গোপালগঞ্জে চুরি মামলার আসামিকে না পেয়ে আসামির ছেলে ও পুত্রবধূকে বেধড়ক মারধর করেছে পুলিশ। এসময় তাদের চার মাসের শিশু সন্তাকেও ছুড়ে ফেলে দেয় পুলিশ।
শনিবার (১৫ মে) সকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরমানিকদাহ গ্রামের কাজির বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, শনিবার সকালে চুরি মামলার আসামি কাইয়ুম মোল্লাকে সাধারণ পোশাকে ধরতে যায় গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই অজিত কুমার সরকার ও এএসআই সাইদুর রহমান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কাইয়ুম পালিয়ে যায়।
সেই রাগে ওই দুই পুলিশ সদস্য কাইয়ুম মোল্লার ছেলে ইনছানকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটান। ইনছানের স্ত্রী ঠেকাতে গেলে তাকেও মারধর করে আহত করেন। সেসময় ইনছানের স্ত্রীর কোলে থাকা তাদের শিশুপুত্রকে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে দূরে নিক্ষেপ করেন পুলিশ সদস্যরা। এ ঘটনায় ইসছান, তার স্ত্রী ও শিশুপুত্র গুরুতর আহত হয়।
এদিকে, এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীরা ওই বাড়ির সামনের সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। ওই দুই পুলিশ সদস্যকেও অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে গিয়ে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন। আহত স্বামী-স্ত্রী ও তাদের সন্তানকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করারও ব্যবস্থা করেন তিনি।
আহত ইনছান মোল্লা বলেন, ‘পুলিশ আমার বাবা কাইয়ুম মোল্লাকে ধরতে যায়। পুলিশ দেখে আমি চিৎকার করলে আমার বাবা দৌড়ে পালিয়ে যান। সেই রাগে আমাকে বাঁশ দিয়ে পেটাতে তাকেন দুই পুলশ সদস্য। আমার স্ত্রী ঠেকাতে গেলে তাকেও পিটিয়ে আহত করেন। সেসময় আমার স্ত্রীর কোলে থাকা শিশুপুত্রকে কেড়ে নিয়ে ছিটকে ফেলে দেন তারা। পরে ওসি সাহেব পুলিশের গাড়িতে করে এনে আমাদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্ককর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘একাধিক চুরি ও ডাকাতি মামলার আসামি কাইয়ুম মোল্লা। আজ সকালে তাকে গ্রেপ্তার করতে দুই পুলিশ সদস্য তাদের বাসায় যায়। পুলিশ আসামিকে ধরে ফেললে তার পুত্রবধূ পুলিশের হাত কামড়ে দেয়। সেই সুযোগে অভিযুক্ত কাইয়ুম পালিয়ে যায়। পুলিশের সঙ্গে ইনছান ও তার স্ত্রীর ধস্তাধস্তি হয়। এসময় তাদের শিশুটিও আঘাত পায়। তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’