গাইবান্ধা থেকে মোঃ আবু জাফর মন্ডলঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারো শুরু হয়েছে ছোট বড় প্রায় সব নদ-নদী ও খাল বিল থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। করতোয়া, কাটাখালী ও বাঙ্গালী নদীর বিভিন্ন ধরনের ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিনে-রাতে নির্বিচারে চলছে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের মহাৎসব।
বালু উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ ও বিদ্যুতের ৩৩ হাজার কেভির টাওয়ার। চরম ক্ষতির মুখে এলাকার কৃষি-জমি, কৃষক ও স্থানীয়রা সহ জীববৈচিত্র প্রকৃতি ও পরিবেশ। নদ-নদী অস্তিত্ব সংকটে পরলেও প্রশাসনের তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসী ও পরিবেশ প্রেমিদের।
উপজেলার মধ্য প্রায় ১৭ কিলোমিটার জুড়ে বয়ে গেছে করতোয়া, কাটাখালী ও বাঙ্গালী নদী। এছাড়াও রয়েছে ছোট ছোট নদী। কিন্তু উপজেলায় বালু মহল না থাকায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই নদীর যত্রতত্র থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। দিন দিন যেন বালু দস্যূদের দৌঁরাত্ব বেড়েই চলেছে।
প্রায় অর্ধশত স্থানে ছোট বড় ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিনরাত সমান তালে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। খাল ও নদ-নদী থেকে বালু তুলে বড়বড় স্তপ করে বিক্রি করায় চরম ক্ষতির মুখে কৃষি জমি এলাকার জীববৈচিত্র, প্রকৃতি ও পরিবেশ।
উপজেলার চক রহিমাপুর, কামারপাড়া, তরফমনু, হাওয়াখানা, কুঠিবাড়ী, পলুপাড়া, সাহেবগঞ্জ, ফকিরগঞ্জ, বড়দহ, ফুলবাড়ী সহ উপজেলার ৫০টি স্থান যেন বালি উত্তোলনের লীলা ভ’মি। এদিকে বাড়ী ঘরের পাশ দিয়ে দিনরাত এই বালি পরিবহণের কারণে পাশর্^বর্তী বাড়ীঘরে ধূলাবালি ঢুকে বাড়ীর আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে সর্দিকাশ ও নানা ধরণের অসুখে। প্রায় ৫/৬ মাস বন্ধ থাকার পর হঠাত করে আবারো পরিবেশ ধ্বংস করে বালি উত্তোলণ প্রশাসনের ভ’মিকা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়াও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন এই বালু উত্তোলনে ফলে বিশাল এলাকার ফসলি ক্ষেত, বাড়ী,ঘর, ভেঙে ও বিদ্যুতের টাওয়ার, ব্রিজ ও রাস্তা ঘাট এবং বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সহ বিশাল এলাকা বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। খাল ও নদ-নদী অস্তিত্ব সংকটে পরলেও প্রশাসনের তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ এলাকার পরিবেশ প্রেমিদের।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মোবাইল কোর্টসহ নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে। তারপরেও উপজেলা প্রসাশন অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এলাকাবাসী নদ-নদী ও খালের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অবৈধ বালু উত্তোলনকরীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন ও আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে।