Cinn:ক্রেতার হাতে পণ্য তুলে দেওয়ার যাবতীয় কার্যক্রম পালন করে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডাররা। কিন্তু করোনার কারণে তাদের কার্যক্রমে বেশ প্রভাব পড়েছে। তা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সভাপতি ও কনভেয়র গ্রুপের চেয়ারম্যান কবির আহমেদ। তিনি সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনকারীদের সংগঠন শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনেরও পরিচালক। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসুদ মিলাদ।
Cinn:করোনাভাইরাসের প্রভাবে রপ্তানি পণ্য পরিবহনে কী ধরনের প্রভাব পড়েছে?
কবির আহমেদ: বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রায় সব গন্তব্যেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্দরগুলো নানা পদক্ষেপ নেওয়ায় সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত দেশগুলোতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের কাছে রপ্তানি পণ্য পৌঁছানো যাচ্ছে না। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো রপ্তানি পণ্য এখন বিদেশে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের গুদামে জমতে শুরু করেছে। এভাবে বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ থাকলে এবং গুদামে পণ্যের স্তূপ জমলে সামনে নতুন রপ্তানি আদেশ কমে যাবে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে রপ্তানি খাতে বড় বিপদের শঙ্কা আছে।
আপনারা জানেন, এমনিতেই পণ্য রপ্তানি কমছে। জানুয়ারিতে যেখানে রপ্তানি পণ্য নিয়ে ৬৮ হাজার কনটেইনার গেছে, সেখানে ফেব্রুয়ারিতে এই সংখ্যা কমে ৫৭ হাজারে নেমেছে। চলতি মার্চেও রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারের সংখ্যা আরও কমবে।
Cinn: পোশাক খাতের রপ্তানি ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতের হার বাড়ছে। যেসব রপ্তানি চালান এখন ক্রেতাদের কাছে নেওয়া হচ্ছে, সেগুলো পরিবহনে কোনো সমস্যা হচ্ছে?
কবির আহমেদ: যেসব রপ্তানি পণ্য দেশীয় রপ্তানিকারকেরা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন, সেগুলো পরিবহনে অবশ্য বাতিল বা স্থগিতের আদেশ আসেনি। যেহেতু নতুন ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হচ্ছে, সেহেতু কিছুদিন পর রপ্তানি খাতে বড় প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের হাতে রপ্তানি পণ্য পরিবহনের কাজ কমে আসছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর রপ্তানি পণ্য পরিবহনে আরও বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে।
Cinn: ছুটিতে রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন ও পরিবহন কার্যক্রম সচল থাকার কথা। কোনো সমস্যা হচ্ছে?
কবির আহমদ: সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন ও পরিবহন কার্যক্রম সচল থাকবে বলে জানিয়েছে। রপ্তানি পণ্য কারখানা থেকে গাড়িতে করে চট্টগ্রামের ১৮টি কনটেইনার ডিপোতে আনা হয়। এরপর ডিপোতে তা কনটেইনারে বোঝাই করা হয়। পরে ডিপোর গাড়িতে করে বন্দরে নিয়ে জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। ছুটি ঘোষণার পর ডিপো ও কনটেইনারবাহী গাড়ির শ্রমিকদের অনেকেই কর্মস্থলে আসছে না। তাই ডিপোতে পণ্য বোঝাই করার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনিতেই রপ্তানিমুখী অনেক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে যেসব চালান ডিপোতে বা জাহাজীকরণের পথে আছে, সেগুলো যাতে পরিবহন ব্যাহত না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহযোগিতা দরকার।