শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ব্যাটে বলে ভালোই করছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলংকা থেকে ৩১২ রানে এগিয়ে আছে টাইগাররা। নাজমুল হোসেন শান্তর ও অধিনায়ক মুমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষনা করে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের পর টাইগারার বোলাররাও ভালো করেছে। তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্ন-বিরতির আগে ব্যাট করতে নামা শ্রীলংকার তুলে নিয়েছে তিন উইকেট। ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ৭৩ ওভারে ৩ উইকেটে ২২৯ রান করেছে স্বাগতিক শ্রীলংকা। ফলে এখনো ৩১২ রানে পিছিয়ে শ্রীলংকা। ফলো-অন এড়াতে আরও ১১২ রান করতে হবে লংকানদের। টেস্ট ক্রিকেটে শ্রীলংকার বিপক্ষে ইনিংসে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। আর সব মিলিয়ে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ দলীয় রান বাংলাদেশের। এ ছাড়া ১৭৩ ওভার ব্যাট করায় নিজেদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দীর্ঘতম ইনিংস ১৯৬ ওভারের। ২০১৩ সালে গল টেস্টে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৯৬ ওভার ব্যাট করে ৬৩৮ রান করেছিলো বাংলাদেশ। এটি এখনো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ও দীর্ঘতম ইনিংস। ক্যান্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ৪৭৪ রান করেছিলো বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর ১৬৩ ও অধিনায়ক মুমিনুল হকের ১২৭ রান করে আউট হয়। শান্ত-মুমিনুলের আউটের পর দলকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। দিন শেষে মুশফিক ৪৩ ও লিটন ২৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। গতকাল তৃতীয় দিন প্রথম সেশনেই হাফ-সেঞ্চুরি করেন মুশফিক-লিটন। ২৩তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিজের ইনিংস বড় করার চেষ্টায় ছিলেন মুশফিক। তবে টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরি তুলেই আউট হন লিটন। ৬৭ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা মেরে ৫০ রানে থামেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে ১৪৬ বলে ৮৭ রান যোগ করেন মুশফিক-লিটন। লিটনের বিদায়ের পর আরও ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজ ৩ ও তাইজুল ইসলাম ২ রান করে ফিরেন। অষ্টম উইকেটে তাসকিন আহমেদকে নিয়ে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছিলেন মুশফিক। তবে ১৭৩তম ওভার শেষে বাংলাদেশের ইনিংস ঘোষনা করেন দলের অধিনায়ক মোমিনুল হক। ঐসময় বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ৫৪১। ১৫৬ বল খেলে ৬টি চারে অপরাজিত ৬৮ রান করেন মুশফিক। ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তাসকিন। শ্রীলংকার বাঁ-হাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দো ৯৬ রানে ৪টি উইকেট নেন। তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্ন-বিরতির আগ মুহূর্তে নিজেদের ইনিংস শুরু করে শ্রীলংকা। তবে ব্যাট হাতে দলকে দারুন সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ও লাহিরু থিরিমান্নে। তবে উইকেট বাঁচিয়ে খেলায় মনোযোগি ছিলেন তারা। করুনারত্নে ও থিরিমান্নের ব্যাটিং দৃঢ়তায় শতভাগ সাফল্য নিয়ে দ্বিতীয় সেশন শেষ করার পথে ছিলো শ্রীলংকা। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনের শেষ বলে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম হাফ সেঞ্চুরি তোলা থিরিমান্নেকে লেগ বিফোর করেন মিরাজ। ১২৫ বলে ৮টি চারে ৫৮ রান করেন থিরিমান্নে। এতে ১ উইকেটে ১১৪ রান নিয়ে বিরতিতে যায় শ্রীলংকা। দিনের শেষ সেশনে শ্রীলংকাকে চেপে ধরার চেষ্টা করেছিলো বাংলাদেশের বোলাররা। ওশাদা ফার্নান্দোকে ২০ রানে থামান পেসার তাসকিন আহমেদ ও সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে ২৫ রানে শিকার করেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দলীয় ১৯০ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেন করুনারত্নে। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৮৫ রানে অপরাজিত করুনারত্নে। ২৬ রানে ক্রিজে আছেন ধনাঞ্জয়া। বাংলাদেশের তাসকিন-মিরাজ-তাইজুল ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ: প্রথম ইনিংস: ৫৪১/৭ ডিক্লেয়ার, ১৭৩ ওভার (শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, তামিম ৯০, মুশফিক ৬৮* লিটন ৫০; ফার্নান্দো ৪/৯৬)
শ্রীলঙ্কা: তৃতীয় দিন শেষ: ২২৯/৩, ৭৩ ওভার (করুনারত্নে ৮৫*, থিরিমান্নে ৫৮; তাসকিন ১/৩৫)।