পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিওন) পদে কর্মরত মনিরুজ্জামান মনির। ছোট পদে চাকরি করলেও তিনি এখন কোটিপতি। বাস করেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসায়। আছে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের ব্যবসা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ঠিকাদারি লাইসেন্স, মাদক, চোরাচালানসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা। কলাপাড়ায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে দুটি হিসাবসহ নামে-বেনামে একাধিক ব্যাংকে রয়েছে হিসাব এবং এসব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বিভিন্ন সময়। এই অফিস সহায়কের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্তে মাঠে নেমেছে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর।
মনিরের বিভিন্ন অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কলাপাড়া পৌরশহরের বাসিন্দা সবুজ হাওলাদার। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে অবহিত করার নির্দেশ দিয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (ত্রাণ শাখা) আবু সাইদ মো. কামাল গত ৬ অক্টোবর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেন। পরে ১১ নভেম্বর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশানস-২) ড. হাবিব উল্লাহ বাহার স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়। তবে মনিরের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে পাঠাতে পারেননি জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার। কবে নাগাদ এ প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে, তাও সঠিক করে বলতে পারছেন না তিনি।
সবুজ হাওলাদারের করা অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (আউটসোর্সিং) মনির টিআর ও কাবিখার চাল প্রকল্প সভাপতিদের কাছ থেকে কিনে নিজেই বেচাকেনা করেন এবং ব্রিজ, কালভার্ট, এইচবিবি রাস্তার কাজের দুটি লাইসেন্স রয়েছে তার স্ত্রীসহ পরিবারের নামে। এমনকি তার লাইসেন্সে এলজিইডিরও অনেক কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া মনির বিভিন্ন ইউনিয়নের ত্রাণসামগ্রী চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছ থেকে নিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করেন। তিনি সরকারি সোলার নামে-বেনামে নিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অবৈধ ব্যবসার সঙ্গেও তিনি জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।