cinnঃ-
১৯৭০ সালের ১১ নভেম্বর বুধবার সকাল থেকেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হতে থাকে। পরদিন ১২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আবহাওয়া আরো খারাপ হতে লাগে এবং মধ্যরাত থেকেই ফুঁসে উঠতে শুরু করে সমুদ্র। তীব্র বেগে লোকালয়ের দিকে ধেয়ে আসে পাহাড় সমান উঁচু ঢেউ। ৩০/৪০ ফুট উঁচু সেই ঢেউ আছড়ে পড়ল লোকালয়ের উপর। আর মুহূর্তেই ভাসিয়ে নিয়ে গেলো মানুষ, গবাদি পশু, বাড়ি-ঘর এবং ক্ষেতের ফসল। পথে প্রান্তরে পড়েছিলো কেবল লাশ আর লাশ। মরনপুরীতে রূপ নেয় ভোলাসহ গোটা অঞ্চল।

বন্যার পরে সাপ আর মানুষ দৌলতখানের চৌকিঘাটে জড়িয়ে পড়ে আছে। মা তার শিশুকে কোলে নিয়ে মেঘনার পাড়ে মৃত অবস্থায় জড়িয়ে ছি। সোনাপুরের বাগানে গাছের ডালে এক মহিলার লাশ। এমনিভাবে মনপুরা, চরফ্যাশন, লালমোহন, তজুমুদ্দিন ও দৌলতখানসহ সমগ্র জেলায় মানুষ আর গবাদি পশু সেদিন বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলে ভেসে গেছে। জন-মানুষ শূন্য হয়ে পড়েছিলো দ্বীপজেলা ভোলা।

ঝড়ের আঘাতে টিঅ্যান্ডটি ভবনসহ সকল স্থাপনা ভেঙ্গে যায়। এছাড়া একটি ট্রলারে করে ছবি পাঠান পত্রিকা অফিসে। ঘটনার ৪দিন পরে পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হলে পুরো দেশে এ নিয়ে আলোড়িত হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে ত্রাণ আসতে শুরু করে।

১৮ অথবা ১৯ তারিখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করে এক জাহাজ ত্রাণ নিয়ে আসেন ভোলায়। সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মনপুরায়। মনপুরার ২৬ হাজার মানুষের মধ্যে ১৭ হাজারই সেদিন সাগরের স্রোতে ভেসে গিয়েছিল।