সীমান্তের জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে, যা উদ্বেগজনক। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জেলাগুলোতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লকডাউন দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এটা পর্যালোচনা করছে। আম চাষিদের অবস্থা বিবেচনা করে হয়তো দেরি করছে। আমরা চাই দ্রুত লকডাউন দেওয়া হোক প্রস্তাবিত জেলাগুলোয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত সীমান্তবর্তী সাত জেলায় লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে দেরি হলে সঙ্কট বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, চাইনিজ টিকা আসবে মোট দেড় কোটি। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে তিন মাসে আসবে এই টিকা। এই টিকা প্রথমেই দেওয়া হবে মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ সব সরকারি-বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এরপর বিশ^বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। রাশিয়ার ভ্যাকসিনের বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ফাইজারের যে টিকা আসবে, তা যাদের রেজিস্ট্রেশন আছে তাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে দেওয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিফ্রিংয়ে বলেন, পুরো জেলা অবরুদ্ধ করা হবে, না জেলার নির্দিষ্ট কিছু এলাকা সেসব বিষয়ে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অবশ্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে স্থানীয় প্রশাসনও লকডাউনের ঘোষণা দিতে পারে, সে রকম নির্দেশনা আগেই দিয়ে রাখা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সাত জেলায় লকডাউনের সুপারিশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটি যে চিঠি দিয়েছে, তা তারা এখনও হাতে পাননি। তবে স্থানীয় পর্যায়ে আগেই নির্দেশনা দেওয়া আছে, যাতে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা না হয়। অলরেডি ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), সিভিল সার্জন, চেয়ারম্যান বা মেয়র; ওনাদের বলেই দেওয়া আছে, যদি আপনারা মনে করেন যেকোনো জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ, সে ক্ষেত্রে আপনাদের কমফোর্ট অনুযায়ী এটা করে দিতে পারবেন।
সীমিত পরিসরে বিয়ে : করোনাকালে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোও বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে। বিয়ে-সাদি বা রাজনৈতিক জনসমাবেশও হচ্ছে না খুব একটা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এর মধ্যে কয়েকটা বিষয় তার নজরে এসেছে, মসজিদে গিয়ে বা মেয়ের বাসায় গিয়ে ৪ বা ৫ জন বিয়ে পড়িয়ে বউ নিয়ে এসেছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই যারা এ কাজগুলো করছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মানুষের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমকে আরও প্রচারণার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বারবার অনুরোধ জানানোর পরও দেখা যায় অনেক লোক মাস্ক পরেন না। এটা তো আমাদের সবাইকে কো-অপারেট করতে হবে। কারণ আমরা বারবার বলছি, এটা কমিউনিটি ডিজিস। আমাদের সবাইকে যার যার জায়গা থেকে সতর্ক হওয়ার সুযোগ আছে। আমরা যদি সবাই মাস্ক ব্যবহার করি, তা হলে এটা কমে যাবে।
এনআইডির বিষয়টি ভাবা হচ্ছে : আগে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটি কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নয়। তারপরও যেহেতু এটি নিয়ে নানা মহলে কথা হচ্ছে সেজন্য আমরা আবারও মিটিং করব। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে দেওয়ায় এনআইডি নিয়ে জনগণের হয়রানি বাড়বে কি না তা একটু দেখে বলতে পারব বলে জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, যখন এটা নিয়ে কথাবার্তা বলতে বসব তখন সব কিছু দেখে না হয় বলব।