সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী জনাব আলহাজ্ব মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর মতবিনিময় সভা নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক কল্যাণ সমিতির কমিটি গঠন মধুপুরে কৃষকের মাঝে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মে‌শিন বিতরণ নওগাঁর পোরশায় পুলিশ সুপারের বাড়িতে চুরি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দিন-দুপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ২ প্রথম মুক্তি যোদ্ধা নারী হলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্মদিন নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে গরুর ল্যাম্পি ডিজিজ রোগ নওগাঁসহ বিভিন্ন উপজেলায় ঔষধ ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রেখে সকাল-সন্ধা প্রতিকী ধর্মঘট মধুপুরে ছরোয়ার আলম খান আবু’র নির্বাচনী কর্মীসভা জনসভায় পরিনত নওগাঁর রাণীনগ-আত্রাই উপজেলায় তৃতীয় ধাপে ৩৮ জনের মনোনয়ন দাখিল নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ইরি বোরো ধান কাটা-মাড়াইকরা শুরু বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতি ২০২৪-২০২৬ নির্বাচনে ঔষধ ব্যবসায়ী সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীদের পূর্ণ প্যানেলে ভোট দিন মনোহরদীতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ,মাদ্রাসা ও ক্লাবের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে উপজেলা সেচ্ছাসেবী পরিষদের অর্থায়নে অসহায় পরিবারের হাতে নির্মাণাধীন ঘরের চাবি হস্তান্তর কালাইয়ে হয়েছে রহমতের বৃষ্টি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল ও গাছ কাটার অভিযোগ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাচনে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১০ মাগুরায় প্রতিবেশীর হামলায় আহত ৪ চাঁদাবাজি,ভাংচুরের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন নওগাঁর পত্নীতলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় বিএনপি ২ নেতাকে শোকোজ ঘোষণা
ধর্ম

জার্মান নারী রুকসানা তামিজের ছয় যমজ সন্তান নিয়ে ইসলাম গ্রহণ

ছয় যমজ সন্তান নিয়ে এক দশক আগে ইসলাম গ্রহণ করেছেন জার্মানির রুকসানা তামিজ। মুসলিম হওয়ার পর হিজাব পরা শুরু করেন এবং পরিপূর্ণ ইসলামী জীবন অনুশীলন করেন। ছয় যমজসহ মোট ৮

বিস্তারিত...

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে দৃষ্টিনন্দন বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ

দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী দ্বারা নির্মিত আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ। সিরাজগঞ্জ-এনায়েতপুর সড়কের বেলকুচি পৌরসদরে অবস্থিত। মসজিদ ভবনটি যে কেউ প্রথম দেখলেই মনের অনুভূতি হবে, এ যেন সৃষ্টির সঙ্গে স্রষ্টার এক অপূর্ব

বিস্তারিত...

আদমদীঘি অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ

বগুড়ার আদমদীঘি অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগে শতাধিক গরীর, অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার অফিসার্স ক্লাব চত্বরে এসব ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন অফিসার্স ক্লাবের

বিস্তারিত...

ভারতকে ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের মার্কিন কালো তালিকায় রাখার প্রস্তাব

ভারতকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের কালো তালিকায় রাখার প্রস্তাব করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কমিশন। ফেডারেল এজেন্সির দ্য ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘ভারতে ধর্মীয়

বিস্তারিত...

এ বছর ফিতরা সর্বনিম্ন ৭০ টাকা

এ বছর ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরও সর্বনিম্ন ফিতরা ৭০ টাকাই ছিল তবে সর্বোচ্চ ছিল ২ হাজার ২০০

বিস্তারিত...

কোরআন পাঠের সময় প্রশান্তি নেমে আসে

কোরআন আল্লাহর কালাম। কোরআন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এটি আল্লাহর জীবন্ত নিদর্শন। এই কোরআন পাঠের সময় ‘সাকিনা’ (প্রশান্তি) নাজিল হয়। এই প্রশান্তি আত্মিক। এই প্রশান্তি হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। কখনো

বিস্তারিত...

রোজা যেভাবে অধিক কল্যাণমণ্ডিত করে

আল্লাহতায়ালার বিশেষ কৃপায় পবিত্র মাহে রমজানের ৫ম দিনের রোজা আমরা অতিবাহিত করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। রহমতের দিনগুলো দ্রুতই শেষ হয়ে যাচ্ছে। মুমিনের জন্য পবিত্র এ রমজান মাস বসন্তের মাস। দীর্ঘ এগারো মাসে

বিস্তারিত...

রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস

মিয়া হোসেন : আজ পবিত্র রমযানের তৃতীয় দিন। রমযানের প্রথম ভাগের দশ দিন রহমতের। আর আমরা এখন এ রহমতের সময় অতিবাহিত করছি। ইবাদত বন্দেগী আর বিশেষ আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে

বিস্তারিত...

রমজান: রোজা যখন রাখেন তখন কী ঘটে আপনার শরীরে

প্রতি বছর কোটি কোটি মুসলমান রোজা রাখেন সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারে বিরত থেকে। Cinn কয়েক বছর ধরে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে রোজা পড়েছে গ্রীষ্মকালে। ফলে এসব দেশের মুসলিমদের রোজা রাখতে

বিস্তারিত...

বিজু উৎসবের সাতকাহন

“হমলে দেজচান জুড়েব’ এবাক তারা ফিরি হমলে বিজু খেবঙ বেক্কুনে মিলিজুলি!” (কবে এই দেশ শান্ত হবে, কবে ফিরবে তারা কবেইবা সবে মিলে একসাথে বিঝুতে মিলব মোরা!) বিখ্যাত একটি চাকমা গানের কলি এটি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পূর্ববর্তী সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিবাহিনীর বিদ্রোহ চলাকালে তিন পার্বত্য জেলা থেকে বহুসংখ্যক উদ্বাস্তু ভারতে শরণার্থী হিসেবে গিয়েছিল। এদিকে স্বদেশে থেকে যাওয়া তাদের আত্মীয়-স্বজন-জ্ঞাতি ভাইরা তাদের পুনঃপ্রত্যাবর্তন কামনা করছে এ আক্ষেপ নিয়ে যে কতদিন একসঙ্গে বিঝু খাওয়া হয় না। এটাই গানটির কলি দুটোর ভাবার্থ। এ থেকেই আমরা আঁচ পাই পার্বত্য জনজীবনে বিঝুর তাৎপর্য। চৈত্র প্রায় শেষ হয়ে এল। পাহাড়ি জনপদে এখন জুমচাষের জন্য জুম পোড়ানোর মৌসুম শুরু হয়েছে। বছরের এ সময়টায় পাহাড়জুড়ে হরেক পাখির কলতান, দখিনা সমীরণের সঙ্গে বহমান নানা বর্ণিল ফুলের বাহারি সৌরভ এবং আসন্ন উৎসবের আমেজে নানা আয়োজনের সমাহার নিয়ে পাহাড়ে ফিরে আসে ঐতিহ্যবাহী বৈষুক, সাংগ্রাই, বিঝু, বিহু, বিষুর আগমনী বার্তা। পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘরে ঘরে এখন বৈষুক, সাংগ্রাই, বিঝু, বিহু, বিষু, সাংক্রান-এর উৎসব উৎসব আমেজ থাকার কথা থাকলেও চলমান বৈশ্বিক করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। তথাপিও পার্বত্য অঞ্চলের বহু শতাব্দী প্রাচীন এ ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসবের ক্ষণ চলে এলেই পার্বত্য জনপদে ব্যাপকতর প্রাণচাঞ্চল্য শুরু হয়ে যায়। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে এবং পুরনো বছরের সব অপ্রাপ্তিকে ধুয়েমুছে নতুন দিনের শুভসূচনার আকাঙ্ক্ষায় পাহাড়ের ঘরে ঘরে চলে ব্যাপক প্রস্তুতি। গ্রামে গ্রামে, এলাকায় এলাকায় নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বৈষুক-সাংগ্রাই-বিঝু-বিহু-বিষু-সাংক্রান। ত্রিপুরারা এ উৎসবকে বলেন বৈষু বা বৈষুক, মারমারা বলেন সাংগ্রাই, চাকমারা বিঝু, অহমিয়ারা বিহু, তঞ্চঙ্গারা বিষু এবং খুমী, খিয়াং, ম্রোরা অভিহিত করে সাংক্রান নামে। বৈষুক-সাংগ্রাই-বিঝুর আদ্যাক্ষর নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ‘বৈ-সা-বি’ হিসেবেও বেশ পরিচিতি পেয়েছে এ উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড় যেন আক্ষরিক অর্থেই নতুন রূপে সেজে ওঠে। তাই এ উৎসব কেবল আর উৎসব হয়েই থাকে না, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সব ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী এ সামাজিক উৎসব একই সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়ে যায় পাহাড়ি জনপদের যুগান্তরের স্বকীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক চেতনার অবিরাম বহমানতাও। ঠিক কোন সময় থেকে এ বিঝু উৎসবের চল শুরু হয়েছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে চাকমা সমাজে এ বিঝু উৎসব শতাব্দী প্রাচীন বলে ধরে নেয়া যায়। চাকমাদের অন্যতম একটি প্রাচীন সাহিত্য উপাদান হচ্ছে ‘রাধামন ধনপুদি পালা’। চাকমাদের বিখ্যাত ব্যালাড সাহিত্য ‘রাধামন-ধনপুদি’ পালাতে উল্লেখ আছে— ‘পেক্কু ডগরের চিং চিং চিং বজরর মাধান ওক্কো দিন এচ্চে অলঅ বিঝু দিন।’ (পাখি সুর তুলে চিং চিং চিং বছরের শেষে একটি দিন আজকে তবে বিজুদিন।) চাকমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি-লোকগানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বিঝু। বিঝুগীদ বা বিঝুগান এবং বিঝুনৃত্যর চলও রয়েছে। অন্যদিকে ত্রিপুরা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীদের ক্ষেত্রেও দেখা যায় বৈষুক, সাংগ্রাই, বিষুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে সমাজ-সাংস্কৃতিক নানান প্রথা, রীতিনীতি ও উৎসব আয়োজন। চাকমা সমাজে চৈত্রের শেষ দুদিন এবং বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন এ তিনদিনব্যাপী বিঝু উৎসব পালিত হয়। উৎসবের প্রথম দিন ফুলবিঝু। এদিনে পাড়া, গ্রাম বা এলাকায় এলাকায় শিশু-কিশোর ও তরুণরা বাড়ির চারপাশের আঙিনা নানান ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলে। গেরস্তরা ঘর পরিষ্কার করে। প্রাতঃসকালে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা পাহাড়ি ছড়া, গাঙ বা নদীতে ফুল দিয়ে পুজো দেয়। ইদানীংকালে অনেকে এটাকে ‘ফুল ভাসানো উৎসব’ হিসেবে অভিহিত করে থাকলেও মূলত ‘ফুল ভাসানো উৎসব’ বলে পৃথক কোনো উৎসব নেই। প্রকৃতপক্ষে কুয়ো, ছড়া, গাঙ বা নদী হচ্ছে খাবার এবং দৈনন্দিন ব্যবহার্য পানির উৎস। সে কারণে এসব পবিত্র স্থানকে ফুল দিয়ে এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে বছরের এ বিশেষ দিনে শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং নানান মনোবাসনা পূরণ হওয়ার নিমিত্তে ছড়া, গাঙ বা নদীর কাছ থেকে বিশেষ প্রার্থনাও করা হয়। ছড়া, গাঙ বা নদী যদি কিছুটা স্রোতস্বিনী হয় সেক্ষেত্রে হয়তো কখনো কখনো পাড়ে/পাতায়/পাথরের ওপর পুজো দেয়া বুনোফুল ভেসে চলে যায়। তবে এটা কোনোভাবেই ফুল ভাসানো নয়। সাধারণত কলাপাতা এবং এক ধরনের গুল্মজাতীয় বৃক্ষের পাতা ‘ভুরপাদা’ প্রভৃতির ওপর ‘ভাতঝরা ফুল’, ‘তুরিং ফুল’, ‘রেবেক ফুল’, ‘কুরুক ফুল’, ‘মা লক্ষ্মী মা ফুল’ প্রভৃতি বুনোফুল সমাহারে মূলত পানির উৎস হিসেবে এবং নির্মল প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য উপাদান হিসেবে ছড়া, গাঙ বা নদীতে ফুল-বাতি দিয়ে পুজো তর্পণ করা হয়। এদিনটা তাই ফুলবিঝু। পুজো-প্রার্থনা শেষে অনেকেই গাঙ/ছড়া/নদীর পানিতে স্নান সেরে নেয়। কেউ কেউ কিছুটা গভীর পানিতে ডুব দিতে পছন্দ করে। এ সময় তারা স্বচ্ছ ও পরিষ্কার পানি পান করে যেটাকে ‘বিঝুগুলো’ বলা হয়। ফুলবিজুর দিনে কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ-তরুণীরা দলবেঁধে ছড়া/গাঙ/নদী থেকে কলসিতে করে পানি সংগ্রহ করে, বৌদ্ধমন্দির বা প্যাগোডায় যেয়ে