মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
বরিশাল নগরীতে এক মস্তিস্ক বিকৃত যুবকের কাণ্ডে এলাকাবাসী হতবাক। কেউ কেউ আতঙ্কগ্রস্ত। ইমরান নামের ত্রিশোর্ধ্ব এই যুবক প্রায় সময়ে পুলিশের পোশাক পরে ঘোরে। লোক বুঝে ঝাপিয়ে পড়েন এবং ইচ্ছামত পেটাতে থাকেন। অনেকটা মাঠ পুলিশ কর্মকর্তার স্টাইলে চলাফেরা করলেও তার বাসা থেকে অনতিদূরে কাউনিয়া থানা পুলিশ এই ব্যাপারে নিশ্চুপ।
তার পরিবারের দাবি ইমরান এক সময়ে রিকশা চালাতো।ঘটনাচক্রে সম্প্রতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।এলাকাবাসী তাকে পাগল বলে সম্বোধন করে। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই ইমরান ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে। কথা নেই বার্তা নেই পুলিশের পোশাক পরে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির ওপর হামলা চালাচ্ছে। অনেক সময় এলাকাবাসী এতত্রিত হয়েও তাকে নিবৃত করতে পারছে না। প্রশ্ন উঠেছে ইমরান কোথা থেকে কি ভাবে পুলিশের পোশাক পেল।
এই বিষয়ে তাঁর পিতা নিজাম সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার এক মাত্র পুত্র ইমরান কোথা থেকে এই পোশাক সংগ্রহ করেছে সে সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না।তিনি আরো বলেন,ইমরান ব্যক্তি বিশেষের ওপর হামলা চালানোর পর পুলিশের সেই পোশাক কোথায় রাখেন তা আমরা জানিনা|
লুঙ্গি পরিহিত ইমরানকে হঠাৎ দেখা যায় পুলিশের ইউনিফর্মে। বিশেষ করে কাউনিয়া থানাধীন হাউজিং এলাকায় ঘোরাফেরা করে। হঠাৎ সে এতটাই উত্তেজিত হয়ে ওঠে যে ব্যক্তি বিশেষকে টার্গেট করে হামলা চালায়।পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হয় এই হামলা উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং পরিকল্পিত। এমনকি তার গর্ভধারী মাকেও ছাড় দেয় না ইমরান।
তাঁর মা জানান,ইমরান প্রায় নানা অজুহাতে তাকে মারধর করে। এভাবে গত এক সপ্তাহ জুড়ে অন্তত ৬ ব্যক্তির ওপর ইমরান হামলা চালিয়ে জখম করেছে। বিস্ময়কর আচারণ তাও আবার পুলিশি পোশাক পরে এ নিয়ে এলাকায় যতনা ক্ষোভ তার চেয়ে ইমরানকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশি।
এলাকাবাসী জানায়, ইমরান মানসিক বিকারগ্রস্ত হওয়ায় তার উৎপাত সম্পর্কে স্থানীয় থানায় কেউ অভিযোগ দিচ্ছে না। কিন্তু প্রশ্ন তুলেছে থানা থেকে অনতিদূরে ইমরানের বাসা, সেই যুবকের গায়ে পুলিশের পোশাক কিভাবে এলো। এনিয়ে কৌতুহলেরও শেষ নেই।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে,স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন,তিনি এই বিষয়ে অবগত নন। তবে তিনি বলেছেন, পুলিশের পোশাক কিভাবে ইমরানের কাছে এলো বা কেন দিয়েছে তা তিনি খতিয়ে দেখবেন।
এদিকে নির্যাতিত ইমরানের হতদরিদ্র পরিবার না পারছে একমাত্র সন্তানকে কিছু বলতে অন্য দিকে না পারছেন তাঁর এই উদ্ধত আচরণকে সহ্য করতে।অনেক ভাবে চেষ্টা করেও ইমরানকে নিবৃত করতে না পরায় তারাই এখন পুত্র ইমরানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। মিডিয়ার কাছে আকুতি জানিয়েছে এই যুবককে স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করুক। সেক্ষেত্রে তার পুনর্বাসন চায়, চায় সুস্থ স্বাভাবিক জীবন।
গতকাল শুক্রবার(১১ মার্চ) বিকেলে কাউনিয়া হাউজিং এলাকায় গেলে এলাকাবাসীও একই কথা বলেন। কিন্তু মানসিক বিকারগ্রস্ত হওয়ায় ইমরানের উৎপাত তারা সহজভাবে নিয়েছে। কিন্তু পুলিশি পোশাক পরে ‘ড্যামি দারোগা’ এই নাটকীয়পূর্ণ চরিত্র নিয়ে নানা কথা আর কৌতুহলে ইমরানের খবর মিডিয়াপাড়ায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে জন্ম দিচ্ছে নানা গুজবের।