ইসলাম (৩৫) নামে ১ মাদক কারবারি গ্রেফতার

খ্যাতনামা লেখক ড. হুমায়ূন আজাদের জন্মদিন আজ :

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৭ বার পঠিত

“””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””
আজ ২৮ এপ্রিল সাহিত্যিক, সমালোচক, সমাজ সংস্কারক, প্রথাবিরোধী মুক্তমনা লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ এর জন্মদিন।

হুমায়ুন আজাদের জন্ম বাংলা ১৩৫৪ সালের ১৪ বৈশাখ, ইংরেজি ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল। বাবা আবদুর রাশেদ প্রথম জীবনে শিক্ষকতা ও পোস্টমাস্টারির চাকুরি করতেন পরে ব্যবসায়ী হন। মা জোবেদা খাতুন, গৃহিনী। তিনি পৈত্রিক সূত্রে প্রচুর জমিজমা পেয়েছিলেন। যে গ্রামে তাঁর বাস ছিল সেটি অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত একটি গ্রাম ছিল। কারণ এখানে জন্মেছিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু। গ্রামের নাম রাঢ়িখাল। বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত এটি। যদিও হুমায়ুন আজাদের জন্ম তাঁর নানাবাড়ি কামারগাঁও কিন্তু রাঢ়িখালকে হুমায়ুন আজাদ মনে করতেন তাঁর জন্মগ্রাম।
পড়াশুনাঃ- পড়াশোনার শুরু নিজ গ্রামেই। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার পর আর তৃতীয় শ্রেণীতে পড়েন নি। সরাসরি চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন স্যার জে. সি. বোস ইন্সস্টিটিউশন-এ। এটিই তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় বলে মনে করতেন হুমায়ুন আজাদ।

জে. সি বোস ইন্সস্টিটিউশন থেকেই ১৯৬২ সালে এস.এস.সি পাশ করেন হুমায়ুন আজাদ। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তানে তিনি একুশতম স্থান অধিকার করেছিলেন। তারপর অনিচ্ছাসত্ত্বেও ঢাকা কলেজে ভর্তি হন বিজ্ঞান বিভাগে। সেখানেই পরিচয় প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের সাথে। সেখান থেকে দ্বিতীয় বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। তারপর ১৯৬৪ সালে পারিবারিক প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। অনার্সে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। ১৯৬৯ সালে সেখান থেকেই বাংলায় আবারো প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এম.এ. ডিগ্রী লাভ করেন।

কর্মজীবনঃ- ১৯৬৯ সালে তিনি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রাম সরকারী মহাবিদ্যালয়ে। তারপর ১৯৭০ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে প্রায় এগার মাস কাজ করেন। ১৯৭০ সালের ১২ ডিসেম্বর চলে আসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক পদে। হুমায়ুন আজাদ ১৯৭৩ সালে কমনওয়েলথ বৃত্তি পেয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রীর জন্য চলে যান এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেসময় প্রায় তিন বছর তিনি সৃষ্টিশীল লেখালেখি থেকে দূরে ছিলেন। তবে অন্তরঙ্গ বন্ধু রবার্টের সাথে অনুবাদ করেন জীবনানন্দ দাশের কবিতা। ১৯৭৬ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞনে অর্জন করেন পিএইচডি ডিগ্রী। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি পুরোপুরিই লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। ১৯৭৮ সালের ১লা নভেম্বর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে।

সংসার জীবনঃ- ১৯৭৫ সালে হুমায়ুন আজাদ বিয়ে করেন তাঁর সহপাঠী লতিফা কহিনূরকে। টেলিফোনে। এই বছরই বের হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অলৌকিক ইস্টিমার’। আজাদ-লতিফা দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে।
মৃত্যুঃ- জার্মানির মিউনিখ শহরে ২০০৪ সালের ১১ আগস্ট আকষ্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ ।

