মোঃ সাগর আলী ,দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি :
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের এ.রব সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো.ইউনুস আলী গত ছয় মাস ধরে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত। অথচ বেতন প্রতি মাসে উত্তোলন। এমন অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্যগণ ।
জানা যায়, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মো. ইউনুস আলী গত ছয় মাস ধরে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসছে । ইতিমধ্যে জেলা শহরের অগ্রনী ব্যাংক থেকে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা টিউশন ফি উত্তোলন সহ বিজ্ঞান অনুষদের অনুদান ১ লক্ষ টাকা, মাদ্রাসায় দানকৃত জমির বাৎসরিক ভাড়া ৭ লক্ষ টাকা গায়েব করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে । এছাড়াও শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বিতরণে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে নিয়মিত ব্যবসা করে আসছে বাড়িতে বসেই ।
২০০১ সালে ইউনুস আলী এ.রব সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদানের পর থেকে মাঝে মধ্যেই তার অনিয়মেরর তথ্য ফাঁস হয় । যা চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে পুরো দেওয়ানগঞ্জে । মাদ্রাসার সুনাম ও শিক্ষার মান রক্ষায় ২০২২ সালের ১৫ জানুয়ারি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকাবাসী ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যগণ ইউনুস আলীর অপসারণ দাবি করে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে । জনসমুক্ষে কমিটির লোকজন জানায়, মাদ্রাসার ২৮ একর জমির মধ্যে ১০ একর জমি অবৈধ ভাবে বিক্রি করেছে সুপার । মাদ্রাসার বিগত ১০ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না ।
মানববন্ধনের পর থেকে ইউনুস আরো বেশি অনিয়মের সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসীর সমালোচনা। পুরাতন কমিটি ভেঙ্গে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের নিয়ে নতুন করে মনগড়া ব্যবস্থাপনা কমিটি করেছে । এখন সভাপতির প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসায় মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকে বেতন উত্তোলন করেন প্রতি মাসে ।
তথ্য অনুসন্ধানের জন্য পরপর বেশ কয়েকদিন মাদ্রাসায় সরেজমিন উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ ইউনুস আলীকে পাওয়া যায়নি । এসময় জিজ্ঞাসাবাদে সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, মো. শফিক উল্লাহ, দিদার হোসেন, আসাদুজ্জামান বলে, অধ্যক্ষ কেনো অনুপস্থিত তার কোন নোটিশ আমাদের কাছে নেই । যতটুকু জানি, কমিটি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে দ্বন্দ্ব তাই তিনি মাদ্রাসায় আসেন না । আমরা তার আন্ডারে চাকরি করি । তার ব্যাপারে এর বেশি কথা বলতে পারবো না । আরবি প্রভাষক ইউনুস আলী হক কথা বলার কারনে দুই বছর থেকে তার বেতন বন্ধ আছে । আমরা চাইনা আমাদের বেতন বন্ধ হোক ।
ব্যবস্থাপনা কমিটির বর্তমান সভাপতি মো. আব্দুর রহিম মিঠু অধ্যক্ষের অনিয়মের বিষয় স্বীকার করে বলেন , তার নিরাপত্তার কথা ভেবে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফা আখতার বলেন, আমি তার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র নিয়মিত আপডেট পাচ্ছি । অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য জানতাম না । শুধু জানতাম তার প্রতিষ্ঠানে একটু সমস্যা হয়েছিলো যা সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা সমাধান করে দিয়েছে । অনিয়মের বিষয়টি জানলাম ব্যবস্থা নিবো ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স দৈনিক বলেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো ।