দুর্গাপুর ( রাজশাহী) প্রতিনিধি:
রাজশাহী দুর্গাপুর থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) নয়ন হোসেন ও উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার ( এসপি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার কিসমতহোজা গ্রামের কামাল হোসেন মন্ডলের স্ত্রী পাপিয়া খাতুন মামলা দিয়ে ফাঁসানোসহ হুমকি ধামকি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে গত বুধবার (২৪ মার্চ) রাজশাহী পুলিশ সুপার ( এসপি) বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাপিয়ার মামি শাশুড়ির সাথে গ্রামের রহিত নামের এক ছেলের পরোকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। রহিত এখন তার মামী শাশুড়িকে বিয়ে করতে চায়। তবে মামী শাশুড়ি রহিতকে বিয়ে করতে চায় না। কিন্তুু রহিত তার মামী শাশুড়িকে বিয়ে করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে পাপিয়ার স্বামী কামালকে মামির সাথে বিয়ে দিতে হবে বলে প্রকাশ্যে হুমকিও দেন রহিত। এমনকি বিয়ে না দিলে বিভিন্ন ভাবে হত্যার ভয়-ভীতি দেখান কামালকে।
এই ঘটনায় গত সোমবার ( ২১ মার্চ) দুর্গাপুর থানায় রহিতের বিরুদ্ধে সাধারন ডায়েরি করতে যান কামাল ও স্ত্রী পাপিয়া এবং কামালের মা অবেজান। তারা থানায় সশরীরে রহিতের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করতে উপস্থিত হলে থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত নয়ন, উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম, এএসআই রশিদ, কনস্টেবল আখরাতুন রহিতের নামে এ থানায় কোন অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করা যাবে না বলে চলে যেতে বলেন। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে উল্ট্র মিথ্যে মামলা দিয়ে ফাঁসানো,জেলে পুড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখান এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থানা থেকে বের করিয়ে দেন। এ সময় কামাল কোন দিসে মিশে না পেয়ে বলে ফেলেন আমরা এসপি স্যারের কাছে যাব। তখন তদন্ত নয়ন উপ-পরিদর্শ শফিকুল ইসলাম,এএসআই রশিদ ও কনস্টেবল আখরাতুন থানার মেনগেটের বাহির এসে তিনজনকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। এমনকি তাদের কাছ থেকে জোর পূর্বক লিখিত অভিযোগ নেয়। এ সময় তাদের তিনজনকে উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম চরম মানসিক নির্যাতন চালান। এতেই কামালের মা অবেজান অসুস্থ হয়ে পড়েন। কামাল এবং তার স্ত্রী পাপিয়া কোন দিশে মিশে না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া শাশুড়িকে নিয়ে লকাপে ঢোকার ভয়ে বাড়িতে যান। কামাল এবং পাপিয়া অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছা মাত্রই অসুস্থ শাশুড়ি স্ট্রোক করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে রাতেই অসুস্থ শাশুড়িকে দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পাপিয়ার অসুস্থ শাশুড়িকে আশঙ্কা জনক বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করিয়ে দেন। ওই রাতেই। কামাল ও তার স্ত্রী পাপিয়া আশংকা জনক অবস্থা শাশুড়িকে নিয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবিড় পর্যবেক্ষণ ( আইসিইউ)ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। বর্তমানে পাপিয়ার শাশুড়ি পুলিশ কর্মকর্তার মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর শয্যা রয়েছেন।
এদিকে, রহিতের হত্যার হুমকিতে কামাল ও তার স্ত্রী পাপিয়া নিজ বাড়িতেও আসতে পারছে না এখনো।
অভিযোগকারী পাপিয়া বলেন,রহিতের হুমকির ভয়ে আমরা থানায় নিরাপত্তার জন্য সাধারন ডায়রি বা অভিযোগ করতে আসি। থানায় এসে পুলিশের কাছে আমার স্বামী, শাশুড়ি এবং আমার নিরাপত্তার কথা বলতেই তারা আমার উপর চড়া হয়ে উঠেন। এমনকি ইন্সপেক্টর তদন্ত নয়ন ও উপ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন” তোর যদি এতো নিরাপত্তার প্রয়োজন হয় তাহলে বালিশ কাতা নিয়ে এসে আমাদের সাথে শুয়ে থাক । আমি চার মাসের গর্ভবতী। আমার শাশুড়ি এবং স্বামীর সামনে তারা আমাকে অকথ্য নোংরা ভাষায় অনেক কথা বলেছে যা মুখে বলা যাবে না “এমনকি শাশুড়িকে ভয় দেখিয়ে বলে তোর কত টাকা হয়েছে। তোর তো কোন টাকা নেই কিভাবে এসপির কাছে যাবি। একবার খালি জেয়ে দেখ তোকে কোন লকারে ঢুকাই ”
এঘটনায় উপ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, এমন ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এমন কি পানানগরের বিট আমার না বলে ফোন কেটে দেন।
ওসি তদন্ত নয়নের সরকারি ফোনে কল করা হলে সে ফোন রিসির্ভ করেনি।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) নাজমুল হক জানান, এমন ঘটনা আমার জানা নেই। কবে কখন হয়েছে তাও জানি না।
সহকারী পুলিশ সুপার( দুর্গাপুর – পুঠিয়া) সার্কেল রাজিবুল ইসলাম জানান, দুর্গাপুর থানারএমন একটি ঘটনা আমি শুনে ছিলাম। তবে এসপি অফিসে যেহেতু অভিযোগ করছে।সেই অভিযোগ এসপি স্যার অন্য অফিসার দিয়ে তদন্ত কাজ করাতে পারে বলে জানান।