ওবায়দুর রহমান, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের নিত্যানন্দপুর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে স্ত্রী-পুত্রের নির্যাতন ও মারধরের কারনে কৃষক আফজাল শেখ (৬৫) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
গত শনিবার ৪ মে বিকাল ৬ টার সময়ে নির্যাতনের পর মাগুরা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে নিত্যানন্দপুর গ্রামের মৃত ছায়েন উদ্দিন শেখের পুত্র মোঃ আফজাল শেখের মৃত্যু হয়।আফজাল শেখের দুই পক্ষ নিয়ে সংসার। প্রথম পক্ষের সংসারে ৩ কন্যা ও ১ ছেলে এবং ২য় পক্ষে ১ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। প্রথম পক্ষের পুত্র নুরুল্লাহ শেখের স্ত্রী ফারজানা (২৮) জানান, গত বৃহস্পতিবার ২ মে ২য় পক্ষের শাশুড়ি শিল্পী বেগম (৪৫) ও তার ছেলে নুর আলম (১৯) জবরদস্তি করে শিল্পীর দীর্ঘ দিনের পরকীয়া প্রেমিক রাজপাট গ্রামের তৈয়ব খার পুত্র মোনায়েম খার (৫০) মোটরসাইকেলে আমার শশুরকে জোর করে উঠায়। আমার স্বামী নুরুল্লাহ মাঠে ধান কাটতে ছিলো তখন নুর আলম ফোন করে বলে আব্বাকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে তুই টাকা নিয়ে রাজাপুর বাজারে চলে আয়। এরপর সুকৌশলে শিল্পী বেগম, নুর আলম ও মোনায়েম খা তাকে নিয়ে মহম্মদপুর রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যায়। আমার স্বামী নুরুল্লাহ টাকা নিয়ে রাজাপুর বাজারের সবগুলো ডাক্তারের চেম্বারে খোজ খবর নিয়ে না পেলে চিন্তা করে আজ বৃহস্পতিবার মহম্মদপুরে জমিজমার ক্রয়-বিক্রয়ের রেজিষ্ট্রি দিন। এটা সন্দেহ করে নোন্দাই হান্নান মোল্লা, ননদ নয়ন আরা মহম্মদপুর রেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে গোপন সূত্রে জানতে পারে আফজাল শেখের কাছে থেকে তার ২য় স্ত্রী শিল্পী বসতবাড়ির ভিটা ৭ শতক, ধানী জমি ৬ শতক, গাছের বাগান ৯ শতক মোট ২২ শতক জমি লিখে নেয়। বাগানের জমি ঐ দিনেই নিত্যানন্দপুর গ্রামের ফজের মোল্লার পুত্র ইসরাফিল মোল্লার নিকট বিক্রি করে শিল্পী বেগম। এরপর রবিবার ৫ মে দুপুরে তুমুল ঝগড়াঝাটি করে ঘরের মধ্যে দরজা আটকিয়ে শিল্পী বেগম ও তার ছেলে নুর আলম শশুরকে মারধোর করে,আমি উঠানের কাছে থেকে শুনতে পায় আমার শশুর আফজাল শেখ মারধর করার কারণে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার চেচামেচি করছে,ঘর বন্ধ করা দেখে আমরা সেখানে যেতে পারিনি। বিকাল ৫ টার সময়ে আমার ছোট শাশুড়ি নুর আলম ও সোনিয়ার জামাই শাহজাহান অটো ইজিবাইকে করে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার সময় আমি ইজিবাইকে উঠতে গেলে শিল্পী বেগম আমাকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়।এরপর আমরা তার মৃত্যুর খরব শুনতে পারি।
প্রতিবেশী শহীদ মোল্লার স্ত্রী রিজিয়া খাতুন জানান, আমি শিল্পী বেগমের ঘরের পিছনে দুপুরে গরু নিয়ে আসতে গেলে অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পেয়ে ছিলাম এবং আমার কাছে মনে হচ্ছিলো ঘরের মধ্যে কোন কিছু একটা ঘটনা ঘটছে।
এবিষয়ে জানতে শিল্পী বেগমের বাড়িতে তার বক্তব্য নিতে গেলে তার ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়, এবং বাড়ির কোন লোকজন তার ফোন নম্বর দিতে পারেনি। তারা পালিয়ে গেছে, এসময়ে এলাকাবাসীর উপস্থিত লোকজন সবাই জানান, শিল্পী বেগম অত্যন্ত উগ্র ও খারাপ আচরণের মহিলা তার সাথে দীর্ঘ দিন ধরে রাজপাট গ্রামের মোনায়েম খানের সাথে পরকীয়া প্রেম ও অবৈধ সম্পর্কের কথা জানান তারা।গত ২৩ এপ্রিল রাজাপুর পুলিশ ক্যাম্পে ফারজানা বাদী হয়ে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটা অভিযোগ দায়ের করে ছিলো শিল্পী বেগম ও নুর আলমের বিরুদ্ধে।
মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ বোরহান উল ইসলাম বলেন,লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে,রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে পারবো,যদি এটা হত্যাকান্ড হয় তাহলে যারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,বিষয়টি নিয়ে মহম্মদপুর থানায় একটা অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, মহম্মদপুর থানা মামলা নং-২০, তাং- ০৫/০৫/২০২৪।