বগুড়ার শেরপুরে মসজিদে বৈঠক করতে না দেয়ায় মোয়াজ্জিনসহ দুইজনকে পিটিয়ে আহত করেছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ নিশ্চুপ রয়েছে। এমনকি ওই সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতরা এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়ালেও তাদের ধরছে না পুলিশ। ফলে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
মসজিদে বৈঠক করতে না দেয়ায় বগুড়ার শেরপুরে মোয়াজ্জিনকে মারপিটের অভিযোগ
এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার (২৮নভেম্বর) সন্ধ্যায় শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন এলাকাবাসী। এতে লিখিত বক্তৃতায় উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের কানুপুর গ্রামের বেলায়েত আলীর ছেলে কেরামত আলী বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে কানপুর জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ নভেম্বর জুম্মার নামাজ শেষে মুসল্লীরা চলে যাওয়ার পর মসজিদ তালাবদ্ধ করতে চান। কিন্তু একই গ্রামের জামায়াত নেতা আহসান হাবিব, মাহমুদুল হাসান তাহের, ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মাহফুজার রহমান, জাহিরুল ইসলাম মারুফ, এনামুল হক, আব্দুল মজিদ ফকির, আফজাল হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও বেশকয়েকজন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের বৈঠক রয়েছে বলে তাকে মসজিদ খুলে রাখতে বলেন। কিন্তু এতে রাজী না হওয়ায় মসজিদের ভেতরেই তাকে মারপিট শুরু করেন ওইসব সন্ত্রাসীরা।
এসময় তার চিৎকারে আব্দুল খালেক নামের এক ব্যক্তি এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান। পরবর্তীতে তাকেও বেধড়ক মারপিট করে আহত করা হয়। একপর্যায়ে গ্রামের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ভুক্তভোগী মোয়াজ্জিন কেরামত আলী অভিযোগ করে আরও বলেন, ঘটনার পরদিনই বিএনপি-জামায়াতের চিহিৃত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। তবে অদ্যবধি অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি। এমনকি রহস্যজনক কারণে ঘটনায় জড়িতরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরলেও তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে ঘটনাটি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে অভিযুক্তদের মধ্যে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহফুজার রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার মুঠো ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম আবুল কালাম আজাদ তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটির তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।