ড. হুমায়ুন আজাদ সমন্ধে কিছু কথাঃ-
১৯৮৪ সাল। তখন হুমায়ুন আজাদের বয়স মাত্র ৩৭ বছর। এই বয়সেই তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থ ‘বাংলা ভাষা’-এর প্রথম খণ্ড বেরিয়ে গেছে। একদিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে তাঁর নিজ রুমে বসে আছেন। এমন সময় রুমে প্রবেশ করেন বিশ্বভারতীর এক প্রবীণ অধ্যাপক, প্রাত্তন ডিন। অধ্যাপক সাহেব, হুমায়ুন আজাদের চেয়ে বয়সে কম করে হলেও চল্লিশ বছরের বড় হবেন। তিনি রুমে প্রবেশ করেই জিজ্ঞেস করলেন, ‘ডক্টর হুমায়ুন আজাদকে কোথায় পাবো বলতে পারেন?’ হুমায়ুন আজাদ বললেন, ‘আমিই হুমায়ুন আজাদ।’ বিশ্বভারতীর অধ্যাপক বলেন, ‘আমার বিশ্বাস হয় না। যিনি বাংলা ভাষা সম্পাদনা করেছেন তাঁর বয়স এতো কম হ’তে পারে না।’ হুমায়ুন আজাদ বলেন, ‘কতো হওয়া উচিত?’ অধ্যাপক বলেন, ‘অন্তত পঁচাত্তর, এর আগে এমন জ্ঞান হ’তে পারে না।’

এই বই যখন প্রকাশিত হলো তখন বাংলা সাহিত্যের আরেক দিকপাল অধ্যাপক সুনীল কুমার মুখোপাধ্যায় বইটি তাঁর মাথায় তুলে নিয়ে হুমায়ুন আজাদকে বলেছিলেন, ‘আপনাকে কেউ স্বীকৃতি দেবে না, তবে এ কাজের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে অনারারি ডিলিট ডিগ্রি দিলাম।’ হুমায়ুন আজাদ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ মানুষের এমন প্রশংসা খুব বেশি পাননি। তাই এগুলো তাঁর বুকে ফুলের মত বিঁধে ছিল।

ড. হুমায়ুন আজাদ আস্তাকুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন সমস্ত প্রথাকে। নিজে হয়ে উঠেছিলেন প্রথাবিরোধী। তাঁর সমস্ত বই, প্রবন্ধ, কবিতা সৃষ্টি হয়েছে প্রথাকে অস্বীকার করে। তাঁর প্রবচনগুচ্ছ এদেশের পাঠক সমাজকে করে তুলেছে সচেতন, অপরদিকে ভণ্ডদের করে তুলেছে ক্রুদ্ধ। আর এ কারণেই তিনি হয়ে ওঠেছিলেন এদেশের কান্ট। হুমায়ুন আজাদের লেখালেখির পুরোটাই ছিল বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী। তিনি নিজেই ছিলেন তাঁর চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাসের মুখপত্র। তবে তিনি তাঁর রাজনৈতিক আদর্শকে কখনো ঢেকে রাখেন নি। তাঁর বিশ্বাস ছিল বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি এবং তিনি তা অনেকবারই উল্লেখ করেছেন। সামজতান্ত্রিক অর্থনীতিকেই তিনি মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ গড়ার পক্ষে অনুকূল বলে মনে করতেন।
তিনি ভালবাসতেন বাঙালিকে। আবার সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করেছেন সেই বাঙালিকেই। এর সপক্ষে তাঁর জবাব ছিল, তিনি এই গোত্রের মানুষ, তাই এই জাতির কাছে তাঁর প্রত্যাশা অনেক বেশি। কিন্তু যখন দেখেন বাঙালি অনিবার্যভাবে পতনের পথকেই বেছে নিচ্ছে তখন তিনি তার সমালোচনা করেছেন। একটি পবিত্র বিশুদ্ধ বাংলাদেশ তিনি চেয়েছিলেন, যেখানে কোনো স্বাধীনতা বিরোধী থাকবে না। ধর্ম ব্যবসায়ীরা ফতোয়া দেবে না। এমন একটি দেশ হুমায়ুন আজাদ চেয়েছিলেন যেখানে ‘ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না’। গণতান্ত্রিক, মুক্তচিন্তাযুক্ত, ব্যক্তির অধিকারপূর্ণ, বদ্ধ মতাদর্শহীন, সচ্ছল, সৃষ্টিশীল, ভবিষ্যৎমুখি, সৎ, সুস্থ সমাজ ও রাষ্ট্র হুমায়ুন আজাদ চেয়েছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150