উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ থেকেঃ
নওগাঁ সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ট্রেনের টিকেট নিয়ে নয়-ছয় কারবারের ঘটনা মুখে মুখে জানাজানি হবার পর এবার খোলা চিঠি আকারে ভাইরাল হয়ে গেছে। নিজ হাতে খোলা চিঠিটি লিখেছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। মোঃ মোকাবর আলী শেখ নামে নওগাঁ জেলা শহরের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেডি উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। একটি ওষুধ কোম্পানীর প্যাডে তাঁর নিজ হাতে লেখা খোলা চিঠি পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। পরে সেটি “সান্তাহারের খবর” পেজসহ বিভিন্ন ব্যক্তির আইডি মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের আক্ষেপ করা চিঠি হুবহুঃ- তারিখ-১১/৯/২০২২। সান্তাহার রেলওয়ে টিকিট কাউন্টারে দাঁড়িয়েছি সকাল ৬.২২ টায়। ১নং কাউন্টারে আমি ১ম ব্যক্তি। আশা ছিল ২টা টিকেট পাব, অপ স্নিগ্ধা। তারিখ ১৫/৯/২০২২, ট্রেন কুড়িগ্রাম। ৮.০০ টায় কাউন্টার খোলা হল। টিকেট যিনি দিচ্ছেন উনি একজন মহিলা। বললাম “মা” আমাকে অপ ২টা টিকেট দেন। ওঁর উপরের বস একজন, যিনি টিকেট কাউন্টারের হেড। তার নির্দ্দেশে মোতাবেক আমাকে টিকেট না দিয়ে, বসের জন্য অপ স্নিগ্ধার সব টিকেট তাঁর বসকে দিয়ে দিলেন। আমি কয়েক বার তাঁদের অনুরোধ করেও ব্যর্থ হয়েছি। আমার বয়স ৬৫ বছর পেরিয়েছে। আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। বসের কথা, রাণীনগরের অপ খধহফ স্যারের সব টিকেট লাগবে। তাই তিনি আমাকে ২টা টিকেট ( অপ স্নিগ্ধা) দিতে পারবেন না। আমি অনেক দুঃখ পেয়েছি। কষ্ট পেয়েছি। বুঝাতে পারছি না নিজের মনকে। কাউন্টার থেকে বেরিয়ে বাসায় আসলাম। মোঃ মোবারক আলী শেখ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, নওগাঁ কেডি উবি। বিষয়ে এই প্রতিনিধি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা এসি ল্যান্ড (সহকারি কমিশনার ভুমি) মোঃ হাফিজুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখের ওই ট্রেনের স্নিগ্ধা শ্রেনির এসি চেয়ার এর তিনটা টিকেট একজনের মাধ্যমে কিনিয়েছেন বলে জানান। এদিকে, সান্তাহারে ওই ট্রেনের ওই শ্রেনির এসি চেয়ার এর বরাদ্দ করা মোট টিকেট ১৫টি। এর মধ্যে কাউন্টার টিকেট ৮টি।
এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে টিকেট কাউন্টারের হেড বুকিং মোমিনুল করিম মুনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দুই কাউন্টার দিয়ে টিকেট বিক্রি চলছিল। ওই শিক্ষক এক নম্বর কাউন্টারে ছিলেন। সে সময় ওই কাউন্টারে টিকেট ছিল না। তার আগে দুই নম্বর কাউন্টার দিয়ে চারটা টিকেট বিক্রি হয়ে যায়। তাঁর ভাইরাল হওয়া চিঠির সুত্র ধরে ওই শিক্ষকের জন্য আমার এখানে অবশিষ্ট থাকা একটা এবং অন্য স্টেশন থেকে আরেকটা টিকেট ম্যানেজ করে ওই শিক্ষককে দিতে চেয়েছি কিন্তু উনি আসেননি। ওই শিক্ষক মোবারক আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।