মহাকারুণিক বুদ্ধের প্রতিমূর্তিগুলো ধৌত করে পুণ্য সঞ্চয় করে এবং গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠজনদের স্নান করিয়ে দেয়, সালাম প্রদান করে এবং সুখী জীবনের জন্য আশীর্বাদ কামনা করে। কোথাও কোথাও বসে ঐতিহ্যবাহী ‘উভোগীদ’ এবং ‘গেংখুলী গীদ’-এর আসর। কোথাও কোথাও চলে নানান সনাতনী খেলাধুলার প্রতিযোগিতা, যেমন ‘ঘিলেখারা’, ‘নাদেংখারা’, ‘গুদুখারা’, ‘বলিখারা’ প্রভৃতি। চৈত্রের একেবারে শেষদিনটা মূলবিঝু। এদিনেই মূল উৎসব। এদিনে সর্বত্র যেন বয়ে বেড়ায় সীমাহীন আনন্দধারা। ক্ষণে ক্ষণে চারদিক থেকে শোনা যায় বিশেষ প্রফুল্লধ্বনি ‘রেঙ’। এক ঘর থেকে অন্য ঘরের অথবা এক এলাকা থেকে হয়তো শোনা যায় অন্য এলাকার ‘রেঙ’। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা মেতে ওঠে অনাবিল আনন্দে। চারদিকে প্রফুল্লতার আমেজে বয়ে যায় সমুজ্জ্বল সুবাতাস। দিনব্যাপী ঘরে ঘরে নানান পিঠা, পানীয়, খানাপিনার আয়োজন চলে। বন-পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা নানান বনজ সবজি দিয়ে রান্না করা হয় ‘পাজন’ নামের বিশেষ তরকারি। এই দিনে সবার জন্যই কমপক্ষে সাতটি ঘরের ‘পাজন’ খাওয়ার বিশেষ প্রথা একটি চলমান। বিশ্বাস, এতে করে শরীরে কোনো রোগ-ব্যাধি সহজে বাসা বাঁধতে পারে না। ‘পাজন’ ছাড়াও প্রতিটি ঘরে পরিবেশন করা হয় নানান পিঠা, যেমন বিন্নি চাল দিয়ে বানানো ‘বড়া পিদে’, ‘বিনিহোগা’, কলাপাতা দিয়ে বানানো ‘কলাপিদে’ কিংবা আতপ চালের গুঁড়া, তালের রস এবং গুড় দিয়ে বানানো ‘সান্ন্যেপিদে’। এছাড়া বয়োজ্যেষ্ঠজন বা অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় বিশেষ পানীয়, ‘দোচুয়ানি’, ‘কানজি’ এবং ‘জগরা’ দিয়ে। এরপরের দিন অর্থাৎ বাংলা পঞ্জিকার প্রথম দিনটাকে বলা হয় ‘গোজ্যেপোজ্যে দিন’। এদিনে অনেকে ঘরে বসে বিশ্রাম নেয়। পুরনো দিনের সকল অপ্রাপ্তি কাটিয়ে উঠে নববর্ষে সবকিছু নতুন করে সাজিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে। বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকলের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করা হয়। সচ্ছল গেরস্তরা ঘরে বুদ্ধের উদ্দেশে আহারাদি পূজা দেয়। অনেকে সনাতনী প্রথার মতো ঘরের মঙ্গল এবং সমৃদ্ধি কামনায় ধান বা চাল রাখার জন্য যে মাটির কলসি/পাত্র বা বাঁশের ‘বারেঙ’  থাকে সেখানে গরম ভাত এবং সিদ্ধ ডিম দিয়ে ‘মা লক্ষ্মী’র উদ্দেশে পুজো দেয়। বিকালে ঘরের চারদিকে মোমবাতি জ্বালানো হয় এবং কি লাকড়ি রাখার ঘর, গৃহপালিত পশুপাখির ঘরেও মোমবাতি জ্বালানো হয় যেন নববর্ষে গেরস্তের সবকিছুই সর্বদা উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত থাকে। এভাবে চাকমারা তাদের অন্যতম সামাজিক উৎসব যথাযোগ্যরূপে পালন করে থাকে। কখনো কখনো এ উৎসবের ব্যাপ্তি অনানুষ্ঠানিক রূপে সপ্তাহব্যাপী পর্যন্ত প্রসারিত হয়। ত্রিপুরাদের বৈষু বা বৈষুক উৎসবও চাকমাদের বিঝু উৎসবের মতো তিনদিনব্যাপী। হারি বৈষুক, বিষুমা ও বিষিকাতাল। কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে মৌলিক চরিত্রগত মিল দেখা যায়। জুমপাহাড়ের ভাঁজে আবহমানকালের শতবর্ষী ত্রিপুরা পল্লী থেকে হয়তো ভেসে আসে— বৈষুক, বৈষুক, বৈষুক

বিস্তারিত...

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By cinn24.com
themesbazar24752150