করোনাকালেও নারীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতা থেমে নেই। পারিবারিক সহিংসতা, বাল্যবিবাহ ও ধর্ষণের মতো অপরাধ আরো বেড়ে গেছে। যেখানে আমরা ভেবেছিলাম করোনায় মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে, তাতে এ ধরনের অপরাধ কমে যাবে। কিন্তু গত ৯ মাসে আমরা একেবারে বিপরীত চিত্র দেখতে পেলাম। যেসব নারী কোনো দিনই নির্যাতিত হয়নি তারাও করোনাকালে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এখানে আমাদের কাছে আসা তথ্যের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য পুরোপুরি মিলে গেছে। এর পেছনে বড় একটি কারণ হলো অর্থনৈতিক অবস্থা। করোনায় মানুষ কাজ হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করতে নারীর প্রতি নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়েছে। এই নির্যাতনের বড় কারণ হলো পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা। এতে চরমভাবে নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
পাশাপাশি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি, সাইবার ক্রাইমও বেড়ে গেছে। এরই একটি ফল হলো বাল্যবিবাহ। সাইবার ক্রাইম ও ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা। ছোট ছেলেরা বাড়িতে বসে থাকায় এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। স্কুল-কলেজ আবার খুলে দিলে এ সমস্যা কিছুটা হলেও কমে আসতে পারে। আর সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো মানসিকতার পরিবর্তন। নারীকে সম্মান করতে হবে, ধর্মের অপব্যবহার না করে সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে স্কুল-কলেজে নৈতিকতার ও সামাজিকতার শিক্ষা দেওয়ার তাগিদ দিতে হবে। সর্বশেষ ন্যায়-অন্যায়ের শিক্ষা, আদর্শের জায়গাটা নির্ধারণ করে দিতে হবে। তাহলে নারী নির্যাতন বন্ধ হওয়া সম্ভব।